চট্টগ্রাম মহিলা আ.লীগেও এবার বিদ্রোহের আগুন!

ব্যুরো চিফ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:১১ | প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৮:৩০

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার বিভক্তির প্রভাব এখন মহিলা আওয়ামী লীগেও। দুই নেতায় বিভক্ত হয়ে পরস্পরের প্রতি ক্ষোভের আগুন উগড়াচ্ছেন তারা। সম্প্রতি মহিলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে গঠিত কমিটির বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পাল্টা ঘোষিত কমিটির নেত্রীরা।

কাউন্সিলে ঘোষিত কমিটির লোকজন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী, যাদের কেন্দ্রে রয়েছেন মহিউদ্দিনের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মা।

আর পাল্টা কমিটির নেত্রীরা বর্তমান চসিক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষ নিয়ে ক্ষোভের অন্তর্জ্বালা উগড়াচ্ছেন। এই কমিটির পক্ষ মূলত মেয়রের শাশুড়ি রেখা আলম চৌধুরীকে ঘিরে। দুবাইয়ে অবস্থানরত মেয়রের দেশে ফেরার অপেক্ষায় এই পক্ষটি।

মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীরা জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নগর মহিলা আওয়ামী লীগ কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গত কমিটির সহসভাপতি নমিতা আইচ ও সাধারণ স¤পাদক তপতী সেনগুপ্তাসহ এই অংশের নেতাকর্মীদের সম্মেলনে ঢুকতে না দেয়ায় তারা সম্মেলনের বিরোধিতা করছেন।

এ ছাড়া সম্মেলনস্থলে প্রবেশে পুলিশ ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী কতিপয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সঙ্গে হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেন বিদ্রোহীরা। এ কমিটির সভাপতি হলেন নমিতা আইচ ও সাধারণ সম্পাদক চসিকের বর্তমান কাউন্সিলর আনজুমান আরা।

আবার এক দিনের মাথায় নির্বাচিত কমিটির সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আনজুমান আরা চৌধুরী আনজি গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। এতেও অনড় রয়েছেন পাল্টা কমিটির নেত্রীরা।

পাল্টা কমিটির নেত্রীরা জানান, সিটি মেয়র নাছির উদ্দিন দুবাই থেকে এলে কঠোর কর্মসূচি দেবেন তারা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত বলবেন বলেও জানান গত কমিটির সাধারণ স¤পাদক তপতী সেনগুপ্তা।

তপতী সেনগুপ্তা বলেন, ‘সিটি মেয়র দেশে ফিরলে আগামী সোম-মঙ্গলবার কর্মসূচি দেব। কমিটিতে হয় হাসিনা মহিউদ্দিন থাকবেন, নয়তো আমরা থাকব।’

মহিলা লীগের সম্মেলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগের উপস্থিতি ও ভূমিকার সমালোচনা করেন তপতী সেনগুপ্তা বলেন, সেখানে তারা মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘সম্মেলন যদি করতে হয়- পুলিশ দিয়ে করার কী দরকার ছিল? মহিলাদের সম্মেলনে ছাত্রলীগের কাজ কী? শত শত পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতা এনে মেয়েদের টানাহেঁচড়া করা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে মহিলা আওয়ামী লীগে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি (হাসিনা সহিউদ্দিন)। হঠাৎ করে ওনার শখ হলো নেতা হওয়ার।’

এ ব্যাপারে হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমরা সম্মেলন করেছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আমাদের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে।’

এ ব্যাপারে সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে গেছেন। উনি দেশে ফিরলে আমাদের ডাকবেন। আমরা দেখা করে বিস্তারিত বলব। প্রধানমন্ত্রী পত্রপত্রিকার মাধ্যমে ইতোমধ্যে সব জেনেছেন।’

তিনি বলেন, নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার প্রভাব বিস্তারের কারণে মহিলা আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এই প্রভাবের কারণে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সর্বক্ষেত্রে দ্বিধাবিভক্তি বিরাজ করছে।

চট্টগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলোও দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাগে বিভক্ত। ফলে চট্টগ্রামের ওয়ার্ড, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আধিপত্য নিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই আছে। ঘটছে খুনোখুনির ঘটনাও।

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা