পুঁজিবাজারে মিনিটে নয় কোটি টাকা লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:৫০

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে দুই হাজার একশ কোটি টাকা। চার ঘণ্টায় এই কেনাবেচা হয় বাজারে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটেই লেনদেন হয়েছে নয় কোটি টাকা।

চলতি বছরের শুরু থেকেই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুঁজিবাজার। সাত বছর আগে ধসের পর আবার বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিতে সরগরম ব্রোকারেজ হাউজ। লেনদের বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বেশিরভাগ শেয়ারের দাম। বিশেষ করে তলানিতে পড়ে যাওয়া ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচকের উল্লম্ফন হয়েছে গত দুই সপ্তাহে। ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে একদিন ছাড়া সূচক বেড়েছে প্রতিদিনেই।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ মিট দ্য প্রেসে ধার-কর্জ করে বিনিয়োগ না করার আহ্বান জানায়। তবে বাজার নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই বলেও মত প্রকাশ করে তারা।

এরপর রবিবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচক প্রথমে কিছুটা কমলেও পড়ে তা আবার বাড়ে। তবে বৃহস্পতিবারের তুলনায় লেনদেন কিছুটা কম হয়। দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার বিাজার শুরুর পর থেকেই গতি পায় লেনদেন। প্রথম ৩০ মিনিটেই লেনদেন ছাড়িয়ে যায় ৩০০ কোটি টাকা। দুই ঘণ্টায় তা ছাড়ায় এক হাজার দুইশ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে তখন লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি টাকার শেয়ার।

বেলা সাড়ে ১২টার পর থেকে লেনদেনের গতি কিছুটা কম হলেও শেষ দুই ঘণ্টাতেও প্রায় ৯০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে লেনদেন হয় সাড়ে সাত কোটি টাকারও বেশি। সব মিলিয়ে মোট ২৪০ মিনিটে লেনদেন হয় দুই হাজার ১০৭ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৯টি কোম্পানির, কমেছে ১৪২টির। আর দর বদলায়নি ২৭টি কোম্পানির। সাধারণ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬৬.৯৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৬৯.৭৯।

সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্যাংকিং খাত। এই খাতের ৩০টি কোম্পানির মধ্যে সিটি ব্যাংক কেবল ৪০ পয়সা দর হারিয়েছে। অন্য সব কটি ব্যাংকের শেয়ারেরই বেশ ভালো পরিমাণে দাম বাড়ে। গত কয়েকদিনে সিটি ব্যাংকের শেয়ারেরও ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধি হয়েছিল।

টাকার অংশে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ারের। এই কোম্পাটির ৬৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে এমন কোম্পানির মধ্যে ব্যাংকের সংখ্যা আটটি।

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর এই পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি। বাজার বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে সতর্কভাবে বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে আর মূল ভিত্তি বিবেচনায় রেখে শেয়ার কেনার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষও গত বৃহস্পতিবার মিট দ্য প্রেসে একই আহ্বান জানিয়েছে। তবে তারা পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক উত্থানকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না। তারা বলছেন, গত ছয় বছরে বিশেষ করে ব্যাংকের শেয়ারের দাম তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। মৌলভিত্তিসম্পন্ন এই শেয়ারের প্রতি আগ্রহ ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এ জন্যই সূচক বাড়ছে।

তবে ধার দেনা করে বা অলঙ্কার বেঁচে বা জমি বন্ধক রেখে পুঁজিবাজারে না আসতে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তারা। বাজার উত্থানকে কেন্দ্র করে ১৯৯৬ এবং ২০০৯-১০ সালে বহু মানুষ হুজুগে বিনিয়োগ করে সর্বশাস্ত হয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পুঁজিবাজারে সতর্ক হয়ে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন হুজুগে মেতে বিনিয়োগ করে পরে সরকারকে আর অর্থমন্ত্রীকে সব দোষ দিলে তা মেনে নেয়া হবে না।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অবশ্য বলেছেন দুই বছরের মধ্যে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে। এ জন্য বাজার ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে। আর আগামী তিন বছরে বাজার একটি শক্তিশালী অবস্থানে যাবে।

ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :