কুমিল্লায় ভিসি অবরুদ্ধ, পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক আন্দোলন

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০১৭, ২১:১৭ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭, ২১:২৬

কুবি প্রতিনিধি
ঢাকাটাইমস

অবশেষে নিজ বাসভবনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরুদ্ধ হলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশরাফ আলী। শিক্ষক সমিতির ব্যানারে সাধারণ শিক্ষকরা প্রশাসন পরিচালনায় 'ব্যর্থ' উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শুক্রবার দুপুর থেকে তার বাসায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। 

শিক্ষক ডরমেটরিতে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা প্রদান, প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ ব্যতিত সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করাসহ ৪ দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালানোর পর শুক্রবার উপাচার্যকে বাসায় অবরুদ্ধ করলেন শিক্ষকরা।  উপাচার্য আশরাফ আলী বলেছেন, তিনি আন্দোলনরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবেন। 
শিক্ষকসমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলতেই থাকবে। 

গত মঙ্গলবার উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বুধবার অফিস করতে আসলে শিক্ষকদের বাধার মুখে বাসায় ফিরে যান উপাচার্য। ঐদিন থেকে উপাচার্য কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে রাখে শিক্ষকসমিতি। 

এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে নিজ বাসভবনে  সিন্ডিকেট আয়োজন করেন উপাচার্য আশরাফ আলী। সিন্ডিকেট সভায় অংশগ্রহণ করতে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।  

বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সদস্যদের ই-মেইলে বার্তা প্রেরনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট সভায় অংশগ্রহণ না করার জন্য সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানায় শিক্ষক সমিতি। এর আগে শিক্ষক সমিতি বিভিন্ন দাবি নিয়ে ১২ কার্যদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছিল।

চলমান আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম সিন্ডিকেট সভা পণ্ড করতে শিক্ষকরা সকাল থেকেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। তারা উপাচার্যের বাসভবন চত্বরের ভেতরে ঢুকে মুল ফটকে সকাল নয়টার দিকে তালা মেরে দেন। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়  মঞ্জুরি কমিশন এর চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর আবদুল মান্নানসহ অন্যান্য সদস্যরা।

ফটকের সামনে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সহায়তায় ফটক খুলে সিন্ডিকেট সদস্যদের ভিতরে প্রবেশের ব্যবস্থা করে। এসময় শিক্ষক নেতারা মঞ্জুরি কমিশন চেয়ারম্যানকে সভায় অংশগ্রহণ না করতে অনুরোধ জানায়। এ নিয়ে শিক্ষক নেতাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন অধ্যাপক মান্নান । একপর্যায়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন এবং প্রয়োজনে বঙ্গভবনে গিয়ে আন্দোলন করার পরামর্শ দেন।

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এর চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় এ কর্মরত সাংবাদিকদের  সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভায় বাধা দেওয়ার ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। শিক্ষকরা নিজেদের দাবী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া কোনভাবে কাম্য নয়। খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত দল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে।’

ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/প্রতিনিধি/এসএএফ