পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনই অসহনীয় যানজট

এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:৩৮ | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ১৫:২৯

রাজধানীতে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। তারপরও সকাল থেকে দুঃসহ যানজটে স্থবির রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রায় প্রতিটি সড়ক। সকাল থেকেই শান্তিনগর থেকে রাজারবাগ পর্যন্ত সড়ক প্রায় সময়ই দিনভর বন্ধ রাখে পুলিশ। মালিবাগ থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল করেছে কেবল একমুখী।

পুলিশ সপ্তাহে রাজারবাগের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় সকাল ১০টায়। তার আগে থেকেই তটস্থ পুলিশ সদস্যরা। তবে জনগণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে যতটা না চেষ্টা, তারচেয়ে বেশি উদ্যোগ ছিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসার পথ সুগম করতেই। আর প্রধানমন্ত্রীর আসা উপলক্ষে আগে থেকেই সড়ক বন্ধ রাখা হয়।

এর প্রভাবে সারাদিন ভুগেছে রাজধানীবাসী। দীর্ঘক্ষণ সড়ক বন্ধ থাকলে যানবাহনের অভাবে মোড়ে মোড়ে তৈরি হয় বিশাল জটলা। কোনো বাস আসতেই তাতে চাপতে হুড়োহুড়ি দেখা যায়। সকালে ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ এলাকায় এই চিত্র দেখা গেছে।

সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ডাইভারশন দেয়া হয়। এ কারনে রাস্তাগুলিতে যানবাহনের বাড়তি চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়ে এক পর্যায়ে তীব্র আকার ধারণ করে।

সকাল থেকে মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল, কাকরাইল, প্রেসক্লাব, মৎসভবন, শাহবাগ, রূপসীবাংলার মোড়, রমনা, মগবাজার এলাকা ঘুরে প্রতিটি রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা গেছে। সিগন্যালগুলিতে দেখা যায় গাড়িগুলো ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে।

সড়কের উল্টো দিকে গাড়ি চলা নিষিদ্ধ হলেও পুলিশকে উল্টো দিকে গাড়ি চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিতে দেখা যায় রাজধানীর রমনা এলাকায়। তাও খোদ ঢাকা মহানগর পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে এই চিত্র দেখা যায়।

এই এলাকা দিয়ে হেঁটে চলা গোলাম কুদ্দুস নামে একজন পথচারী এ বিষয়ে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দেখুন, পুলিশ কোথায় মানুষকে শৃঙ্খলা শেখাবে, সেখানে তারা শেখাচ্ছে উল্টো। পুলিশই যদি উল্টোপথে গাড়ি চালাতে উৎসাহ দেয়, তাহলে মানুষ ট্রাফিক আইন আর কতটা মানবে?’।

মতিঝিলের ব্যাংক কর্মকর্তা পিয়াস মাহবুব খান যাচ্ছিলেন ফার্মগেট। তিনি মতিঝিল থেকে ২ ঘন্টায় হোটেল রূপসী বাংলার মোড় পর‌্যন্ত আসতে পেরেছেন। পিয়াস মাহবুব ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আজকের যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেখেন মতিঝিল থেকে প্রায় দুই ঘন্টায় এই পর্যন্ত। আরও কতক্ষণে যে ফার্মগেট যেতে পারব, তা বলা যচ্ছে না।

নিউ ভিশন নামে একটি বাসের চালক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ভাই কইয়েন না, আজকের যানজটে গাড়ি লরেই না। কেমতে যামু বুঝবার পারছি না। মতিঝিল থেকে শাহবাগ আসতেই দেড় ঘণ্টা। মিরপুর কবে যামু বুঝবার পারছি না।’

রমনা ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট জাফর ইমাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যানজট ঢাকা শহরের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। রাস্তায় যানজটের অন্যতম কারণ রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। তাছাড়া পুলিশ সপ্তাহ চলছে এতে ভিআইপির জন্য কিছুক্ষণ ডাইভারশন দেয়ায় যানজট বেড়ে গেছে। তবে যানজটের মূল কারণ বিভিন্ন রাস্তায় কাটাকাটি। একবার বিদ্যুতের লোকজন রাস্তা খুঁড়ছে, একবার ওয়াসার লোকজন খুঁড়ছে, সিটি করপোরেশন এইভাবে সারা বছরই কোন কোন রাস্তা খুঁড়ছে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ট্রাফিক দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপকমিশনার মেহেদী হাসানের সঙ্গে আজকের যানজট নিয়ে কথা হয়। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস হওয়ায় যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। তার ওপর দুই একটি রাস্তায় ভিআইপি মুভমেন্ট ছিল, সব কিছু মিলেই কিছুটা যানজট হয়েছে।’

এই যানজট বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে না জানিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার এই কর্মকর্তা বলেন, সকাল থেকেই যানজট মাঝে মাঝে কমে, আবার মাঝে মাঝে বাড়ছে। তবে ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে রাস্তায় যানজট স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/জিএম/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :