লিটন হত্যার সোর্স আ.লীগ নেতা চন্দন কলকাতায়

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৯:২৭ | প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:৪৭

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় কাদের খানের সোর্স হিসেবে কাজ করা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার এখন কলকাতায় অবস্থান করছেন।

গাইবান্ধার স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে চন্দনের যোগাযোগের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চন্দন গাইবান্ধায় এমপি লিটনের কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত। তাকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করেন লিটন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ জোগানদাতা কাদের খান। গাইবান্ধা-১ আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ লিটন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) রবিউল ইসলাম জানান, লিটন হত্যার সংবাদদাতা এবং কাদের খানের অন্যতম সোর্স হিসেবে চন্দন কুমার সরকারের সম্পৃক্ততার কথা অন্য চার খুনিও স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে। পুলিশ এখন চন্দনকে খুঁজছে।

এদিকে চন্দন সরকার এখন ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গাইবান্ধার কয়েকজন সাংবাদিককে কলকাতার একটি নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন তিনি।

ফোনে চন্দন দাবি করেন লিটন হত্যার সঙ্গে জড়িত নন তিনি। তাাকে এ ঘটনায় ফাঁসানো হচ্ছে।

কাদের খান ও খুনিদের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কথোপকথন রেকর্ড করা আছে জানালে নিশ্চুপ থাকেন চন্দন। তার পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বলেন, পুলিশ তার খোঁজ করছিল বলে তিনি ঝামেলা এড়াতে বাড়ি থেকে পালান।

জিরো থেকে হিরো চন্দন সরকার

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ গ্রামের সুশীল চন্দ্র সরকারের ছেলে চন্দন সরকার হঠাৎ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক পদ পেয়ে যান। এর জিরো থেকে হিরো হয়ে ওঠে তিনি। অথচ তার দরিদ্র বাবা কাঠুরে হিসেবে এখনো জীবিকা নির্বাহ করছেন।

জানা যায়, চন্দন ওই এলাকার কয়েকজন নামধারী সাংবাদিক ও সন্ত্রাসীকে নিয়ে একটি চাঁদাবাজ গ্রুপ তৈরি করেন। তার নেতৃত্বে এই গ্রুপের কাজ ছিল লোকজনের নামে নানা অভিযোগ করা এবং পরে টাকা নিয়ে তা মীমাংসা করা। কাদের খান যখন এমপি ছিলেন, তখন এমপির বিশেষ বরাদ্দের কয়েকটি প্রকল্পের বিরুদ্ধে চন্দন ও তার অনুসারীদের স্বাক্ষরে বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হলে কাদের খানের লোকজন তার নির্দেশে চন্দনকে ম্যানেজ করে নেয়। এভাবেই কাদের খানের সঙ্গে তার বিশেষ সখ্য গড়ে ওঠে।

পরবর্তী সময়ে এমপি লিটন সোচ্চার হন চন্দনের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এবং তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। এই ক্ষোভে চন্দন সরকার আওয়ামী লীগের সে সময়কার লিটনবিরোধী অংশের সঙ্গে সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে নানা অভিযোগ করতে থাকেন। এই সুযোগটা নেন কাদের খান। লিটনকে একেবারেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে কাদের খানের সঙ্গে সোর্স হিসেবে সম্পৃক্ত হন চন্দন।

তিনবার পরীক্ষা দিয়েও এইচএসসি পাস করতে না পারা চন্দন সরকার উচ্চাকাঙ্খার বশে নানাভাবে চাঁদাবাজি শুরু করেন। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নিজ বাসায় খুন হন এমপি লিটন। এ ঘটনায় কাদের খানসহ হত্যাকা-ে জড়িত পাছ৭জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কাদের খানকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত পিস্তলটি উদ্ধার করা হয় তার বাড়ির উঠানে একটি গাছের গোড়ার মাটি সরিয়ে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :