দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উত্তোলন

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:৫৭

দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য কুমিল্লায় প্রায় সাড়ে চার মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে প্রবাসীর স্ত্রী তানজিনা আফরিন রিমার লাশ।

বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর গ্রামে রিমার পিতার বাড়ির পাশে কবর থেকে তার লাশ উত্তোলনের পর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার বরদৈল গ্রামে ননদের গোপন বিয়ের কথা ফাঁস করায় প্রবাসী স্বামী মাহবুব আলমের ইন্ধনে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদসহ আরও কয়েকজন জন মিলে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে একই উপজেলার আলেখারচর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে এক সন্তানের জননী তানজিনা আফরিন রিমাকে। এ ঘটনায় স্বামীসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুই-এক জন অভিযুক্ত করে কুমিল্লার আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন রিমার পিতা।

রিমার প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক কুমেক ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে হত্যাকে আত্মহত্যা বানিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বদলানোর। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ নভেম্বর ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই প্রবাসীর স্ত্রীর পিতা ও মামলার বাদী মো. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া রিমার প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও সুরহতাল প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়ে দ্বিতীয়বার দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের আবেদন জানান তিনি।

আদালত মামলার বাদীর এ আবেদন আমলে নিয়ে আবার ওই প্রবাসীর স্ত্রীর ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য নির্দেশ দেয়।

বুধবার লাশ উত্তোলনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন- কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা, কুমিল্লা কোতয়ালী থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা রিমার লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাদী মো. জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, রিমার প্রবাসী স্বামী মাহবুব আলমের নির্দেশে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদসহ আরও কয়েকজন জন মিলে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে তার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করে। রিমার ননদ তানজিনা আক্তার অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে গোপনে এক যুবককে বিয়ে করার তথ্য ফাঁস করে দেয়া এবং তাদের যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারাই ছিল তার মেয়ের অপরাধ।

তিনি দাবি করেন, পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে রিমার প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যাকে আত্মহত্যা বানিয়েছেন ডা. ফারুক। যার কারণে আমার মেয়ের লাশ গলায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও গত বছরের ২২ নভেম্বর আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এই মর্মে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন তিনি।

তিনি বলেন, এবার অন্তত আমার মেয়ের হত্যার সঠিক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি চিকিৎসকদের।

প্রসঙ্গত, হত্যার পর কোতয়ালী থানায় মামলা করতে না পেরে রিমার পিতা বাদী হয়ে কুমিল্লার আদালতে হত্যা মামলা করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই মামলায় রিমার স্বামী মাহবুব আলমকে এ হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়। এছাড়া অপর আসামিরা হলেন- রিমার শ্বশুর আবদুল আজিজ, শাশুড়ি সাবেরা বেগম, ননদ তানজিনা আক্তারসহ অজ্ঞাত আরও এক-দুইজন।

(ঢাকাটাইমস/১ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :