বিজয়নগরে মাটির নিচে কয়লা, দিন ফিরছে এলাকাবাসীর

মোহাম্মদ আরজু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
 | প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০১৭, ০৯:৫১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ফসলি জমির মাটির নিচে পাওয়া যাচ্ছে কয়লা জাতীয় পদার্থ। স্থানীয়রা যাকে ‘ফেরা’ বলে ডাকে। আর এসব কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় বিক্রয় করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার লোকজন। তবে এই কয়লা উত্তোলন করতে গিয়ে সুনিতা দাস ও মনিতা দাস কয়লার চাপায় মারা গেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার সিংগারবিল ইউনিয়ন, পাহাড়পুর ইউনিয়ন, হরষপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামের ফসলি জমির মাটি নিচে পাওয়া যাচ্ছে কয়লা। আর এসব কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন।

সরজমিনে উপজেলার পাঁচগাঁও এলাকায় দেখা গেছে, লোকজন কয়লা উত্তোলন করে বিক্রয়ের জন্য শুকাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে কয়লা উত্তোলনকারী রহিমা জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কয়লা উত্তোলন করে আসছি। প্রথমে আমরা নিজেরা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলেও এখন আমরা কয়লা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। এতে এখন তার মত অনেক নারীই কয়লা উত্তোলন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কয়লাশ্রমিক নারগিস বলেন, আমাদের এলাকার প্রায় সব জমিতে কয়লা পাওয়া যায়।

রাজিয়া বলেন, আমরা প্রথমে একটা জমিতে গিয়ে কিছু জায়গা ৪-৫ হাত গর্ত করে দেখি কয়লা পাওয়া যায় কিনা। পাওয়া গেলে আমরা জমির মালিকের সাথে কথা বলে অর্ধেক ভাগে কয়লা উত্তোলন করি। পরে আমরা কয়লা উত্তোলন করে রোদে শুকিয়ে বস্তায় করে ৮০-১০০ টাকা করে বিক্রি করি। প্রথমে আমাদের এলাকার লোকজন কয়লা কিনলেও এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন কয়লা ক্রয় করে এবং ইটের ভাটায় কয়লা ব্যবহার করে।

লাজিয়া বেগম বলেন, শুকনা মৌসুমে প্রথমে আমরা মাটি খুঁড়ি। তারপর কয়লা শুকাইয়া বস্তা ভরে বিক্রি করি- যা দিয়ে আমরা সংসার চালাই।

এব্যপারে স্থানীয় বাসিন্দা পাঁচগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এলাকার লোকজন জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করছে। প্রথমে এলাকার লোকজন জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার করলেও এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন এ এলাকা থেকে কয়লা ক্রয় করছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৫-৬ লাখ টাকার কয়লা বিক্রি করা যায়।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মস্কর আলি বলেন, আমরা কয়লা উত্তোলনের কথা শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পিট পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণ করে পরীক্ষার জন্য মাটি রিসার্জ সেন্টারে পাঠানোর সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার উন নেছা শিউলি বলেন, কোন স্থানে প্রকৃতিক সম্পদের খবর পেলে সরকারিভাবে জমিগুলো একোয়ার করা হয়। তবে বিজয়নগরের বিভিন্ন স্থানে মাটির নিচে কয়লা ও বালি পাওয়ার খবর পাওয়ার গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :