নির্বাচকদের দিকে তাকিয়ে চারজন

ছবি: বাঁ থেকে নাসির, আল আমিন, নাফিস এবং এনামুল।

দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে। শেষ কবে লাল-সবুজের জার্সিটা গায়ে উঠলো সেটা হয়তো ভুলতেই বসেছেন তাঁরা। সতীর্থদের পারফর্ম দেখে মনটা ভীষণ আনচান করছে। কবে আবার ২২ গজে পায়ের ধুলো পড়বে। এমন প্রতীক্ষায় নাসির হোসেন, আল আমিন হোসেন, শাহরিয়ার নাফিস এবং এনামুল হক বিজয়।

ভারত সিরিজ শেষ, এবার মিশন শ্রীলঙ্কা। দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে আর দুটি টি-টোয়েন্টি খেলতে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়তে পারেন মুশফিকরা। তার আগে ২০ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা হবে লঙ্কান সফরের জন্য টেস্ট দল। এই চার ক্রিকেটারের চোখ এখন সেদিকেই।

ভারত সফরের আগে জাতীয় দলের নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন বলেছিলেন হায়দরাবাদ টেস্টের জন্য ঘরোয়া লিগের পারফর্ম বিবেচনা করা হবে। ‘ভারত সফরের আগে বিসিএলের পারফর্ম পরখ করা হবে। তারা (নাসির-আল আমিনরা) যদি বুঝতে পারে তবে এ সুযোগ কাজে লাগাবে। তাছাড়া নিজেদের প্রমাণ করার এটা দারুণ সুযোগ।’

কিন্তু বাসারের সেই আশ্বাস ফাঁকা বুলির মতোই রয়ে গেলো। ঘরোয়া লিগে পারফর্ম করেও নির্বাচকদের নজর আসতে পারেননি অনেকেই। বিশেষ করে নাসিরের ব্যাপারটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। জাতীয় লিগে তিন ম্যাচের চার ইনিংসে ব্যাট হাতে ১০৯.৩৩ গড়ে ৩২৮ রান করেছেন নাসির। হাঁকিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক। আর বল হাতে দারুণ ফর্মে আল আমিন হোসেন। জাতীয় লিগে তিন ম্যাচের ছয় ইনিংসে বোলিং করে ঝুলিতে পুরেছেন ১৮টি উইকেট।

বিপিএলেও নাসির ছিলেন উজ্জ্বল। ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১০টি ইনিংসে ১৯৫ রানের পাশাপাশি শিকার করেছেন ৪টি উইকেট। আর ফিল্ডিংয়ে দেখিয়েছেন দারুণসব কারিশমা। তালুবন্দি করেছেন ৮টি ক্যাচও। ঢাকার হয়ে সেরা রান সংগ্রাহকের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে নাসিরের নাম।

দেশের জার্সিতেও নাসিরের ক্যারিয়ার খুব একটা খারাপ না। একদিনের ক্রিকেটে ৫৮ ম্যাচ থেকে ১২৬২ রান করেছেন নাসির। যেখানে তাঁর গড় ৩২ এর উপরে। রয়েছে ১টি শতক আর ৬টি অর্ধশতকের ইনিংস।

কেবল ব্যাটিংয়েই নয়, বল হাতেও অনেকখানি সফল নাসির। ৫৮ ম্যাচ খেলে ঝুলিতে পুরেছেন ২১টি উইকেট। যেখানে তাঁর বোলিং ইকোনমিক রেট ৪.৬১। টেস্টে ১৭ ম্যাচে ৯৭১ রানের পাশাপাশি ৮ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ৩১ ম্যাচ থেকে করেছেন ৩৭০ রান। রয়েছে ৭টি উইকেটও।

এদিকে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলেও নাফিসের হাতে উঠেনি পুরষ্কার। বিপিএল সিজন ফোরে ১৭টি ম্যাচ থেকে ৩৯৬ রান করেছেন নাফিস। রয়েছে তিনটি অর্ধশতকও। ব্যাটিং গড় ২৮.২৮। এছাড়া সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লিগে ৩ ম্যাচ খেলে ১৬৭ রান ঝুলিতে পুরেছেন নাফিস। রয়েছে ১০৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংসও।

খোঁজ নেই এনামুল হক বিজয়েরও। ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে আশানুরূপ পারফর্ম করেও নির্বাচকদের নজরে আসতে পারেননি বিজয়। বাংলাদেশ দলের দরজা তাঁর জন্য না খুললেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নিলামে ঠিকই নাম তুলেছেন এনামুল। তাঁর ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছে ৩০ লাখ রুপি। দেশের হয়ে ৩০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন এনামুল। ঝুলিতে রয়েছে ৯৫০ রান। সঙ্গে ৩টি শতক আর ৩টি অর্ধশতকের ইনিংস।

এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছেন, ‘শ্রীলঙ্কা সিরিজে স্কোয়াডে বড় কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে, যদি কারও ইনজুরি হয় সেক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে। সিরিজটি আমরা অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি। সেরা স্কোয়াড তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’

ঘরোয়া লিগে এমন পারফর্ম করেও এই চার ক্রিকেটার পাননি কোনো সুসংবাদ। তবে এবারও কি জাতীয় দলে জায়গা পাবেন না নাসির-আল আমিনরা।

(ঢাকাটাইমস/১৯ ফেব্রুয়ারি/মিশু)