সাংবাদিক হত্যা: পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আ.লীগের মেয়র মিরু

অনলাইন ডেস্ক
| আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:০৫ | প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:০১

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় সমকালের সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের মৃত্যুও পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মিরু। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টার কথা বললেও তার অবস্থান কোথায় তা নিশ্চিত করতে পারছে না।

মেয়র আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর থেকেই মেয়রের সমর্থক ও স্বজনেরাও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। মেয়রের মোবাইল ফোনটিও বন্ধ। তার বাড়িতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মেয়র মিরুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইন ব্যবস্থাও নেয়া হবে। আর এই ব্যবস্থা নেয়া হবে তড়িৎ। অপরাধ করলে কেউ পার পাবেন না বলেও জানিয়েছেন জনাব কাদের।

নিহত শিমুলের স্ত্রী নুরুন নাহার এরই মধ্যে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এতে মেয়র মিরু, তার ভাই মিন্টু, সাবেক কাউন্সিলর পিজুস, আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে মেয়রের দুই ভাই পিন্টু, মিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা কেএম নাসির উদ্দীনসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে নিহত সাংবাদিক শিমুলের বাড়িতে যান সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

নিহত শিমুলের ভাই আজাদ হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে মেয়র মিরু শিমুলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ের। আমরা মিরু ও তার দুই ভাই পিন্টু ও মিন্টুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) আবুল হাসনাতও এই ঘটনায় মেয়র মিরুকে দায়ী করেন। শনিবার সাংবাদিক শিমুলের জানাজার আগে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। মেয়রকে বারবার বারণ করার পরও তিনি গুলি ছোড়েন। একাধিক গুলি করেন মেয়র। অন্য কোনো পক্ষ গুলি করেনি।’

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল হক জানান, ‘শিমুলের মৃত্যুর সংবাদের পর থেকেই অভিযুক্ত মেয়রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার একটি রাস্তার কাজ নিয়ে কালীবাড়ি এলাকায় মেয়রের ছোট ভাই পিন্টু মারধর করেন ছাত্রনেতা বিজয়কে। এতে তার হাত-পা ভেঙে যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দলের কর্মী-সমর্থক ও বিজয়ের মহল্লা কান্দাপাড়ার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে দিলরুবা বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। এক পর্যায়ে অবরোধকারীদের একটি অংশ একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মনিরামপুর মেয়রের বাড়ির সামনে যায়। এ সময় কয়েকজন মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ে। এ সময় মেয়রের সহোদর পিন্টু ও তার সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গ সংঘর্ষ বাঁধে।

এক পর্যায়ে মেয়র তার ব্যক্তিগত শটগান থেকে গুলি করেন। এ সময় দৈনিক সমকালে শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুলের মাথায় ও মুখে গুলি লাগে। শুক্রবার বগুড়া থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে দুপুরে মারা যান শিমুল। এই খবর শাহজাদপুর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে মেয়র মিরু আত্মগোপনে চলে যান।

(ঢাকাটাইমস/০৪ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :