রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে মালয়েশিয়ান জাহাজ

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:১২ | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৪

সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য ত্রাণ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে মালয়েশিয়ান জানাজ।। কক্সবাজার যেতে না পেরে সোমবার গভীর রাতে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে নোঙ্গর করে।

এর আগে গতকাল দুপুরের দিকে জাহাজটি কক্সবাজারের মহেশখালী চ্যানেলে পৌঁছে। কিন্তু ত্রাণগুলো খালাসে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় বিকালে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে রওনা দেয়। চট্টগ্রাম বন্দর ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানান।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য মালয়েশিয়া সরকারের পাঠানো ত্রাণবাহী জাহাজটি সিডিউল মোতাবেক কুতুবদিয়া বহি:সমুদ্রে নোঙ্গর করার কথা। কিন্তু যোগাযোগ সুবিধার্থে তা মহেশখালী চ্যানেলে সোমবার দুপুরে নোঙ্গর করে। সেখানেও অসুবিধার কারণে পণ্য খালাস সম্ভব হয়নি। ফলে বিকালেই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে রওনা দেয়। সেখান থেকেই ত্রাণসামগ্রী খালাস করা হবে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সরোয়ার জানান, জাহাজটি রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মিয়ানমারে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে প্রতিবাদের মুখে পড়ে জাহাজটি। এরপরও মিয়ানমারে ৫০০ টন ত্রাণ নামিয়ে দেয়। বাকি ২ হাজার ২০০ টন ত্রাণ বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য কক্সবাজারে নিয়ে আসে। তবে সেখানে পণ্য খালাস সম্ভব না হওয়ায় গভীর রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে চলে আসে। বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাহাজ থেকে ত্রাণসামগ্রী খালাস করে তা ট্রাকে করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য নেয়া হবে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইওএম) এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রোহিঙ্গাদের মধ্যে এসব ত্রাণ বিতরণ করবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমার মংডু সীমান্তে বিজিপির তিনটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে নয় পুলিশ মারা যায় এবং বেশ কিছু অস্ত্র লুট হয় বলে দাবি করে মিয়ানমার সরকার। এরপরই অপরাধীদের আশ্রয় দেয়া এবং হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাখাইন রাজ্যের বেশ কয়েকটি গ্রামে সেদেশের সেনা ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে অনেক রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যা করে। এছাড়া অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। পুড়িয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। নব্বই দশকের শুরু থেকে রেজিস্ট্রার ও আনরেজিস্ট্রার মিলে আরও পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

এদিকে, শুরু থেকে নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ করে আসছিল মালয়েশিয়া সরকার। এ ব্যাপারে একসঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে বিশ্ব মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বানও জানান মালয়েশিয়া রাষ্ট্রপ্রধান। মিয়ানমারে রাখাইন প্রদেশে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব আব্দুল রাজাক। যার প্রমাণ স্বরূপ ত্রাণবাহী এ জাহাজটি পাঠানো বলে মন্তব্য কূটনৈতিক মহলের।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/আইকে/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা