বর্ণ দিয়ে ছবি এঁকে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা শিক্ষকের
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিনটি ঘিরে ভাষাশহীদ ও ভাষাপ্রেমীদের প্রতি ব্যতিক্রমী ভালোবাসা দেখালেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। তিনি বাংলা ভাষার বর্ণ দিয়ে আঁকলেন বাংলা ভাষার জন্য আত্মদান করা শহীদ শফিউর রহমানের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দক্ষিণ পাথরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুর রহমান তার এই ব্যতিক্রমী প্রয়াসের বিষয়ে বলেন, ভাষাসৈনিক ও ভাষাপ্রেমীদের ত্যাগের প্রতি ভালোবাসা থেকে বর্ণ দিয়ে এঁকেছেন এসব ছবি। তিনি এঁকেছেন ভাষাশহীদদের ছবি। ভাষাসৈনিক শফিউরের প্রতিকৃতি ফুটে উঠেছে বর্ণের সমন্বয়ে।
ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানও কম ছিল না। তাই এই শিক্ষকের বর্ণমালায় চিত্রায়িত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এতে প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান স্মরণ রেখে বর্ণ দিয়ে তার ছবি আঁকলেন এই শিক্ষক।
ভাষাসৈনিকদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি ফিরে পেয়েছে তার মায়ের ভাষা। এই বাংলায় গীতাঞ্জলি লিখে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা ভাষায় হয়েছেন তিনি বিশ্বকবি। তাই বর্ণে বর্ণ ফুটে উঠেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছবিও ফুটে উঠেছে এই শিক্ষকের কলমের ছোঁয়ায়। নজরুলের বিদ্রোহের বাণী প্রেরণা জাগায় এ দেশের দামাল ছেলেদের মনে। তাই তাকে তুলে আনা হয়েছে বর্ণের মেলবন্ধনে।
১৯১১ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী, ১৯৪৩ সালে সৈয়দ সাজ্জাত হোসেন, ১৯৪৭ সালে গণ আজাদি লীগ ও ১৯৪৮ সালে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ যারা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার দাবি জানান, তাদের প্রতিকৃতি তৈরি করবেন তিনি।
প্রতিভাবান ও ভাষাপ্রেমী শিক্ষক আমিনুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, অবসর সময় তিনি ছবি আঁকেন। তার এই ছবি আঁকার ধারণা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা উপকরণ মেলায় বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শন করতে হয়। তখন আমার ভাবনা আসে ব্যতিক্রমী কিছু প্রদর্শন করতে হবে। এই ভাবনা থেকে বিভিন্ন ছবি আঁকতে শুরু করি। এরপর ভাবি, ভাষার জন্য এত ত্যাগ, সেই ভাষা দিয়ে কিছু প্রদর্শন করা যায় কি না।
তারপর তার ভাবনা এল, ভাষা প্রদর্শন হবে ভাষাসৈনিক বা ভাষাপ্রেমীকে নিয়ে। এ থেকে ভাষাপ্রেমীদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে আর তাদের স্মরণীয় রাখতেই তিনি বর্ণ দিয়ে তাদের প্রতিকৃতি আঁকতে শুরু করেন।
পাথরাইল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘অবসর পেলেই আমিনুর ছবি আঁকেন। টিফিন আওয়ারেও ছবি আঁকতে দেখা যায় তাকে। তবে পাঠদানে কোনো কমতি নেই তার।’ তাকে নিয়ে তিনি গর্বিত বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা।
(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/মোআ)