ধর্মীয় মাহফিলের সামাজিক প্রভাব

ফাইল ছবি

গ্রাম-গঞ্জে এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়াজ মাহফিল। প্রত্যেক এলাকায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে মাহফিল হচ্ছে। এই মাহফিলগুলোর প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। এর প্রধানত দুই ধরনের প্রভাব চোখে পড়ার মতো সামাজিক ও ধর্মীয়। মাহফিলগুলোকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে যে আবহ ও আবেদন তৈরি হয় তাতে সামাজিক অনাচার অনেকটাই রোধ করা যায়। পতনোম্মুখ আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থায় মাঝে মাঝে ধর্মীয় ও নৈতিকতার কিছু কথা মানুষের কানে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা না থাকলে এ সমাজ আরও অনেক আগেই পতনের অতলে হারিয়ে যেত।

সমাজের যে সদস্যটি প্রতিটি মুহূর্ত অনৈতিক ভাবনা ও অবাঞ্ছিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তার কানে দীন-ধর্মের এ কথাগুলো কোনোভাবে ঢুকিয়ে দিলে তার অজান্তে হলেও মনের মধ্যে কিছুটা দাগ কাটবে। সে হয়তো রাতারাতি সঠিক পথের পথিক হয়ে যাবে না, কিন্তু তার ভেতরে ধর্ম ও নৈতিকতার যে আঁচড় লেগেছে তা কি মিটে যাবে না। কোনো মাহফিলের ছোট্ট একটি কথা কিংবা নসিহত হয়তো তার জীবনের মোড় পরিবর্তনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে।

ওয়াজ মাহফিলগুলোর ধর্মীয় প্রভাবটা অনেক ব্যাপক। এদেশের মানুষ ধর্মপ্রিয়, ধর্মানুরাগী, ধর্মভীরু এই যে অভিধাগুলো তাদের সঙ্গে লাগানো হয় এটা কি এমনিতেই হয়ে গেছে। এদেশে এমন অনেক আলেম-ওলি-দরবেশ গত হয়েছেন যারা গ্রামে-গ্রামে, শহরে-শহরে ঘুরে মানুষকে দীনের পথে, শরিয়তের পথে আনার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে গেছেন। মানুষের কানে কানে পৌঁছে দিয়েছেন ইসলামের অমীয় বার্তা।

দাওয়াতি এই মিশন নিয়ে ছুটে গেছেন বাংলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। বিভিন্ন মাহফিল, সমাবেশ ও সম্মেলনের মাধ্যমেই দাওয়াতি এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। আম জনতার কানে দীনের কথাগুলো যত বেশি পৌঁছে দেয়া যাবে ততই তারা দীনের প্রতি ঝুঁকবে এটাই স্বাভাবিক।

পৃথিবীর বাহ্যিক চিত্রটা যেমন আমূল পাল্টে গেছে তেমনি মানুষের ভেতরের ইখলাস ও লিল্লাহিয়াতেরও নিদারুণ ভাটা পড়েছে। তা সত্ত্বেও আমাদের মাহফিলগুলোর প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে এগুলো আরও প্রভাবময় ও সুফলদায়ক করার উদ্যোগ সবাইকে নিতে হবে। এসব মাহফিল যারা আয়োজন করেন তাদেরকে মানুষের হেদায়াতের দিকটি প্রাধান্য দিতে হবে। নিছক হাঁকডাক আর লৌকিকতা করে ভালো এই উদ্যোগকে নষ্ট হতে দেয়া সমীচীন নয়।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/জেবি)