মেলান্দহকাণ্ডের হোতা স্কুলেরই এক শিক্ষক

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:৫২ | প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৫০

স্কুল ছাত্রদেরকে সেতুর মতো বানিয়ে তার ওপর চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারির হাঁটার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে একই ধরনের আরেকটি ছবি তোলপাড় ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুরের মেলান্দহের একটি স্কুলে। এই ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানা গেলো আরও চমকপ্রদ তথ্য। এই কাণ্ডের মূল উদ্যোক্তা ওই স্কুলের শরীরচর্চা শিক্ষক।

গত ২৮ জানুয়ারি মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিশুছাত্রদের কাঁধে চড়ে হাঁটেন ওই স্কুলের জমিদাতা দিলদার হোসেন প্রিন্স। এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎগতিতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই কাণ্ডের উদ্যোক্তা স্কুলের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক হাফিজুর রহমান। ছাত্রদের কাঁধে জমিদাতার হাঁটার সময় যিনি তার হাত ধরে রেখেছিলেন তিনিই হাফিজুর রহমান।

এই ঘটনা কেন ঘটালেন-জানতে চাইলে ঢাকাটাইমসকে হাফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এটা ডিসপ্লে করেছি। একজন বিপদের সময় একজন বিপদে পড়া লোককে কীভাবে নিয়ে আসতে হবে, সেটাই আমরা প্রদর্শন করেছি। এখানে মানবিকতা বা অমানবিকতার কিছু নেই।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আছানতুজ্জামান অবশ্য এই কাণ্ডে বিব্রত। তিনি বলেন, ‘স্কুলে সেদিন অনুষ্ঠান চলছিল। আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম, এসে শুনি স্কাউটের প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে ছেলেরা একটি মানব সেতু নির্মাণ করে এবং এর ওপর তিনি (জমিদাতা) হেঁটে গেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসেছি, স্থানীয় সুধীজন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং প্রশাসনের লোকদের নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এই তদন্ত করছে। অন্য দুই সদস্য হলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান সানা।

সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জন কেনেডি জাম্বিল, স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ স্থানীয় গণমান্যরাও স্কুল প্রাঙ্গনে উপস্থিত হন।

তদন্ত কমিটি ছাত্র, শিক্ষকদের পাশাপাশি স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং ছাত্রদের কাঁধে হাটা দিলদার হোসেন প্রিন্সেরও সাক্ষাৎ নেয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমরা ছাত্র শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে রিপোর্ট জমা দেবো। আর পরবর্র্তী নির্দেশ অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাবো।’

এই তদন্ত চলাকালে উপস্থিত ছিলেন না ছাত্রদের কাঁধ মাড়ানো দিলদাল হোসেন প্রিন্স। স্কুলের পাশেই মাহমুদপুরে তার বাড়ি। সেখানে নিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ভাই শাহাদাৎ হোসেন সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমার ভাইকে এক অর্থে জোর করে ছেলেদের কাঁধে উঠানো হয়েছে। সে বিষয়টি বুঝতে পারেনি। এ জন্য তার পক্ষ থেকে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

ঢাকাটাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :