লোকগবেষণায় পুরস্কার পেলেন আশরাফ সিদ্দিকী
নেত্রকোণায় চন্দ্রকুমার দে লোকগবেষণা পুরস্কার পেয়েছেন লোকসাহিত্য বিষয়ক গবেষণার জন্য খ্যাতিমান লোকসাহিত্য গবেষক আশরাফ সিদ্দিকী।
মহুয়া, মলুয়া, চন্দ্রাবতী, কমলা, দেওয়ানা মদিনা, কাজলরেখা, রুপবতীর মতো অনেক পালাগীতি নিয়ে জগৎখ্যাত লোকজ গ্রন্থ মৈমনসিংহ গীতিকার সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে’র নামে এই পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়।
এবারই প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার চালু করে নেত্রকোণা সরকারি কলেজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের উদ্যোগে গঠিত ফোকলোর পর্ষদ।
সোমবার দুপুরে নেত্রকোণা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগ মিলনায়তনে পুরস্কৃতজন আশরাফ সিদ্দিকীর হাতে পুরস্কারের ক্রেস্ট ও পুরস্কারের অর্থমূল্য ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার।
কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক সরোজ মোস্তফার সঞ্চালনায় পুরস্কার প্রদান আলোচনায় বক্তব্য দেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রধান মো. মাহবুব হোসেন, জামালপুরের আশেক মাহমুদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক মোজাহিদ বিল্লাহ ফারুকী, টাঙ্গাইল সাদত কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আলীম মাহমুদ প্রমুখ।
শেষে টাঙ্গাইলের চর্যা সহজিয়া দল চর্যাপদ অবলম্বনে গীতিআলেখ্য পরিবেশন করে।
বাংলা বিভাগের প্রধান ও ফোকলোর পর্ষদের সভাপতি আফজাল রহমান বলেন,জীবদ্দশায় কঠিন দারিদ্র্যের সাথে লড়ে লোকসংস্কৃতি সংগ্রহ ও সাহিত্য সাধনা করেছেন চন্দ্র কুমার দে। তাকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতেই এই আয়োজন। তা ছাড়া নেত্রকোণা অঞ্চলের লোকসাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রটির পরিচর্যা করতেই মূলত কিংবদন্তি লোকজ সংগ্রাহক চন্দ্র কুমার দে’র নামে পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে।
পুরস্কার প্রদানে আলোচনায় প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার বলেন, চন্দ্র কুমার দে’র একমাত্র স্মৃতি ময়মনসিংহের পৌর শ্মশাণঘাটে একটি মঠ ছিল। তাও একাত্তরে পাকসেনা ও এদেশীয় দোসরেরা গুড়িয়ে দেয়। লোকায়ত সাহিত্যের এই অগ্রজের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার আইথর গ্রামে। তিনি সরকারি উদ্যেগে আইথর গ্রামের বাড়িটি বর্তমান মালিকের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে সংরক্ষণের দাবি জানান।
পরে এই দাবিকে সমর্থন করে ফোকলোর পর্ষদের সভাপতি আফজাল রহমান সংগঠনের পক্ষ থেকে সভায় প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন।
পুরস্কার প্রাপ্তির জবাবে পুরস্কৃতজন আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, আমরা যা করেছি তাই শেষ নয়।বর্তমান প্রজন্মকে দাযিত্ব নিতে হবে। নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের লোকজধারার সংস্কৃতিকে তিনি অফুরন্ত ভাণ্ডার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ঘাটু গান, জারি-সারিসহ অনেক ধরনের গান, গীতিকা আছে। তা ভালো করে শুনতে হবে। লোকজ সাহিত্যকে আত্মস্থ করে ভবিষ্যতে এই সাহিত্যকে আরও এগিয়ে নিতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আশরাফ সিদ্দিকী।
(ঢাকাটাইমস/০৬ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেবি)