বাবাকে বাঁচাতে পারলেন না ডাক্তারদের মার খাওয়া রউফ

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
| আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:৪১ | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:৪৬

হৃদরোগে আক্রান্ত বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন আব্দুর রউফ। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে মার খেয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনায় বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করছেন। তবে যে রোগীর স্বজনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত সেই রোগীকে আর বাঁচানো গেল না। মঙ্গলবার ভোরে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

আলাউদ্দিন সরকার (৬০)। হৃদরোগে আক্রান্ত হলে ১৮ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বেড না পেয়ে ঠাঁই হয় মেডিসিন বিভাগের ৪৭৫ নম্বর কক্ষের মেঝেতে। হৃদরোগের পাশাপাশি আলাউদ্দিনের শ্বাসকষ্টও ছিল। মাথার উপরে ফ্যান চলায় কষ্ট বেশি অনুভূত হওয়ায় তার ছেলে আব্দুর রউফ ইন্টার্ন ডাক্তার নাজকে ‘আপা’ বলে সম্বোধন করে জানতে চান ফ্যানের সুইচ কোথায়। ডাক্তার নাজ এতে রেগে যান এবং বলেন আমাকে ‘আপা’ বললেন কেন, আমি কি আয়া? এনিয়ে একদুই কথা হতেই রুমে প্রবেশ করেন আরেক ইন্টার্ন ডাক্তার নাজের উদ্দিন। দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি দেখে নাজের সহকর্মীরা আব্দুর রউফকে কিলঘুসি মারতে থাকেন। এর পর পর্যায়ক্রমে কয়েক দফা মারের সাথে ১০০ বার কানধরে উঠবস করতে হয় রউফকে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়া দুই নারী স্বজনকেও লাঞ্ছিত করা হয়।

এই ঘটনার ভিডিও দৃশ্য স্যোসাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন তোলে। বিভিন্ন মহল থেকে ঘৃণা ও প্রতিবাদের মুখে পড়ে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় ইন্টার্ন ডাক্তারা উল্টো বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতিতে যান।

অপরদিকে রোগীর স্বজনকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের ইন্টার্নশিপ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সোমবার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিএমডিসি কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ দেন।

তবে মন্ত্রীর ওই নির্দেশনা রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে আসেনি। তবে তারা জানান, সংবাদপত্রের অনলাইন ভার্সনের মাধ্যমে বিষয়টি তারা জনতে পেরেছেন।

মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই শাহ আলম ঢাকাটাইমসকে জানান, ভোরে আলাউদ্দিন মারা যাওয়ার পর তার স্বজনরা লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গেছেন। তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কোনাগাতি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মাসুদ আহসান ঢাকাটাইমসকে জানান, আলাউদ্দিনকে সুস্থ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা তার চিকিৎসার জন্য একটি বোর্ডও গঠন করেছিলাম। আমি নিজে তদারকি করেছি। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ইন্টার্নশিপ বাতিলের আদেশ হাতে পাননি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :