ভণ্ড খ্রিষ্টান হওয়ার চেয়ে নাস্তিক হওয়া ভালো: পোপ
ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা আর বাস্তবে তার চর্চার মধ্যে যে আকাশ-পাতাল ফারাকের দিকে ইঙ্গিত করে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, ভণ্ড খ্রিষ্টান হওয়ার চেয়ে নাস্তিক হওয়া বরং ভালো। বৃহস্পতিবার রোমের এক সম্মেলনে চার্চ আর খ্রিষ্টান ধর্মের যে বৈপরীত্ব তার কঠোর সমালোচনা করেন পোপ ফ্রান্সিস।
পোপ ফ্রান্সিস যে তার পূর্বসূরিদের মতন নাস্তিকদের প্রতি কট্টর মনোভাব পোষণ করেন না, সেটা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। তবে এবার এই সম্মেলনে তার বক্তৃতায় আলোড়ন উঠেছে সারা বিশ্বে। অবশ্য মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে পোপ নির্বাচিত হবার পর থেকেই বার বার আলোচনায় উঠে এসেছেন পোপ ফ্রান্সিস।
পোপের দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মধ্যেই তিনি বলেছিলেন, মানবজাতির সকলেই, এমনকি নাস্তিকরাও পরিত্রাণ পেতে পারে, যদি ঈশ্বর চান। আর একজন নাস্তিক যদি ভালো কাজ করে, খ্রিষ্টানদের উচিৎ তাকে ‘ভালো মানুষ’ হিসেবেই দেখা।
পোপ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি চার্চের উচিৎ হবে প্রত্যেক সমকামীর কাছে ক্ষমা চাওয়া, যাদেরকে অপমান করেছে চার্চ। চার্চের উচিৎ দরিদ্রদের কাছে ক্ষমা চাওয়া, প্রতিটি নারীর কাছে ক্ষমা চাওয়া, যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সেই সব শিশু শ্রমিকের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ যাদের শোষণ করা হয়েছে। চার্চকে ক্ষমা চাইতে হবে কারণ অগনিত অস্ত্রের উপরে এর আশির্বাদ রয়েছে।’
পোপের এ বক্তব্য গত বৃহস্পতিবার ভ্যাটিকান রেডিওতে সম্প্রচার করা হয়। ভণ্ড ক্যাথলিকদের প্রচন্ডভাবে কটাক্ষ করে সেখানে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘ক্যাথলিকদের মধ্যে যারা ভণ্ড, তাদের মানতে হবে যে তারা ভণ্ড। তাদের বলতে হবে- আমার জীবন খ্রিস্টানের নয়, আমি কর্মীদের ন্যায্য মজুরি দিই না, আমি মানুষের অবস্থার সুযোগ নেই, আমি অবৈধ ব্যবসা করি, আমি অর্থপাচার করি, আমি দ্বিচারী জীবনযাপন করি।’
২০১৩ সালে ভ্যাটিকানের দায়িত্ব নিয়ে পোপ ফ্রান্সিস একের পর এক সাড়া জাগানো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ব্যাক্তিগতভাবে তার বিশ্বাস আর মতবাদ অনেক বেশি মানবিক হওয়ায় নিজ ধর্মের বাইরেও আরো অনেক ধর্মের কাছে দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাসের সঙ্গে মানুষের ধর্ম চর্চার যে পার্থক্য তাকে কটাক্ষ করে বার বার কথা বলেছেন তিনি।
পোপ ফ্রান্সিস প্রায়ই তার ভক্তদের ধর্মের প্রকৃত শিক্ষার আলোকে জীবনযাপন কিভাবে করতে হবে সেই শিক্ষা দেন।
(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/কেএস/এসআই)