মঠবাড়ীয়ায় বিদেশ পাঠানোর নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ

সৈয়দ মাহ্ফুজ রহমান, পিরোজপুর প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ০৩ মার্চ ২০১৭, ১৮:০৭

পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়ায় লোভনীয় বেতন-ভাতার স্বপ্ন দেখিয়ে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উপজেলার আলগী পাতাকাটা গ্রামের ফরিদ আকনের কাছে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। টাকা আদায়ের জন্য এখন স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ-বৈঠক চলছে।

ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার আলগী পাতাকাটা গ্রামের ফারুক আকনের ছেলে ফরিদ এলাকার ২০-২৫ জন বেকার যুবককে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে তাদের পাসপোর্ট জমা নেন। এরপর গত ২০১০ সালে পাসপোর্টধারীদের বিদেশে পাঠানোর কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে আড়াই লাখ থেকে ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত নেন। পরে ফরিদের দেয়া ভিসা ও টিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে গিয়ে তারা বুঝতে পারে এসব ভুয়া।

এ ঘটনার পর টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত চাইলে ফরিদ আকন দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা করে আসছেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তার এক স্বজন রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় আলগী বাজারের ফরিদ আকনের কাছে ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা দেয়া হবে না জানিয়ে উল্টো গালমন্দ করেন তিনি।

দীর্ঘ অপেক্ষায় অতিষ্ঠ পরিবারগুলো টাকা ফেরত পেতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হয়। এ নিয়ে স্থানীয় সহ¯্রাধিক এলাকাবাসী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি সালিশ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ফরিদ আকনের সম্পত্তি বিক্রি করে পাওনাদারের দেনা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ব্যাপারে এলাকার মো. ইউনুচ মিয়া, বাবুল আকন, ইউসুফসহ ভুক্তভোগী কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান, ফরিদ মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন টাকা ফেরত চাওয়ায় উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।

তবে ফরিদের প্রতারণার বিষয়টি অস্বীকার করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাচ্চু মিয়া আকন। ফরিদ আকনকে নিজের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তিনি শুক্রবার ঢাকাটাইমস্কে বলেন, ‘ফরিদ আগেও বিদেশে লোক পাঠিয়েছে। অনেকে গিয়েছেন। উপজেলার মিরুখালীর কামাল নামে তার (ফরিদ) এক মামাশ্বশুর মালয়েশিয়ায় থাকেন। মূলত তিনিই লোকজন নেন।’

কমান্ডার বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। আজকে (শুক্রবার) বসার কথা রয়েছে। ফরিদের দাদা (চাচাতো) রফিকুল ইসলাম স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ঢাকায়, তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে আসলে আমরা আবার বসব।’

বিদেশে যেতে পারেননি বর্তমানে এমন আট-নয়জন আছেন জানিয়ে বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বর্তমানে বিদেশ যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় তাদের যেতে বিলম্ব হচ্ছে। তার বিলম্বে গেলে যাবে, নয়তো তার জমি আছে, সেই জমি প্লট আকারে বিক্রি করে তাদের টাকা ফেরত দেয়া হবে।’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এমন সংবাদ প্রকাশে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বাচ্চু বলেন, ‘টাকা খাইয়ে কিংবা ভুল বুঝিয়ে এমন মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে কেউ (একজনের নাম উল্লেখ করেন)।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফরিদ আকনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মঠবাড়িয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩মার্চ/মোআ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :