ভাস্কর্য নিয়ে বিক্ষোভে নাশকতার মামলা তোলার দাবি হেফাজতের
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত ভাস্কর্যকে মূর্তি আখ্যা দিয়ে সেটি অপসারণের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ করেছে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামী। একই সমাবেশে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে তা-বের পরদিন নারায়ণগঞ্জে নাশকতার ঘটনায় করা সব মামলা তুলে নেয়ার দাবি জানান হেফাজত কর্মীরা। নইলে পরিণতি ভালো হবে না বলে সতর্ক করে দেন তারা।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বঙ্গবন্ধু সড়কের ডিআইটি রাস্তার উপর এ সমাবেশ করে। তাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে যে স্থাপনাটি বসানো হয়েছে সেটি মুসলমানদের ঈমান আক্বিদার পরিপন্থি। এটা সরকারকে অবশ্যই অপসারণ করতে হবে।
ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে করা কর্মসূচিতে হেফাজত নেতারা চার বছর আগে নারায়ণগঞ্জে নাশকতার ঘটনায় করা মামলাগুলো অবিলম্বে তুলে নেয়ার দাবি জানান।
২০১৩ সালের ৫ মে রাতে ১৩ দফা দাবিতে শাপলা চত্বরে অভিযান চালিয়ে হেফাজত নেতা-কর্মীদেরকে উচ্ছেদ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই অভিযানে ব্যাপক প্রাণহানির অভিযোগ তুলে পরদিন নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ এবং কাঁচপুরে তা-ব চালায় হেফাজত কর্মীরা।
সেদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পুলিশসহ ছয় জনের মৃত্যুও হয়। হামলা হয় সরকারি সম্পত্তি ও বেসামরিক স্থাপনায়।
এসব ঘটনায় হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মোট ১৭টি মামলা হয়। একটি মামলায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ৭৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তবে মামলাগুলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।
শুক্রবারের বিক্ষোভে এসব মামলা এবং এর আগে-পরে নাশকতার অভিযোগে করা সব মামলা তুলে নেয়ার দাবি জানান হেফাজত নেতারা। মহানগর হেফাজতের নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো আন্দোলন সংগ্রামে নামলেই আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। এই সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে দিতে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
‘মামলা-হামলা দিয়ে হেফাজতে ইসলামকে দাবিয়ে রাখা যাবে না’ মন্তব্য করে হেফাজতের এই নেতা বলেন, ‘আমরা সত্য ও ন্যয়ের পক্ষে প্রতিবাদ চালিয়ে যাবো।’
হেফাজতের নারায়ণগঞ্জ শাখার আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত ভাস্কর্য ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সব ভাস্কর্যেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার মক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে দেশে একের পর এক মূর্তি স্থাপন করে চলছে। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক মুর্তি স্থাপন করেছে। এই মূর্তি অপসারণ করে সেখানে কোরআন শরিফের রেহাল খচিত ভাস্কর্য স্থাপন করতে হবে। নইলে তৌহিদি জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে তা বাস্তবায়ন করবে।
ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি