এসএসসি পরীক্ষা

বাংলা প্রথম পত্রে বেশি নম্বর যেভাবে...

মো. মশিয়ার রহমান
 | প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:৪৮

২ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। আশা করি, পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ভালো। তাদের প্রস্তুতিকে আরও শাণিত করার জন্য বাংলা প্রথম পত্রের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো। তোমাদের সামান্যতম উপকার হলে আমার শ্রম সার্থক হবে।

সৃজনশীল অংশ:

গদ্য, কবিতা ও সহপাঠ (উপন্যাস ও নাটক) থেকে ৩টি বিভাগের মোট ১১টি প্রশ্ন থাকবে। গদ্য অংশ থেকে ২টি, কবিতা অংশ থেকে ২টি, উপন্যাস অংশ থেকে ১টি ও নাটক অংশ ১টি প্রশ্নসহ মোট ৭টি পশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রতিটিতে (ক-১, খ-২, গ-৩,ঘ-৪)=১০ নম্বর করে মোট নম্বর: ৭০। পরীক্ষার সময় ২ঘন্টা ৩০ মি।

ক. জ্ঞানমূলক অংশ:

প্রদত্ত নম্বর-১। [পাঠ্যবই থেকে একবাক্যে সঠিক উত্তর দেবে; এখানে কোনো বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণের দরকার নেই]।

খ. অনুধাবনমূলক:

প্রদত্ত নম্বর-২। এখানে ২টি প্যারা করা যেতে পারে। [প্রথম প্যারাটি হবে একবাক্যের। প্রশ্নে যা চাইবে এককথায় উত্তরের আসল বস্তু জ্ঞান আকারে লিখবে একবাক্যে আর ২য় প্যারায়/অংশে থাকবে সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ, যা সর্বোচ্চ -৩-৪ বাক্যে শেষ করতে হবে]। মনে রাখা প্রয়োজন, অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে সব মিলে সর্বোচ্চ ৫ বাক্যে শেষ করতে হবে।

গ. প্রয়োগমূলক অংশ:

প্রদত্ত নম্বর-৩। এখানে উত্তরের তিনটি প্যারা বা অংশ করা যেতে পারে। [এখানে তিনটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে পার। অংশগুলো হলো। *উত্তরের শুরুতেই মূল উত্তরটুকু অর্থাৎ জ্ঞানমূলক আকারে একবাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে। এরপর প্রশ্নে চাওয়া বিষয়ের সঙ্গে মূল পাঠ্যের সম্পর্ক নিরুপণ থাকবে, যা ব্যাখ্যায় অংশ বলা যেতে পারে। প্রয়োগের ৩য় অংশ অবশ্যই সম্পর্ক নিরুপণের ক্ষেত্রে প্রকৃত সমস্যা সমাধান করতে হবে। ১ম প্যারা ১ বাক্য: ২য় প্যারা ৩/৪ বাক্য আর ৩য় প্যারা- ৭/৮ বাক্য হতে পারে]। এখানে সর্বোচ্চ ১১ বাক্য লিখতে পারবে।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতামূলক:

প্রদত্ত নম্বর-৪। এখানে তিনটি থেকে চারটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে হবে। [অংশগুলো হলো: উত্তরের শুরুতেই প্রশ্ন অনুযায়ী জ্ঞানমূলক অংশে একবাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে।*দ্বিতীয় প্যারায় প্রশ্ন অনুযায়ী উদ্দীপক ধরে চিন্তন শক্তি ব্যাখ্যা করবে।*তৃতীয় প্যারায় উদ্দীপক ও মূলপঠ্যের সম্পর্কগত আলোচনা করবে, সার্বিক বিশ্লেষণ করবে-সেক্ষেত্রে উদ্দীপক, মূলপাঠ্য বিষয় ও পারিপাশির্^ক ব্যবস্থার সঙ্গে মিল রেখে তোমার অনুভূতি/মতামত প্রকাশ করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে]। এখানে সর্বোচ্চ ১৫ বাক্য লিখতে পারবে।

