প্রকৃত ভিড় দেখছে বইমেলা, বাড়ছে বিক্রিও

জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২২:৪৯ | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২২:২৫

বইপ্রেমীরা সারা বছর অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে ফেব্রুয়ারির অপেক্ষায়। ফেব্রুয়ারি মানেই বইয়ের মেলা, প্রাণের মেলা। অমর একুশে বইমেলার আজ ছিল দশম দিন। এতদিন মেলায় ভিড় এবং বিক্রি কম থাকলেও আজ বইপ্রেমিকদের ঢল নামে। বিক্রিও হয়েছে ভালো।

শুক্রবার বেলা ১১টায় শুরু হয় মেলা। শিশু প্রহর ছিল দুই ঘণ্টা। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে মেলা। আগামীকালও মেলায় ভিড় থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুসান্না তালহা পেশায় ব্যাংকার। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা হয় তার সঙ্গে। ঢাকাটাইমসকে বলেন, পরিবারসহ মেলায় এলাম। বছরে এই মাসের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। তিনি বলেন, আজ প্রায় ২০টি বই কিনেছি। সিসিমপুরের স্টল থেকেই বেশিরভাগ বই কেনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘হালুমের গ্রামে যাওয়া, টুনটুনি যখন বড় হবে, ঠাকুরমার ঝুঁলি, সিসিমপুরে দাদা ভাই আর আমি টুনটুনি, মিতু একদিন সিসিমপুরে।

নাসিমা জামান মেলায় এসেছেন উত্তরা থেকে। ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রতিবারই মেলা থেকে অনেক বই কিনি। আজ কিছু কিনেছি। বইয়ের তালিকা সংগ্রহ করে সামনে আরও কিনবো। মেলায় ২০ হাজার টাকার বই কিনবেন বলেন জানান নাসিমা জামান।

অমর একুশে বইমেলার দশম দিন ছিল শিশুপ্রহর। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই পরিবারের সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করে হাজারও শিশু। শিশুদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বইমেলা প্রাঙ্গণ। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে ছিল বইপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়। বিশেষ করে শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা একটা পর্যন্ত নেচে গেয়ে তার মুখর করে তোলেন মেলা প্রাঙ্গণ।

বইমেলায় ঘুরে দেখা গেছে, শিশুরা বাবা-মায়ের হাত ধরে বইমেলা ঘুরছেন আর বই কিনছেন। কেউ পায়ে হেঁটে আবার কেউ বাবার কাঁধে চড়ে মেলা ঘুরছেন। সকাল নয়টার আগেই মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হয় শিশুদের মিলনমেলায়।

মেলায় ঢুকে অনেক শিশু ফেটে পড়ে বাঁধাভাঙা উচ্ছ্বাসে। বিশেষ করে বটতলার সিসিমপুর স্টলে শিশুদের ভিড় ছিল দেখার মতো।

বাবা-মায়ের সঙ্গে গোপীবাগ থেকে মেলায় ঘুরতে এসেছে আট বছর বয়সী শিশু সুমাইয়া শারমিন। মেলা কেমন লাগছে জিজ্ঞাসা করলে ছোট্ট শিশুটি জানায়, ‘মেলায় এসে অনেক ভালো লাগছে। আমি অনেক বই কিনব।’ পাশেই মাথায় বইমেলার ব্যান্ড পরিয়ে দাঁড়িয়েছিল তার বন্ধু আসিফ। মেলায় এসে কেমন লাগছে বলতেই শিশুটি জানায়, অনেক ভালো লাগছে। অনেক মজার মজার বই কিনবো।

মিরপুর থেকে পরিবারসহ মেলায় এসেছেন জাহিদুর রহমান। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের জন্য সিসিমপুর স্টল থেকে ১০ থেকে ১২টি বই কিনেছি। এছাড়া বইমেলার সব প্রকাশনীর বুকলিস্ট সংগ্রহ করেছি। এসব বই পরে কিনে নিয়ে যাব।’তিনি বলেন, সন্তানদের লেখাপড়ায় যেন আগ্রহ জন্মায় সেজন্য প্রত্যেক অভিভাবকের তাদের সন্তানদের মেলায় আনা উচিত।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেপ্রাঙ্গণে এসেছেন শিক্ষার্থী রেহমান সাবিত। তিনি জানালেন, এটা ভাষার মাস । সময় নিয়ে মেলা ঘুরে দেখবো এবং পছন্দের অনেক বই কিনবো।

নতুন বই

অমর একুশে গ্রন্থমেলার দশম দিন নতুন বই এসেছে ৩১৩টি এবং ৪৩টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এর মধ্যে গল্পের বই ৪১টি, উপন্যাস ৬৪টি, প্রবন্ধ আটটি, কবিতার বই ১০৯টি, গবেষণা পাঁচটি, ছড়ার বই ৯ টি, শিশুসাহিত্য ছয়টি, জীবনী ছয়টি, মুক্তিযুদ্ধের বই ছয়টি, নাটক দুটি, বিজ্ঞান বিষয়ক তিনটি, ভ্রমণ বিষয়ক তিনটি, ইতিহাস বিষয়ক বই তিনটি, রাজনীতি বিষয়ক দুটি, ধর্মীয় একটি, সায়েন্স ফিকশনের বই সাতটি, অন্যান্য ৩৮ টি।

আগামীকালের কর্মসূচি

আগামীকাল শনিবার মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। আগামীকালও মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর।

অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে শিশুকিশোর সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম, অধ্যাপক আন্জুমান আরা এবং মোবারক হোসেন।

বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আবদুল গফুর হালী: জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নাসির উদ্দিন হায়দার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন রাহমান নাসির উদ্দিন এবং সাইমন জাকারিয়া। সভাপতিত্ব করবেন শামসুল হোসাইন। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

(ঢাকাটাইমস/১০ফেব্রুয়ারি/জেআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :