নরসিংদীতে ঐতিহ্যবাহী সপ্তাহব্যাপী বাউল মেলা শুরু

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:৫৫ | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২০:২৫

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নরসিংদী শহরের মেঘনা নদীর তীরে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা। বাউল মেলা চলবে আগামী সোমবার পর্যন্ত। ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েকশ বাউল সাধক এ মেলায় যোগ দিচ্ছেন বলে জানান আয়োজকরা।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে হাজার-হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু এ মেলায় অংশ নেন।

বাউল সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রায় ৭শ বছর ধরে মাঘী পূর্ণিমা তিথীতে শহরের কাউরিয়াপাড়ায় অবস্থিত শ্রী শ্রী বাউল ঠাকুরের আখড়ায় এই মেলার আয়োজন করা হয়। এর এক মাসিআগে জেলার শিবপুর উপজেলার তেলিয়া বাজারে পূজা অর্চনার মাধ্যমে মেলার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়। সেই অনুয়ায়ী বুধবার জগৎবন্ধু ঠাকুরের মহাপ্রসাদ বিতরণ ও শুক্রবার দেবতা ব্রহ্মার পূজা মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে।

শহরের কাউরিয়াপাড়া এলাকায় নরসিংদীর নতুন লঞ্চ টার্মিনালের পাশে বাউলের আখড়া। এই আখড়ায় বাউল ঠাকুরের অন্তধান হয়েছিল। বাউল আখড়ায় জগন্নাথ দেবতার মন্দির রয়েছে। মন্দিরে মহাবিষ্ণুর পূর্ণাঙ্গ প্রতিমা, জগন্নাথ দেবতার প্রতিমা, মা গঙ্গার (৩৩ কোটি দেবতার) গট, নাগদেবতার বিগ্রহ ও শিবলিঙ্গ রয়েছে। যা বাউল ঠাকুর নিজে প্রতিস্থাপন করে গেছেন বলে কথিত রয়েছে। পাশে রয়েছে বাউল ঠাকুর ও মাতাজির সমাধি মন্দির। সবার মধ্যখানে রয়েছে উপাসনার জন্য বিশাল একটি আটচালা মন্দির।

সপ্তাহব্যাপী এ বাউলের মেলা আয়োজন নিয়ে চলছে মহা ধুমধাম। বাউল ভক্ত সাধুরা আখড়ায় আসা শুরু করেছেন। মেলায় আগত বাউলরা বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।

ভারতের আগরতলা থেকে এসেছেন বেশ কয়েকজন বাউল ভক্ত। তাদেরই একজন মুকুল দে বলেন, মেলার সময় ঘনিয়ে এলে আর বাড়িতে বসে থাকতে পারি না। মনের টানেই প্রতিবছরই মেলায় অংশ নেয়ার জন্য নরসিংদীতে আসি। এখানে এলে সকল বাউলের দেখা পেয়ে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়।

বাউল আখড়ার তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রাণেশ কুমার বাউল ঝন্টু ঢাকাটাইমসকে বলেন, মানুষের মধ্যে সকল ধর্মকে মানবতার ঊর্ধ্বে তোলার জন্যই বাউল ঠাকুরের আর্বিভাব হয়েছিল। তাই বাউল মেলায় বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশ নেয়।

ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই মেলায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরি সামগ্রী লৌহজাত সামগ্রী, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, মিষ্টির দোকান রয়েছে।

এছাড়াও শিশুদের আকৃষ্ট করতে মেলায় নাগর-দোলাসহ নানা বিনোদনমূলক রাইডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. শফিউর রহমান বলেন, সপ্তাহব্যাপী ঐতিহ্যবাহী এই বাউলের মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বাউলের আখড়া ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)