** সৃজনশীলের ক্ষেত্রে প্যারা আকারে লেখা বাধ্যতামূলক নয়, তবে উত্তরের প্রাসঙ্গিকতা ঠিক রাখার জন্য প্যারা করা দোষের হবে না।

বহুনির্বাচনী প্রশ্ন:

নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষায় মোট ৩০ টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। মূল বই বারবার পড়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের নিচে দাগ দিয়ে রাখবে। গল্প, কবিতা, শব্দার্থ ও টীকা বারবার পড়বে। কবিতা, প্রবন্ধ বা লেখকের জন্মস্থান, জন্ম-মৃত্যু সাল, তার রচিত গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার বা গ্রন্থের নাম মনে রাখবে। একটি গল্প বা কবিতার উৎস , প্রকাশ সাল , প্রকাশের পত্রিকা, কোন গল্প বা কবিতার মাঝে অন্য লেখক কবির উদ্ধৃতি, কোন মনীষীর নাম থাকলে তা গুরুত্বের সাথে মনে রাখতে হবে। বর্তমান ক্যাটগিরিতে যে তিনটি স্তর তোমাদের পার করতে হবে তা হলো:

ক) সাধারণ বহুনির্বাচনী অংশ:

এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতিনির্ভর। এ ক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো কখনও প্রশ্ন আকারে আবার কখনও অসম্পূর্ণ বাক্য হিসেবে দেওয়া থাকে যা উদ্দিপক হিসেবে কাজ করে। বিকল্প উত্তর চারটি, যার মাত্র একটি সঠিক। এ বিভাগে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা এ চারটি উপবিভাগ বিদ্যমান থাকে। মূল বই বারবার পড়লে এখান থেকে ১০০% নম্বর পাওয়া সম্ভব।

খ) বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন:

এ ধরণের প্রশ্নের শুরুতে ৩ টি তথ্যভিত্তিক উপস্থাপন থাকে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরে ৪টি প্রশ্ন তৈরি করা হয়, যার মান বর্ণে মুর্দ্রিত থাকে। এ প্রশ্নে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একাধিক উত্তর থাকে, যার উত্তর প্রদত্ত চারটি প্রশ্নে বিদ্যমান। অতি নিখুঁত ভাবে এখানে উত্তর করতে হবে তোমাদের। এই স্তরে অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা যাচাই করা হয়।

গ) অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন:

এখানে একটি উদ্দীপক পাবে, যার মাধ্যমে তোমাকে তথ্য সরবরাহ করা হবে। প্রশ্নগুলোর সঙ্গে এক অপরের মিল পাওয়া যাবে। ভয় পাবে না-ভাবলেই দেখবে, এখানে সাধারণ বহুনির্বাচনী বা সমাপ্তিসূচক প্রশ্নই হয়ে থাকবে। এখান থেকে মূলত প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতাকে যাচাই করা হয়। উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়বে এবং মূল বইকে অনুসরণ করবে এ পর্বে নিশ্চিত ভালো পারবে।

নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্নের ধরন:

গদ্যাংশ: ১২; পদ্যাংশ: ১২; সহপাঠ (উপন্যাস-৩, নাটক-৩):৬; সর্বমোট ৩০ টি নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্ন থাকবে। পূর্ণমান: ৩০।

গদ্য :

বইপড়া, অভাগীর স্বর্গ, আম-আঁটির ভেঁপু , মানুষ মুহম্মদ (সা.), দেনাপাওনা, মমতাদি, উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন, নিরীহ বাঙালী, একাত্তরের দিনগুলি, সাহিত্যের রূপ ও রীতি।

পদ্য :

প্রাণ, অন্ধবধু, ঝর্ণার গান, সেইদিন এই মাঠ, আমি কোন আগন্তুক নই, কপোতাক্ষ নদ, পল্লী জননী, জীবন সঙগীত, আমার সন্তান, স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো।

উপন্যাস:

কাকতাড়ুয়া।

নাটক:

বহিপীর।

[বহুনির্বাচনি অংশের জন্য সব অংশ ভালভাবে পড়তে হবে]

মো. মশিয়ার রহমান : সহকারী শিক্ষক (বাংলা), বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা।

ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এমআর/টিএমএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :