বইমেলায় ছোটদের জন্য বড় আয়োজন (ভিডিওসহ)

তানিয়া আক্তার, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:৫৭ | প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:২৯

‘আম পাতা জোড়া জোড়া/ মারব চাবুক চড়ব ঘোড়া’- ছোট্ট পিয়াস বাবার কাঁধে চড়ে ঘুরে ঘুরে ছড়া কাটছে। এখনো পড়তে শেখেনি। তাতে কি? বাবার সঙ্গে ছুটে এসেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। খুঁজছে ছবিওয়ালা বই। কিসের ছবি? প্রশ্ন করতেই ঝটপট জানায়, ‘রাক্ষস আর ডাইনোসরের ছবিওয়ালা বই চাই, বুঝেছো?’

শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বইমেলায় থাকে শিশুপ্রহর। এ দুটি দিন বইমেলার দুই প্রাঙ্গণেই শিশুদের বইয়ের স্টলগুলোতে ছোটদের ভিড় থাকে। অন্যান্য দিনেও সময় সুযোগ বুঝে সন্তানদের নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা।

বই নিয়ে উচ্ছ্বসিত শিশুদের সামলাতে দোকানিদের একটু ভিন্ন কৌশল নিতে হয়। তাই আদুরে গলায় কথা বলছিলেন অনেক বিক্রয়কর্মী। ‘কমিক আর কার্টুনের দিকেই আগ্রহ বেশি ছোটদের’- ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলছিলেন এক বিক্রেতা।

বাবার সঙ্গে দ্রুত ছুটছে হিরুপাক্ষ ঘোষ বর্ণ। বাঘ, ফল, মাছ, টম অ্যান্ড জেরি, বর্ণমালা, সংখ্যার বই কিনতে হবে। বইগুলো পড়বে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে।

গোয়েন্দা আর কমিকস বই কিনে আরিবার আনন্দের সীমা নেই। বিএএফ শাহীন স্কুলের শিক্ষার্থী সে। বলেছে, ‘রহস্য আমার ভীষণ পছন্দ। যেকোনো সমস্যার সমাধানও ঝট করে সমাধান করতে পারি।’

ইমদাদুল হক মিলনের পাঁচটি বই বের হয়েছে আদিগন্ত প্রকাশনী থেকে। শিশুরাজ্য থেকে আহসান হাবীবের কমিকসের বই বেরিয়েছে ‘ভয়ঙ্কর পোকা’। শুক্র ও শনিবার শিশু প্রহরে বই বিকিকিনির বাইরে নানা আয়োজন থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। রং-তুলির আচড়ে ক্যানভাসে মনের কথা ফুটিয়ে তোলার বর্ণিল এই আয়োজন রঙের উৎসবে রূপ নেয়।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসিমপুর!

এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসিমপুরের স্টলে গেলে মনে হবে সেখানে প্রতিদিনই যেন শিশুপ্রহর। এখানকার মঞ্চে উপস্থাপক নানা ভঙিমায় একের পর এক শিক্ষামূলক প্রশ্ন করতে থাকেন। উত্তর দিতে ছোট্টমণিরা একযোগে সাড়া দেয়। এখানে ছোটদের ভিড় লেগেই আছে। সিসিমপুরের জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র ইকরি, হালুম, টুকটুকিও সরাসরি চলে আসে মঞ্চে। এই সময়ে শিশুদের আনন্দ আর বাধ মানে না। ‘ইকরি! হালুম! টুকটুকি!’ শিশুদের এমন কলরবে সিসিমপুর প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে উঠে। কার্টুন চরিত্রগুলোও কম যায় না। তারা হেলেদুলে নেচে গেয়ে মাতিয়ে রাখে শিশুদের। বড়রাও আনন্দে যোগ দিয়েছেন। স্মার্টফোন আর ডিজিটাল ক্যামেরা উঁচিয়ে চলন্ত চিত্রধারণের চেষ্টা। ভিড়ের কারণে জায়গা না পাওয়ায় একটু দূর থেকে দেখেও আনন্দের কমতি নেই কারো কারো।

টিভিতে অনেক দেখেছি তাদের কিন্তু বাস্তবে কেমন দেখতে এসেছি। দেখতে পেয়ে খুব মজা পেয়েছি, বলেছে মিরপুর থেকে আসা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়–য়া নাবিল। শুধু একা মায়ের সঙ্গে আসায় একটু চিন্তিত মাইশা। মানুষের ভিড়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না সে। মায়ের আঁচল ধরে কেবল অনুযোগ করে যাচ্ছে। বলছে, ‘কিছুই দেখা যাচ্ছে না কিন্তু আম্মু তো কাঁধে নিতে পারবে না, তাই না? বাবা আসলে কাঁধে চড়ে দেখতে পারতাম।’

সিসিমপুর স্টলেও রূপকথা-উপকথার গল্প, কার্টুন, কমিক, ছড়া-কবিতা, রহস্য-রোমাঞ্চ, বিজ্ঞানের বইসহ হরেকরকম বইয়ের কাছে শিশুসহ অভিভাবকের আনাগোনা।

রোকসানা রুবাইয়াত একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, তার তৃতীয় শ্রেণি পড়–য়া মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। বললেন ‘ব্যস্ততার কারণে মেয়েকে সময় দেওয়া হয় না। তাই সে বেশির ভাগ সময়ই স্মার্টফোন আর টিভিতে বিনোদন খুঁজে। কিন্তু বই তো বিনোদন দেওয়ার পাশাপাশি মানসিক জগৎও তৈরি করে।

ছবি ও ভিডিও : শেখ সাইফ

ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/টিএ/টিএমএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :