ধর্মঘটে থেমে গেছে উত্তরের জনপদ, ট্রেনে ভিড়

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
| আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২০:৩৫ | প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২০:৩২

মধ্যরাতে মাইকিং করে ঘোষণা করা হয় পরিবহন ধর্মঘটের। সাধারণ মানুষ গভীর ঘুমে। সকালে নির্ধারিত গন্তব্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বাস টার্মিনালগুলোতে গিয়ে জানতে পারেন ধর্মঘটের কথা। ফিরে আসতে হয়েছে হয়েছে শতশত মানুষকে। যাদের দূরে যাওয়া একান্তই প্রয়োজন তারা রীতিমত বিপাকে পড়েছেন।

উত্তর জনপদের প্রবেশদ্বার বগুড়ার ওপর দিয়ে চলে যাওয়া মহাসড়কে হাজার হাজার পরিবহন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। পরিবহন শ্রমিকরা লাঠি হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এসব গাড়ি থামিয়ে দিয়েছে। এতে গোটা উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে থমকে গেছে।

পরিবহন ধর্মঘটের ফলে এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সকাল থেকে এ অঞ্চল থেকে কোথাও দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি এবং কোথাও থেকে ছেড়ে আসেনি। যাতায়াত করেনি ট্রাক, মিনিট্রাক, অটোবাইক, সিএনজিসহ ছোট বড় কোনো ধরনের পরিবহন।

এদিকে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এবার পরিবহন ধর্মঘট আহবান করা হয়। ফলে রাজধানীরসহ দেশের সব জেলার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বাসচালক জামির হোসেনের মুক্তির দাবিতে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই ধর্মঘট আহবান করে উত্তরাঞ্চল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। ফলে মঙ্গলবার ভোর ছয়টা থেকেই সকল রুটে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ির চলাচল।

বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় শহরতলীর ঘোলাগাড়ি এলাকার আব্দুল মজিদের সঙ্গে। তিনি ঢাকাটাইমসকে জানান, বুধবার বিকেলে তার দেশের বাইরে যাওয়ার ফ্লাইট আছে। ঢাকা যেতে না পরলে ফ্লাইট বাতিল হবে। সারাদিন অপেক্ষা করেও তিনি ঢাকায় যাওয়ার কোনো বাস পাননি।

গাইবান্ধার বোনারপাড়া এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান জানান, ব্যবসায়ীক কাজে যশোর যেতে হবে। সকালে গোবিন্দগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে বাস না পেয়ে ফেরত এসেছি। লোকাল ট্রেনে বগুড়ায় এসেও কোনো বাস পাননি তিনি। শেষ ভরসা ট্রেনের জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন।

এদিকে উত্তরের রাস্তায় কোনো পরিবহন না পেয়ে হাজার হাজার যাত্রীকে রেল স্টেশনে ভিড় করতে দেখা গেছে। লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ওঠার মত কোনো অবস্থান ছিলো না। সমপরিমাণ ভিড় ছিলো সান্তাহার লালমনিরহাট গামী লোকাল ট্রেনগুলোতেও।

ভোগান্তির ব্যাপারে গাইবান্ধা সরকারি কলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদা বীথি ঢাকাটাইমসকে জানান, বিশেষ কাজে বগুড়ায় যেতে রেলস্টশনে এসে ভিড়ের কারণে গাড়িতে উঠতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তার গন্তব্যে পৌঁছা হয়নি।

অপরদিকে উত্তরাঞ্চলের সবচেয় বড় পাইকারী কাঁচা সবজির বাজারেও পড়েছে ধর্মঘটের প্রভাব। বগুড়ার মহাস্থানের দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে কাঁচা সবজি কিনে বিপাকে পড়েছেন। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে তারা তাদের কেনা সবজি মোকামে নিতে পারছেন না। এসব সবজি আর কয়েক ঘণ্টা এভাবে থাকলে পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হতে পারেন ব্যবসায়ীরা।

গোবিন্দগঞ্জরে আব্দুল গফুর মিয়া ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রতিদিন মহাস্থান বাজার থেকে কাঁচামাল নিয়ে পাইকারি বিক্রি করেন। মঙ্গলবার তিনি প্রায় চার লাখ টাকার কাচামাল কিনে রাস্তার পাশে ঢিপ করে রেখেছেন। রাতের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে না পারলে এসব সবজি পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বগুড়ার রাস্তায় কোনো ধরনের গাড়ি চলছিলো না।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :