ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন ময়মনসিংহের এসপি

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:২১ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৪২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার মৃত ওয়াজ উদ্দিনকে পলাতক দেখিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করায় ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ক্ষমা করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা না দেয়ায় পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) ১০ দিনের মধ্যে নিজ স্বাক্ষরিত ব্যাখ্যা আদালতে দাখিল করতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি শাহীনূর ইসলামের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল এই আদেশ দেন।

প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে এসপি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে লিখিত আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করে নুরুল ইসলামকে ক্ষমা করে দেন। তবে এ বিষয়ে আইজিপির কাছে যথাযথ ব্যাখ্যা তলব করেছে ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তার স্বাক্ষরিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দিতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিনের মাধ্যমে লিখিতভাবে এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম নিঃশর্ত ক্ষমা চান। শুনানিতে এসপি পক্ষের এই আইনজীবী আদালতকে বলেন, ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না। আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

গত ৩১ জানুয়ারি ময়মনসিংহের এসপিকে ১৬ ফেব্রুয়ারি হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শককেও ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

গত ১১ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের মৃত ওয়াজ উদ্দিনকে পলাতক ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনাল। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রসিকিউশনকে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গত ১০ জানুয়ারি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ‘মৃত ওয়াজ উদ্দিনকে পলাতক ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে’ শিরোনামে একটি  প্রতিবেদন প্রচার করা হলে বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের নজরে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালে ওয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সাত মাস আগেই মারা গেছেন তিনি।

একাত্তরের হত্যা, গণহত্যা মামলার আসামি ওয়াজ উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের অক্টোবরে তদন্ত শুরু করে সংস্থা। শুরু থেকেই পলাতক দেখিয়ে তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়।

২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ওয়াজ উদ্দিনকে পলাতক ঘোষণা করে তারপক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া মৃত্যু সনদে দেখা যায়, প্রায় ৮ মাস আগে ২০১৬ সালের ৭ মে ওয়াজ উদ্দিন মারা গেছেন। তার মৃত্যুর ৯ দিন পর তাকে আদালতে হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির আদেশ আসে ট্রাইব্যুনাল থেকে। পরে তাকে হাজির করতে দুইটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এই মামলার অপর আসামি রিয়াজ উদ্দিন ফকির কারাগারে আছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/এমএবি/এমআর)