‘একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করলে গণঅভ্যুত্থান হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:১৯ | প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৪:৩২

নতুন নির্বাচন কমিশন রকিবউদ্দিনের মতো নির্বাচন করে কি না বিএনপি তা দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘সরকার যদি আবারো একতরফা নির্বাচন করতে চায় তাহলে দেশে অবধারিতভাবে গণঅভ্যুত্থান হবে। এর ফলে দেশে কোনো নৈরাজ্যের সৃষ্টি হলে তার দায়ভার শেখ হাসিনাকে এককভাবে নিতে হবে।’

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘পিলখানা ট্রাজেডি-কেন এই সেনা হত্যা? কার স্বার্থে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন তিনি।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে একদল বিপদগামী বিডিআর সদস্যের হাতে নিহত হন ৫৭ জন সেনা সদস্য। প্রতিবছর এই দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সংগঠন ‘পিলখানা ট্রাজেডি’ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আজকের আলোচনা সভায় মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বিডিআর বিদ্রোহের যে ঘটনা ঘটেছে তা কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা সংগঠিত হয়েছে। অথচ ওইদিন সেনাবাহিনীর ট্যাংক আবাহনী মাঠে ছিল। নির্দেশ পেলে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে পিলখানায় প্রবেশ করলে এতা হতাহত হতো না। এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটতো না। কিন্তু সেই নির্দেশ দেয়া হয়নি। কারণ এটা ছিলো ষড়যন্ত্রের অংশ।’

প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেদিন কার স্বার্থে এসব সেনা সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। নিশ্চয়ই বাংলাদেশের স্বার্থে নয়। তখনকার সরকার নতজানু নীতি ও বিদেশিদের খুশি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও সেদিন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।’

গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগের বাক্সবন্দী এমন দাবি করে মোশাররফ বলেন, দেশে এখন অলিখিত বাকশাল চলছে। এ কারণে সরকার তাদের কোনো সমালোচনা সহ্য করতে পারে না।

নতুন নির্বাচন কমিশন সরকারের পছন্দের এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে খালেদা জিয়া প্রস্তাবের আলোকে রাষ্ট্রপতি সংলাপ করলেন। কিন্তু সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে তার কোনো ফলাফল আসেনি। কারণ যাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে সরকারি কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে জনতার মঞ্চের সংগঠক ছিলেন। তখন তিনি কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছিলেন। সেখানে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর ছবি কার্যালয় থেকে নামিয়ে ফেলেছিলেন। এখন তাকে করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার।’

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় এমনটা দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বর্তমান কমিশনকে কিছুদিন দেখতে চাই। সামনে কয়েকটি নির্বাচন আছে। তারা রকিবউদ্দিন কমিশনের মতো নির্বাচন করে কি না।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবেন। আবার বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে বিএনপির হাল কারা ধরবেন। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে নানা কৌশল করছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ আবারো ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এমন নির্বাচন দেশের মানুষ মানবে না। তারপরও যদি সরকার একদলীয়ভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসার চিন্তা করে তাহলে দেশে অবধারিতভাবে গণঅভ্যুত্থান হবে।’

বেগম জিয়ার মামলার বিষয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা কেউ বিএনপি চেয়ারপারসন দোষী এমন কথা বলেননি। এছাড়া মঈন-ফখরুদ্দিনের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন মামলা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো সব প্রত্যাহার হয়ে গেছে। অথচ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সেই মামলার বিচার চলছে। এটা সবৈব মিথ্যা। তাই এই মামলা টিকবে না, টিকতে পারে না। আর তাকে কারাগারেও যেতে হবে না।’

জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ঢাকা মহানগর নেতা আসাদুর রহমান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/বিইউ/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :