কৌশলের রাজনীতি ভালো না: নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৬:১২

সার্চ কমিটির সুপারিশের বাইরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, কৌশলের রাজনীতি ভালো নয়। জনগণ সুযোগ পেলে উচিত জবাব দেবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির এসব কথা বলেন তিনি। ‘নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, নাগরিক প্রত্যাশা ও আগামী সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সৌদি পূর্বাঞ্চল শাখা।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি দলের প্রতি ক্ষুব্ধ এবং অন্য একটি দলের প্রতি অনুগত। এ রকম একটি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিগত নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ পূর্ণ হয়। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দীর্ঘ এক মাসের সংলাপ শেষে একটি সার্চ কমিটি গঠন করে। সার্চ কমিটি দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ১০ জনের নাম সুপারিশ করে। সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর থেকেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জনতার মঞ্চের সংগঠক হিসেবে দাবি করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে এ বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না, আর আমি জনতার মঞ্চের সঙ্গে কখনো জড়িত ছিলাম না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি যে ১০ জনের নাম দিয়েছিল, তাদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সময় দরকার ছিল। কিন্তু এত অল্প সময়ের মধ্যে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড রিভিউ করে নিয়োগ দেয়া একটি অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আগে যদি স্থির করা না থাকত, তবে এই পাঁচজন নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জানার কথা না। এমনকি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যাদের নাম দিল সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশন করা হয় নাই। তরিকত ফেডারেশনের দেয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকেই নিয়োগ দেয়া হলো। এ বিষয়ে তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলে এটা নাকি আধ্যাত্মিকতা।’

সিইসি নুরুল হুদা বিতর্কিত ব্যক্তি উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নবনিযুক্ত সিইসি বিএনপির সরকারের আমলে জনতার মঞ্চের একজন সংগঠক ছিলেন। তিনি কুমিল্লায় তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি নামিয়ে ফেলেছিলেন। তার অপরাধের জন্য ২০০৬ সালে তাকে ওএসডি করা হয়েছিল, পরে ২০০৯ সালে তার চাকরি ফিরে পান। যে লোক যুগ্ম সচিব, সচিব পর‌্যায়ে কাজ করে নাই, তাকে কীভাবে সিইসি করা হয়। একজন দল মদদপুষ্ট লোক সিইসি করা হলে সেটা অস্বাভাবিক।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সার্চ কমিটির সবাই যাকে সুপারিশ করেছে তাকে সিইসি করা হয় নাই। কার স্বার্থে সার্চ কমিটির সুপারিশের বাইরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে?’ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কৌশলের রাজনীতি ভালো না। অপকৌশল দিয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না। জনগণ যদি সুযোগ পায় তবে উচিত জবাব দেবে।’

আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান বলেন, ৪৫ বছরে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন পেলাম না। এর জন্য এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে। দলদুষ্ট লোককে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত করা হয়েছে।’

স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রয়োজন উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে কাজ করছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তা জাতির সামনে তুলে ধরবেন। খালেদা জিয়ার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে এই সরকারের তখত-তাউশ পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সৌদি পূর্বঞ্চল বিএনপির সভাপতি আ ক ম রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ কাশেম, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুস সোবহান খান শিমুল প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/জিএম/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :