গাইবান্ধায় স্কুল পোড়ানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন আটক
গাইবান্ধায় মেয়েদের একটি স্কুলে আগুন দেয়ার ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তার নাম রঞ্জু মিয়া। তিনি ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই স্কুলটিতে আগুন দেয়া হয়। এর তিন দিনের মাথায় আটক রঞ্জুই প্রথম ব্যক্তি যাকে পুলিশ ধরেছে।
রঞ্জুকে রবিবার সন্ধ্যায় কুন্দেরপাড়া থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। রঞ্জু মিয়া কামারগানি ইউনিয়নের পারদিআরা গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে কুন্দেরপাড়া গণউন্নয়ন একাডেমি স্কুলে গত বৃহস্পতিবার রাতে আগুনে আগুন দেয়া হয়। ১২টার দিকে বিদ্যালয়টিতে আগুন লাগার পর দ্রুত তা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও বিদ্যালয়ের আসবাব ও কাগজপত্রগুলো রক্ষা করতে পারেনি।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, আগুনে আসবাবপত্রের পাশাপাশি আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া ৭৭ শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র এবং কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর এসএসসি ও জেএসসির সনদ পুড়ে গেছে।
এই ঘটনার শনিবার এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করে স্থানীয়রা। সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি, বিদ্যালয়ের সভাপতি গণউন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম আব্দুস সালাম, জহুরুল কাইয়ুমসহ ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
চরাঞ্চলের মৌলবাদী একটি সন্ত্রাসী চক্র দীর্ঘদিন থেকেই ওই এলাকায় নারী, শিক্ষা এবং উন্নয়নের বিপক্ষে নানা অপতৎরতা চালিয়ে আসছিল। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন তারাই এই বিদ্যালয়টিকে সুপরিকল্পিত ধ্বংস করতে চেয়েছে।
স্কুলে আগুনের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মেহেদী হাসান বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে ক্ষতিসাধন করা সংশ্লিষ্ট ধারায় এই মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশ গুরুত্ব নিয়ে বিষয়টির তদন্ত। তিনি বলেন, ‘তারা নিশ্চিত যে, পরিকল্পিতভাবে এই আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।’
এই মামলায় রঞ্জুর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মেহেদি হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত থাকতে পারে। অনুসন্ধানে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
এদিকে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে স্কুলটি পুড়িয়ে দিলেও শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। শনিবার
পুড়ে যাওয়া বিদ্যালয়ের পাশে, গাছতলায় এবং পাশের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের তাবুতেই ক্লাস নেয়া হয়েছে। সবার দৃঢ় প্রত্যয়, আবার তারা ঐক্যবদ্ধভাবে তিল তিল করে গড়ে তুলবেন স্বপ্নের স্কুলটি।
(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/ প্রতিনিধি/ ইএস)