পরিবহন ধর্মঘটে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ থেকে আটা, ময়দা, চাল, ডাল, লবন তেল চিনিসহ নিত্যপণ্য ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ধর্মঘট চলতে থাকলে মোকামে পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে না। আর এমনটি হলে দাম বুদ্ধি পাবে।
আটা ময়দার ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন জানান, নিতাইগঞ্জ থেকে দেশের এক তৃতীয়ংশ জেলার ভোগ্যপণ্য সরবরাহ করা হয়। গত দুই দিন ধরে পরিবহন বন্ধ থাকায় পণ্য সরবরাহ ৭০ শতাংশ কমে এসেছে। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের আটা ময়দার মিলগুলো আকারে অনেক ছোট। এসব মিলে পন্য গোডাউন জাত করে রাখা যায় না। পরিবহন বন্ধ থাকায় গোডাউনে বিপুল পরিমাণ পণ্য স্টক হয়ে আছে। নতুন করে কোন পণ্য মেশিনে ভাঙা যাচ্ছে না। আর মেশিন বন্ধ মানে শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন গুনতে হচ্ছে।’
মফিজ ফ্লাওয়ার মিলের ব্যবস্থাপক সন্তোষ সাহা জানান, ‘জাহাজে করে বিপুল পরিমাণ গম চট্টগামে থেকে এসেছে। কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় সেই পণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো যাচ্ছে না।’
পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় নিতাইগঞ্জের কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানান, ট্রাকে মালামাল উঠানো-নামানো আর কারখানায় কাজ করে আয় করেন তারা। কিন্তু এসব যেহেতু বন্ধ তাই আয়ও হচ্ছে না তাদের। এই ধর্মঘট চলতে থাকলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাদের।
বিপাকে পরিবহন মারিক-শ্রমিকরাও। ট্রাক মালিক আলী হোসেন জানান, গাড়ি বন্ধ থাকায় কিস্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। প্রতি মাসে ব্যাংকের ৭০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। এ মাসে কীভাবে এই কিস্তি দেবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।
সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জে ঢাকাট-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কোনো যানবাহন চলেনি। সকাল থেকেই ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে পরিবহন শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়। শ্রমিকরা সেখানে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
যানবাহন চলাচল না করায় হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। এ সময় কোনো প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করতে পারেনি। এদিকে নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে রাজধানী পর্যন্ত কোনো যান চলাচল করতে পারেনি।
ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি