ভোলায় ১৪ লাখ টাকার জাটকা নিয়ে নানা নাটকীয়তা

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৬:০৮ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:৪১

ভোলা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভোলায় ১৪ লাখ টাকা মূল্যের এক ট্রাক অবৈধ জাটকা পুলিশ থানা পর্যন্ত এনে ছেড়ে দিলেও অবশেষে কোস্টগার্ড সদস্যরা তা জব্দ করেছেন। এ সময় ওই ট্রাক থেকে ১৩ জনকে আটক করা হয়। এরপরও জব্দকৃত মাছ ছাড়িয়ে নিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে নানা নাটকীয়তা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃধা মো. মোজাহিদুল ইসলাম আটককৃত ১৩ জনকে জরিমানা করে ট্রাকটি জব্দ করেন।

অভিযোগ উঠেছে, অবৈধ এই মাছের চালান পুলিশ আটক করলেও ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রভাবশালী মাছের মালিকরা এটি ছাড়িয়ে নেয়। কিন্তু কোস্টগার্ডের তৎপরতায় তা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আটককৃত ব্যবসায়ীরা জানায়, দৌলতখান উপজেলার মাছ ঘাট থেকে প্রায় একশ মন জাটকা মাছ একটি ট্রাক বোঝাই করে যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে পুলিশ ট্রাকটি আটক করে। এরপর ট্রাকসহ মাছগুলো ভোলা থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর ওই মাছের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই কিছুক্ষণের মধ্যে অজ্ঞাত কারণে পুলিশ ট্রাকটি ছেড়ে দেয়।

এদিকে কোস্টগার্ডের লে. বিএন আহম্মেদ রেদোয়ান হোসেন জানান, সন্ধ্যার পর তারা খবর পেয়ে আবার ওই ট্রাকটি ভেদুরিয়া ঘাট থেকে আটক করে কোস্টগার্ড। এক পর্যায়ে তারা ট্রাকটি কোস্টগার্ড কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা এই মাছ জাটকা না বড় তা নিয়ে চলে স্কেল দিয়ে মাপামাপি। ওই সময়ও মাছগুলো ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য চলে ব্যাপক দেনÑদরবার। কিন্তু কোস্টগার্ডের শক্ত অবস্থার কারণে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত  বিপুল পরিমাণ ওই মাছ জাটকা বলে নিশ্চিত করে ভোলা সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।

ওই মাছের মালিক দৌলতখানের প্রভাশালী মাছ ব্যবসায়ী। তবে তাদেরকে ধরা না গেলেও মাছের সাথে পরিবহন কাজে নিয়োজিত ১৩ জনকেই আটক করা হয়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ প্রথমে জাটকা মাছ আটক করলেও মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে থানায় নিয়েও মাছগুলো ছেড়ে দিয়েছিল।

ভোলা থানার ওসি তদন্ত শহিদুল ইসলাম জানান, ট্রাফিক বিভাগের পুলিশরা মাছ আটক করে। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ট্রাকটি আটক করেছিল। তাই ট্রাকের জরিমানা করে তারা ছেড়ে দেয়। কিন্তু মাছের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ওই সময় তিনি থানায় ছিলেন না।

অপরদিকে আটককৃত ট্রাকচালক বাবুল জানান, পুলিশ কেন ওই মাছসহ ট্রাকটি থানায় নিয়েছিল এবং কেনই বা ছেড়ে দিয়েছে এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। তবে তার ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ ট্রাকের সব কাগজপত্র রয়েছে। পুলিশ এসব কিছুই দেখতে চায়নি। তাকে কোনো জরিমানাও করেননি।

রাত ১১ টার দিকে ট্রাকটি মাছসহ প্রথমে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আনা হয়। পরে সেখান থেকে ভোলা সদর উপজেলা কার্যালয়ে নেয়া হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃধা মো. মোজাহিদুল ইসলাম আটককৃত প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অবৈধ মাছ পরিবহনের দায়ে ট্রাকটি জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত মাছ স্থানীয় এতিমখানা ও গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেবি)