চিকিৎসককে আপা বলায় মারপিট, কানধরে উঠবস

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
| আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২১:২০ | প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২০:৩৯

এক শিক্ষানবিস নারী চিকিৎসককে ‘আপা’ বলার খেসারত দিতে হলো রোগীর স্বজনকে। এই ‘অপরাধে’ নারী চিকিৎসকের সহকর্মীরা তাকে বেধড়ক পেটান। এরপর উপস্থিত লোকদের সামনে কানধরে একশ বার উঠবসও করান। উপস্থিত জনতা এর প্রতিবাদ জানালে কর্মবিরতিও পালন করেছেন চিকিৎসকরা। আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির হুমকিও দিয়েছেন তারা।

রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ভুক্তভোগী আব্দুর রউফ সরকার ঢাকাটাইমসকে জানান, তার বাবা আলাউদ্দিন সরকার হৃদরোগে আক্রান্ত হলে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ৪৭৫ নম্বর কক্ষের মেঝেতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হৃদরোগের পাশাপাশি তার শ্বাসকষ্টও ছিল। এজন্য ফ্যানের বাতাসে তার কষ্ট হচ্ছিল। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুর রউফ ওই ফ্যানটি বন্ধ করতে যান। এ সময় ফ্যানের সুইচ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। এক পর্যায়ে শিক্ষানবিস ডা. নাজ এলে তাকে ‘আপা’ সম্বোধন করে ফ্যানের সুইচ কোথায় তা জানতে চান রউফ।

এ সময় ওই চিকিৎসক রেগে গিয়ে বলেন, ‘আমি কি আয়া নাকি?’ একটু পর আসেন তারই সহকর্মী নাজের উদ্দিন নামের আরেক ইন্টার্ন চিকিৎসক। তিনি আব্দুর রউফের জামার কলার চেপে ধরে কিল ঘুষি মেরে বলেন, তুই ডাক্তারের সাথে খারাপ ব্যবহার করছিস কেন? এরপর একটি রুমে নিয়ে গিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায়। এক পর্যায়ে কান ধরে একশ বার উঠবস করিয়ে তাকে আটকে রাখেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে আটকে রাখা আব্দুর রউফ সরকারকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করে।

পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে তালা দিয়ে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। এতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া রোগী ছাড়াও শিশুসহ অন্তত ৪০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে গেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. কুতুব উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে জানান, রোগীর সাথে আসা লোকজন চিকিৎসকদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। এজন্য আমরা দুপুরে জরুরি বিভাগ বন্ধসহ কর্মবিরতি করেছি। ডাক্তারদের নিরাপত্তাসহ সাত দফা দাবিতে সোমবার সকাল থেকে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবো।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মাসুদ আহসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা জরুরি সভা করেছি। জরুরি বিভাগ চালুসহ চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :