রাতের আঁধারে বেদখল পাবনা মানসিক হাসপাতালের জায়গা

পাবনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ মার্চ ২০১৭, ১৬:৩৪

দেশের একমাত্র বিশেষায়িত পাবনা মানসিক হাসপাতালের জায়গা দখল করে নিয়েছে একটি চক্র। শনিবার গভীর রাতে দখল নেয়ার এই ঘটনা ঘটে। প্রায় ৫৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের জায়গা অবৈধভাবে দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আশ্রম কর্তৃপক্ষদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শ্রী শ্রী অনূকূল চন্দ্র ঠাকুরের জন্মস্থান দাবি করে ঠাকুর ভক্তরা জোর করে জায়গাটি দখলে নেয় বলে অভিযোগ ওঠেছে।

পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ডা. তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী শ্রী শ্রী ঠাকুর অনূকূল চন্দ্র সেবাশ্রমের সৎসঙ্গ কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের অভ্যন্তরের ১৫ শতাংশ জায়গা ঠাকুরের জন্মস্থানের কথা বলে দখল নেয়ার জন্যে চেষ্টা করে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার রাত দেড়টার দিকে কয়েকশ লোক নিয়ে তারা হাসপাতালের ভেতরে ঢোকে। পরে তারা লাঠি, বাঁশ ও ইটের স্থায়ী স্থাপনা তৈরির চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদের বাধা দেয় এবং তারা পিছু হটে। তবে রবিবার অনূকূল ঠাকুরের ১২৯তম আবির্ভাব দিবসকে কেন্দ্র করে ওই সেবা আশ্রমে জমা হওয়া হাজার হাজার লোকজনকে নিয়ে তারা এই জায়গা দখলে নেয়।

পরিচালক বলেন, আইনানুযায়ী আশ্রম কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের জায়গাটি পেলে ফিরিয়ে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে চর দখলের মতো জায়গা দখল করাটা মোটেও আইনসিদ্ধ নয়।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান সহকারী অংশু পতি বিশ্বাস বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে লোকজন নিয়ে জায়গাটি দখল নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অনৈতিক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কোনো অনুমতিপত্র পায়নি। তারা কেন কিভাবে জায়গাটি দখলে নিলো আমাদের বোধগম্য নয়। এই জায়গা নিয়ে মামলার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’

এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক লোকজন অভিযোগ করে বলেন, সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে আশ্রমের লোকজন এই জায়গাটি দখল করেছে। বিষয়টি মোটেও আইনসিদ্ধ নয়।

ওই এলাকার বাসিন্দা মাহবুব আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার জন্মের পর থেকেই এই জায়গাটি জেনে আসছি হাসপাতালের, অথচ সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি যে আশ্রমের লোকজন দখল করে নিয়েছে। বিষয়টি শুনে আশ্চর্য হলেও কিছুই করার নেই। সব সম্ভাবনার এই দেশে সবই সম্ভব। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

শ্রী শ্রী ঠাকুর অনূকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের সভাপতি শ্রী বিমল রায় চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই জায়গাটি নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলছিল। মামলার রায় পাওয়ার পর জায়গাটি দখল নেয়া হয়েছে। এতে আমরা আনন্দিত, কেননা দীর্ঘদিনের পর সৎসঙ্গের লোকজনের দাবি পূরণ হয়েছে।’

এ বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি জানি না, খোঁজ নিয়ে তারপর বলতে পারবো।’

এ ব্যাপারে পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো’র মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রুহুল আমিন জানান, মামলা বা আদালতের রায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এভাবে সরকারি জায়গা দখলে নেয়ার অধিকার কারোর নেই।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :