‘শিল্পকারখানা প্রসারের জন্য আলাদা আলাদা শিল্পপার্ক হব ‘

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৬ মার্চ ২০১৭, ২০:৫৫ | প্রকাশিত : ১৬ মার্চ ২০১৭, ২০:৫২

দেশের বিকাশমান শিল্পকারখানা প্রসারের জন্য আলাদা আলাদা শিল্পপার্ক গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

মন্ত্রী বলেন, দেশের ক্যামিকেল, প্লাস্টিক, মুদ্রন শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংসহ অগ্রসারমান শিল্পের বিকাশের জন্য আলাদা আলাদা শিল্পপার্ক নির্মাণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব কমিউনিটি সেন্টারের শীতলক্ষ্যা মিলনায়তনে বিকেএমইএ ও নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসময় মন্ত্রী যেখানে সেখানে শিল্পকারখানা স্থাপনের কুফল তুলে ধরে বলেন, বিচ্ছিনভাবে শিল্পকারখানা করা হলে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নানা সংযোগ পেতে ঝামেলা হয়, অনেক সময় বিশৃঙ্খলা ঘটে। নিরাপত্তার অভাব হয়, কিন্তু একীভূত থাকলে গ্যাস বিদ্যুৎসহ সকল প্রকার প্রয়োজন দ্রুত মেটানো যায়।

বিকেএমএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, হোসনে আরা বেগম বাবলী, নারায়ণগঞ্জ চেম্বারে সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, শ্রমিক নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ প্রমুখ।

মন্ত্রী বিকেএমইএ নেতাদের বিভিন্ন দাবি প্রসঙ্গে বলেন, আপনাদের দাবি জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট । বর্তমান সরকার শিল্পবান্ধব সরকার। ২০৪১ সালের মধ্যে আমার যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এসব দাবি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে পাট শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। পাট থেকে শাড়ি, স্যুট, টাই, ভ্যানিটিব্যাগসহ নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে। এই শিল্পের প্রসারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি বলেন, আদমজী জুট মিল পাট শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিলো। তাই আদমজী জুট মিলের জায়গা পাটের জন্যই প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করবেন।

বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান , নারায়ণগঞ্জ নিট শিল্পের সুতিকাগার। দেশের প্রায় ৪৫ শতাংশ নিট শিল্পপ্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। এ শিল্পে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ জড়িত। তার মধ্যে শুধু নারায়ণগঞ্জে ৮ লাখ শ্রমিক কাজ করে। তাই নারাণগগঞ্জকে শিল্পমন্ত্রণালয়েম মাধ্যমে শিল্প শহর ঘোষণা করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে নারায়ণগঞ্জ শহর একক ভূমিকা পালন করে আসছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দরিদ্রতা দূরিকরণ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, ভারী শিল্পের বিস্তার, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের কারণে নারায়ণগঞ্জের গুরুত্ব অপরিসিম।

২০১৫ -১৬ অর্থ বছরে নিট খাত থেকে ১৩ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। যা মোট পোশাক রপ্তানি খাত শিল্পের ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।

২০১৫-১৬ অর্থ বছরে জিডিপিতি নিট সেক্টরের অবদান ছিলো ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া ২০১৬ -১৭ অর্থ বছরে মোট রপ্তানি টার্গেট ধারা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সেলিম ওসমান বলেন, ফতুল্লা বিসিক শিল্পনগরী মূলত নিট শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত। এ নগরীতে সমস্যার অন্ত নেই। শিল্পাঅঞ্চলের অবকাঠামোগত ত্রুটি, বিশেষ করে রাস্তা ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল। তিনি এসব ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন, পুলিশ লাইন থেকে বক্স কালভার্টের মাধ্যমে বিসিকে সংযোগ সড়ক নির্মাণ, বিসিক শিল্পনগরীর চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণসহ জরুরি নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের জন্য মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।

তিনি বলেন, বিসিকে একটি ফায়ার স্টেশন নির্মাণ কাজ র্দীঘদিন ধরে ঝুলে আছে। জবাবে মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবসায়ী সমাজের সাথে একদিন বৈঠক করার জন্য মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।

তিনি বলেন, সেই বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের কোনো রাজনীতিবিদরা থাকবেন না। কারণ, স্পটে বসে কোনো মন্ত্রীর পক্ষে সব কিছু সমাধান করা সম্ভব নয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে যদি একান্তভাবে বৈঠক করা যায়, তবে যেসকল সমস্যা গুলো আছে , তা সমাধানের জন্য যে যে কর্মকর্তা ও প্রকল্পের পরিচলকের প্রয়োজন তাদের উপস্থিতিতে সে সব সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যাবে।

শামীম ওসমানের এসব প্রস্তাবের জবাবে মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে একদিন বৈঠক করে সব সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা চালাবেন।

(ঢাকাটাইমস/১৬মার্চ/প্রতিনিধি/ ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :