ঠাকুরগাঁও ইজতেমায় ২ লক্ষাধিক মানুষের জুমা আদায়

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:৫৮

ঠাকুরগাঁও টাঙ্গন নদীর তীরে শুরু হওয়া তাবলিগ জামাতের জেলা ইজতেমার ২য় দিনে প্রায় ২ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান জুমার নামাজ আদায় করেছেন। নির্ধারিত প্যান্ডেল ছাড়াও ডানে-বায়ে-পেছনে হাজার হাজার মানুষ কাতারবন্দী হয়ে নামাজ আদায় করেন।

নামাজের আগে ও নামাজ শেষে স্বেচ্ছাসেবকদের ভিড় সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয়।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন কৃষ্টপুর ইক্ষু খামার মাঠে চলছে তাবলিগ জামাতের জেলা ইজতেমা। এজন্য কৃষ্টপুর ইক্ষু খামার ময়দানে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। আয়োজকদের মতে এখানে প্রায় ৪০ হাজার লোক একসঙ্গে ঘুমাতে পারবে।

বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মুসল্লির সমাগম ঘটে। এছাড়াও ভারত থেকে ১০ সদস্যের একটি মুসল্লি দল যোগ দিয়েছেন ইজতেমায়।

বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর মাওলানা আব্দুল হামিদ মাসুমের আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় ইজতেমা।

শুক্রবার ইজতেমার ২য় দিনে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইজতেমায় লক্ষ মানুষের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য ইজতেমায় আসেন। জুমার আজানের পর ইজতেমার দিকে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। নামাজের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সাধারণ মানুষের সমাগম চলতে থাকে। নির্ধারিত প্যান্ডেল ছাড়াও হাজার হাজার মানুষ নিজেরা পাটি-মাদুর জায়নামাজ নিয়ে প্যান্ডেলের উত্তর পাশে ও চলাচলের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রখর রৌদ্রে অনেক মুসল্লিকে ছাতা নিয়ে কাতারে দাঁড়াতে দেখা যায়।

জেলা প্রশাসনের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতি শুক্রবার তো বড় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করি। কিন্তু কখনো কোন ইজতেমায় জুমার নামাজ আদায়ের সুযোগ এভাবে আসেনি। তাই মসজিদ ছেড়ে ইজতেমায় নামাজ পড়তে আসা।

বালিয়াডাঙ্গী থেকে এসেছিলেন মশিউর রহমান। তিনি জানান, টঙ্গীর তুরাগ তীরে যাওয়ার সৌভাগ্য কখনো হয়নি। তুরাগ তীরের ইজতেমা নিজ জেলায় আসায় লাখো মানুষের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায়ের সুযোগ ছাড়তে রাজি হইনি বলে ইজতেমায় আসা।

রুহিয়া থেকে এসেছিলেন ফল ব্যবসায়ী রঙিলা। তিনি জানান, প্রতিবছর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় যায় মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করতে। তদ্রুপ লাখো মানুষের সাথে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য বাড়ির পাশে ইজতেমায় এসেছি।

আকচা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রানা মেম্বার জানান, লাখো মানুষের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আখেরি মোনাজাতেও হাজির থাকব। নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লিদের ইজতেমা থেকে বের হতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগে।

বিশ্ব ইজতেমায় ক্রমাগত মুসল্লি বাড়তে থাকায় টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। এ জন্য গত বিশ্ব ইজতেমা থেকেই দুই ধাপে ৩২ জেলার মুসল্লিদের নিয়ে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। মুরব্বিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা (যেসব জেলার মুসল্লিরা গত বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দেননি) নিজ নিজ জেলায় অনুষ্ঠিত ইজতেমায় অংশ নেবেন। সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার থেকে ঠাকুরগাঁও জেলার ইজতেমা শুরু হয়েছে।

ইজতেমা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাথীরা পর্যায়ক্রমে ইজতেমা মাঠের কাজ সম্পন্ন করেছেন। ইজতেমা মাঠে বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া রাখা হয়েছে, মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য মাঠে কাজ করছে সার্বক্ষণিক একটি মেডিকেল টিম।

সদর থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, ইজতেমায় জুমার নামাজ আদায়ের জন্য আশেপাশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। এজন্য ইজতেমায় মুসল্লিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়। পোশাকধারীর পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সাদা পোশাকে একাধিক পুলিশ টিম। ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুলিশ সতর্ক দৃষ্টি রাখে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :