কুমিরের ৪৩ বাচ্চা চুরি, একজন বরখাস্ত
সুন্দরবনের করমজল পর্যটন এলাকায় অবস্থিত বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের চৌবাচ্চায় থাকা লবন পানির ৪৩টি কুমিরের বাচ্চা চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রজনন কেন্দ্রের একজন লস্করকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এক শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বনবিভাগ। এছাড়া কুমির চুরির ঘটনা তদন্তে বনবিভাগ সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাদঁপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মেহেদীজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মেহেদীজ্জামান রাতে এই প্রতিবেদককে বলেন, করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের দুটি চৌবাচ্চায় ছয় মাস বয়সী প্রায় নব্বইটি কুমির রাখা ছিল। গত ২৯ জানুয়ারি চৌবাচ্চায় কম কুমির দেখতে পাওয়া যায়। ঘটনার দিন এই কেন্দ্রে দায়িত্বে ছিলেন বনবিভাগের লস্কর মাহাবুব আলম ও অস্থায়ী শ্রমিক জাকির হোসেন। এসময় চৌবাচ্চায় কতগুলো কুমির রয়েছে তা গণনা করতে গিয়ে দেখা যায় ৪৩টি কুমির কম।
তিনি বলেন, বনবিভাগের মাহাবুব ও জাকির এই কুমিরগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। মাহাবুবের সহযোগিতায় জাকির কুমিরগুলো পাচার করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
বিলুপ্ত প্রায় লবণ পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র এই বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি।
করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে রোমিও নামে একটি পুরুষ, জুলিয়েট ও পিলপিল নামের দুইটি মা কুমিরসহ ২৩৪টি বাচ্চা কুমির রয়েছে। এছাড়া ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার জলোচ্ছ্বাসে করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র থেকে ছোট-বড় ৬১টি কুমির পানিতে ভেসে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বাইরের কিছু বড় প্রাণী ১৮টি কুমিরের বাচ্চা খেয়ে ফেলে।
কুমির চুরির ঘটনা তদন্তে বনবিভাগ সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাদঁপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মেহেদীজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানান সহকারী বন সংরক্ষক মো. মেহেদীজ্জামান।
সুুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে কুমিরের বাচ্চাগুলো চুরি যাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানানো হলে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। প্রাথমিক তদন্তে কুমির চুরির ঘটনায় বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে লস্কর মাহাবুব আলমের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাকে সাময়িকভাবে বরখান্ত করে ওই কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এই চুরির ঘটনায় বনবিভাগের নিয়োগ করা অস্থায়ী শ্রমিক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএ)