৪৬ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি গাইবান্ধার আফছার

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:৫৮

স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হলেও এখনো মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি গাইবান্ধার আফছার আলী। জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়া গ্রামের আফিল উদ্দিনের ছেলেন তিনি। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দির কাছাকাছি এসেও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম ওঠেনি তার। ভাগ্যে জোটেনি কোনো ভাতা বা সুযোগ-সুবিধা।

আফছার আলীর ভাষ্যমতে, দেশ স্বাধীন করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন যুবক আফছার আলী। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কবির চৌধুরী (সাবেক পুলিশ অফিসার) এবং আরও ২৮ জনসহ আফছার আলী ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বালাসীঘাট দিয়ে নৌকা যোগে জিগাবাড়ির চরে পৌঁছান। সেখান থেকে পাথরের চর, তারপর ২৮ মার্চ ভারতের মেঘালয়ের আমপাতি শহরে সঙ্গীদের নিয়ে পৌঁছান আফছার।

ভারতের কাকরীপাড়া ক্যাম্পে প্রশিক্ষক সুবেদার আজিম উদ্দিনের অধীনে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর তিনি কোম্পানি কমান্ডার এম এন নবী লালুর অধীনে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

আফছার আলী রসুলপুরের স্লুইস গেট, দারিয়াপুরের ব্রিজ, গাইবান্ধার ওয়ারলেস ধ্বংস করাসহ বিভিন্ন অপারেশনে সহযোদ্ধাদের সাথে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

স্বল্প শিক্ষিত এই মুক্তিযোদ্ধা দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন জীবন বাজি রেখে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও তার ভাগ্যে জোটেনি কোনো স্বীকৃতি। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাওয়া তো দূরের কথা, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের কোনো অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ জানানো হয়না অকুতোভয় এই যোদ্ধা আফছার আলীকে।

বঞ্চিত এই মুক্তিযোদ্ধা বর্তমানে নানাবিধ অভাব-অনটনে জর্জরিত। তার এক ছেলে বর্তমানে মানসিক রোগে আক্রান্ত। কিন্তু অর্থাভাবে ছেলের চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তিনি। শেষ জীবনেও কি তার ভাগ্যে জুটবে না কোনো স্বীকৃতি? তিনি কি বঞ্চিতই থেকে যাবেন?

আফছার আলী বলেন, ‘জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েও আমি স্বীকৃতি পাইনি। অথচ আমার নাম ব্যবহার করে অন্য একজন এসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর বিচার চাই। এবং আমার নাম ব্যবহার করে যিনি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কি না তা তদন্ত করে দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবুল হক জুবেল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকেও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলব।’

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :