বইপত্র
মহুয়া মাতালের দেশে
মহুয়া মাতাল হলে- কবি মোক্তার হোসেন এর সুর-ছন্দ-রঙ-ঢঙ-বিরহ-প্রেম-বিচ্ছেদের এক অনন্য উপাখ্যান। সরল উপস্থাপনা, ছন্দের ব্যাঞ্জনায় পাতায় পাতায় জমানো হয়েছে প্রেমের সুখপাঠ্য শিশিরন্দিু। মুক্তাদানার মত যা ছড়িয়ে যাবে পাঠকের হৃদয়ের মনিকোঠায়। এই বইটি এমনই এক সময় প্রকাশ পেতে যাচ্ছে যখন, বর্তমান তরুণ কবির আধুনিক কবিতা ও প্রকাশভঙ্গি নিয়ে যেমন আলোচনা চলছে তেমনই চলছে সমালোচনা। পাঠক সমাজ কবিতায় নান্দনিকতা, ছন্দময়তা ও বহমান নদীর ¯্রােতের টান অথবা দখিনা বাতাসের দোলার অভাবে দিনে দিনে বিমুখ হয়ে পড়ছেন কবিতা থেকে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, কবিতার পাঠক নেই - না পাঠকের পাঠযোগ্য কবিতা নেই। পাঠকে আকর্ষণে তাই কিছু কিছু কবি হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে যৌনতা, তা কখনও প্রাসঙ্গিক বা কখনও অপ্রাসঙ্গিক। বিমূর্ত উপস্থাপনার মুন্সিয়ানার অভাবে তাই কবিতা হয়ে পড়ছে অশ্লীল যা পাঠককে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে যোজন যোজন। প্রেমের শ্বাশত রূপ বিক্ষিপ্ত ভাবে উঠে আসে হতাশার চাদরে কবি শব্দেরা মুখ লুকিয়ে কাঁদে। আশ্চর্য হলেও সত্য এর মধ্যে কিছু তরুণ কবি সে আশার আলোর প্রদীপ হাতে অন্ধকারে পথ দেখানোর ব্রত নিয়ে আমাদের সাহিত্য পাড়ায় কড়া নাড়ছে। হয়তো হাজার কবির আড়ালে সে সকল তরুণ কবিদের বোদ্ধাগণ আঁচ করতে পারেন না। কবি মোক্তার হোসেনকে সেই কড়া নাড়া কবিদের একজন ভাবলে ভুল হবেনা বোধ করি। যার কবিতার ছন্দের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গুন গুন করে আমরা পৌঁছতে পারি জোসনার উঠানে। যেখানে মহুয়ার প্রেমে মাতাল হয়ে বিনি সুতায় গাঁথা হয় অনিন্দ প্রেমের কাব্য। মহুয়া মাতাল হলে- বইয়ের কিছু প্রেমের পঙতিমালা নিচে তুলে ধরা হলো-
‘‘রাগলে তোমার ঠোঁট হয়ে যায় কৃষ্ণচূড়ার লাল
‘‘তুমি তো গোলপ ফুল নও
হাসনাহেনা কিংবা বেলী নও
ছোট্ট এক ঘাসফুল
তোমায় ভালোবাসি...’’‘‘হাঁটতেই হয়ে গেলে চঞ্চল প্রজাপতি
দাঁড়ালো হলে তাই ফাগুনের ফুল
চোখে চোখে ঝরে যায় শিশিরের সোনা রঙ
কখন যে হলো মন তোমাতে ব্যাকুল’’‘‘কজনই-বা আছে এমন যৌবন এলে হাসতে জানে ফাগুন কালের চোখের জলে কজনই-বা অর্থ জানে’’
‘‘হাসনাহেনা ফুলের সুবাস তোমায় দিলাম - নাও না চোখের ভেতর দু’চোখ দিয়ে স্বপ্ন আমার - হও না’’
‘‘ফাগুন সেজেছে আগুন ঝরিয়ে আকাশের নীল খামে
রক্ত করবী ফুটেছে তোমার হৃদয়ের মাঝখানে
হাসছে আঙিনা ফসলের মাঠ তোমার চারিধার
লাল-নীল রঙ ফাগুনের ঢঙ দিলাম উপহার’’কবি মোক্তার হোসেন এর মহুয়া মাতাল হলে- বইটি প্রকাশ পাচ্ছে বেহুলা বাংলা প্রকাশনী এর ব্যানারে গ্রন্থমেলা ২০১৭। প্রচ্ছদ এঁকেছেন আল নোমান। বইটি পাওয়া যাবে মেলার প্রথম দিন থেকেই বেহুলা বাংলার ২৭৬ নং স্টলে।
একনজরে কবি
মোক্তার হোসেন। জন্ম : ৬ এপ্রিল, ১৯৮২। গ্রাম- টামটা, ডাকঘর ও থানা - রামগঞ্জ, জেলা- লক্ষ্মীপুর। পিতা- মরহুম ইসমাইল মাস্টার, মাতা- মনোয়ারা বেগম। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। মাধ্যমিক স্কুল জীবন কাটে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরবর্তীকালে উচ্চ মাধ্যমিক সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে সম্পন্ন শেষে ঢাকা কলেজ থেকে প্রণিবিদ্যায় স্নাতক ও মৎসবিদ্যয় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবনে পোশাক শিল্পের স্বনামধন্য বহুজাতিক কোম্পানি লি এন্ড ফুং বাংলাদেশ লিমিটেড-এ সহকারী মার্চেনডাইজ ম্যানেজার হিসেবে বর্তমানে কর্মরত আছেন। সুযোগ পেলেই আবহমান বাংলার হাওড়, নদী ও সবুজের কাছে ছুটে যান। মহুয়া মাতাল হলে (প্রকাশক - বেহুলা বাংলা), মগজবিহীন গাধার দল (প্রকাশক - তিউড়ি প্রকাশন) এবং একটি লাল ঘুড়ি এবং আমি
(প্রকাশক -জেব্রাক্রসিং), এই তিন শিরোনামে কবি মোক্তার হোসেন এর তিনটি ২০১৭ সালে বইমেলায় প্রকাশ পাচ্ছে।
ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/এডি/টিএমএইচ