স্ত্রীকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগ

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:৫৩ | প্রকাশিত : ২৮ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:০৮

২০ বছরের সংসার। স্বামী আর স্ত্রীতে ঝগড়া লেগেই থাকতো। আর এর জেরে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। খুন করা হয়েছে আর্জিনা খাতুনকে। তার গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ লোহার রড় দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করার অভিযোগ করেছেন নিহতের ভাই।

শনিবার বগুড়ার ধুনট উপজেলার বিশ্বহরিগাছা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। হত্যার পর আর্জিনা খাতুনের মরদেহ বাঁশঝাড়ে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান তার স্বামী।

আর্জিনা খাতুন ওই উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের মেয়ে। বছর বিশেক আগে তার বিয়ে হয়েছিল রেজাউল করিমের সঙ্গে। দুই যুগের সংসারে জন্ম নেয় তিনটি সন্তান। এদের মধ্যে বড় মেয়ে আদুরী খাতুন পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে, মেজো ছেলে রাজু আহম্মেদের বয়স ৯ আর ছোটো সন্তান রাজুর বয়স ৩।

স্থানীয়রা জানান, রেজাউলের সঙ্গে আর্জিনার প্রায়ই মতবিরোধ ছিল। আর ঝগড়া ছিল এক নিয়মিত চিত্র। স্থানীয় সালিশে মিটমাটও করা হয় একাধিকবার। শুক্রবার রাতেও ঝগড়া করেছেন দুই জন। থেমে গেলে ঘুমাতে যান ছেলে সন্তানরা।

সকালে জেগে ওঠে ঘরে মা-বাবাকে দেখতে না পেয়ে অন্যদেরকে জানায় বড় মেয়ে আদুরী। একটু পরেই মাকে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় সে। এরপর তার চিৎকারে ছুটে আসে আশেপাশের মানুষ।

এ সময় তিন সন্তানের কাঁন্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। পরে খবর পেয়ে ছুটে আসে আসেন। ময়নাতদন্তের জন্য তারা বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে যায় দুপুর ১২ টার দিকে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় ময়নাতদন্ত হয়নি শনিবার। রবিবার সকাল ১০টায় এই ময়নাতদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন আর্জিনা বেগমের ভাই আব্দুর রাজ্জাক।

এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্বজনরা হত্যা মামলা করতে চাইলেও পুলিশ অপমৃত্যু মামলা নিয়েছে। আবার প্রত্যক্ষদর্শীরা মরদেহের গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখলেও পুলিশ তা দেখতে পায়নি।

আর্জিনার বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিয়ের পর থেকে তার বোনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন রেজাউল। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে বেশ কয়েকবার সমঝোতা বৈঠকও হয়েছে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, গত কয়েকন দিন আর্জিনাকে মারধর করেন তার স্বামী রেজাউল। আর ঝগড়ার জেরে আর্জিনাকে পিটিয়ে ও লোহার রড দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মৃতদেহ বাড়ির পাশে বাঁশ বাগানে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান রেজাউল।

আর্জিনার বোন বলেন, ‘আমার বোনের গোপন জায়গায় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রড দিয়ে খুঁচিয়ে মারার চিহ্ন দেখা গেছে।’

আরজিনা খাতুনের বড় মেয়ে আদুরী খাতুন জানায়, সে বাবার বিছানার নিচ থেকে ১০ টাকা নিয়েছিল। এই টাকা খুঁজে না পেয়ে মাকে মারধর করেন তার বাবা। এ ঘটনা নিয়ে দিনভর মা বাবার মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর রাতে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে উঠে মায়ের মরদেহ দেখতে পায় সে।

স্থানীয় চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। লাশের পেছন দিক দিয়ে রক্তঝড়ার চিহ্ন দেখা গেছে। তার ধারণা, রাতের কোন সময়ে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো।

তবে নিহতের স্বজন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মরদেহের গায়ে আঘাতে চিহ্ন দেখলেও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের দাবি আঘাতের চিহ্ন ছিল না আর্জিনার গায়ে। ময়নাতদন্ত ছাড়া কোন কথা বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :