‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর সম্পদ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ মার্চ ২০১৭, ১৫:৫৩ | প্রকাশিত : ১৭ মার্চ ২০১৭, ১৫:২৯

বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নয়, তিনি সারা পৃথিবীর সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম ও সাপ্তাহিক ‘এই সময়’ সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।

শুক্রবার দুপুরে আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে একথা বলেন তিনি। প্রতিবছর ১৭ মার্চ দিনটি জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, ‘মার্চ মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি জন্মগ্রহণ না করতেন, তাহলে স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বাধীন দেশ কিছুই পেতাম না। এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করাও সম্ভব হতো না। আল্লাহ যেন তাকে তার উত্তম কাজের প্রতিদান দেন।’

নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করে দোলন বলেন, ‘আমি নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করি। কারণ বন্ধবন্ধু যেই প্রতিষ্ঠানে পড়েছেন আমিও সেই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র। পাঁচ বছর সেখানে পড়াশোনা করেছি। আপনারা অনেকেই জানেন বঙ্গবন্ধু উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ইসলামিয়া কলেজ থেকে। পরবর্তীতে যখন ভারত স্বাধীন হয় তখন স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ। পরে তিনি ভারতের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ইসলামিয়া কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মৌলানা আজাদ কলেজ। আমি ওই কলেজে পড়েছি। বঙ্গবন্ধু যে বেকার হোস্টেলে থাকতেন আমারও সেখানে থাকার সৌভাগ্য হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যেই ঘরটিতে থাকতেন সেটিকে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে কক্ষটিতে থাকতেন সেটিকে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশের কতিপয় ছাত্র ডেপুটি হাইকমিশনে দাবি জানিয়ে চিঠি দেয়। ওই উদ্যোক্তাদের মধ্যে আমিও সেদিন ছিলাম। পরে হাইকমিশন থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কক্ষটিকে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কথাগুলো ব্যক্তিগত মনে হলেও আসলে তা নয়। কারণ বঙ্গবন্ধু কারও ব্যক্তির সম্পদ নয়। সারা পৃথিবীর সম্পদ। বলা হয় তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমি তো বলবো তিনি হাজার বছর নয়, যতদিন এই পৃথিবী থাকবে তিনি শ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়ে থাকবেন।’

ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, ‘সেই মানুষটি যেই কলেজে দু-বছর পদচারণা করেছেন সেখানে পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তিনি যেই ডাইনিংয়ে খেতেন সেখানে ঘুরেঘুরে সব চেয়ারে আমি বসে খেয়েছি। মনে মনে ভেবেছি তিনি হয়তো এই চেয়ারে বসেছিলেন। শুধু তাকে অনুভব করার জন্য। এই রকম একটি মানুষ যেখানে কয়েক বছর থেকেছেন সেই বেকার হোস্টেলে সব রুম সিঙ্গেল।’

কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান দোলন বলেন, ‘আমি শুনেছি বঙ্গবন্ধু একা তার কক্ষে থাকতেন না। একাধিক ছাত্রদের নিয়ে থাকতেন। অন্যদের থাকার সুযোগ করে দিতেন। এটা শোনার পর আমি নিজেও কখনো একা আমার ঘরে থাকিনি। একাধিক ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মেধার ভিত্তিতে কক্ষ দেয়া হতো। যারা কক্ষ পায়নি তাদের থাকার সুযোগ করে দিয়েছি। এমনও হয়েছে আমি মেঝেতে ঘুমিয়ে অতিথি ছাত্রকে খাটে ঘুমোতে দিয়েছি। সব সময় মাথায় থাকতো আত্মত্যাগের কথা। যেটা বঙ্গবন্ধ’ আমাদের শিখিয়ে গিয়েছিলেন।’

এই সময় সম্পাদক বলেন, ‘যখন ঢাকা কলেজে পড়ি, তখন সবে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। আমরা যখন ভর্তি হই তখন এরশাদ ক্ষমতায়। রাজনৈতিক অবস্থা তুঙ্গে। আমার মন চায় মিছিলে যাই। কিন্তু বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে চোখে চোখে রাখা হয়। আমার ছোটো মামাকে পেছনে লাগিয়ে দেয়া হলো। আমি কী করি সেটা দেখার জন্য। মাঝে মাঝে রাতে হোস্টেলে গিয়ে খোঁজ নেন। আমাকে কয়েক দিন তিনি হোস্টেলে পাননি। কারণ আমি তখন চিকা লেখার কাছে ব্যস্ত। এইভাবে এইচএসসি পার করলাম। ছাত্রলীগের সাথে সেখানেও যুক্ত থাকলাম।’

দোলন বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পরিষদ নামে একটি সংগঠন আছে। যার সভাপতি দুর্গাদাস ভট্টাচার্য। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। কলকাতায় গিয়ে এই সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ শাখা করলাম। আমি তার প্রথম সভাপতি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বঙ্গবন্ধু খুব ভাবতেন। আপনার তার আত্মজীবনী পড়ে দেখবেন। উনি ছাত্রজীবনে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঠেকাতে কাজ করেছেন। তিনি সব সময় সকল ধর্মের সম্প্রীতির জন্য কাজ করতেন। সেই আদর্শই সারাজীবন লালন করেছেন। এই কথাগুলো এজন্য বলছি যে, এই মানুষটি যদি জন্ম না হতো তাহলে এই দেশ আমরা পেতাম না। আজকে তো প্রায় সোনার বাংলা হয়ে গেছে, যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন। এই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা, তার কন্যা। তিনি আমাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায়।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন তা শতভাগ সফল বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়তে তাঁর যে দৃঢ় নেতৃত্ব ও মনোবল শেখ হাসিনা দেখাচ্ছেন সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র হবে বাংলাদেশ।’

বেগম শাহানারা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা আরিফুর রহমান দোলন বলেন, দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকা দরকার। দেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে প্রয়োজন। তাই আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলতে হবে। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রক্ষমতায় রাখতে হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ মোরসেদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য শেখ শহীদুল ইসলাম, কলেজের সহযোগী অধ্যাপক প্রভাষ চন্দ্র কুণ্ডু, সহকারী অধ্যাপক দিলরুরা সরমিন প্রমুখ।

এর আগে কামারগ্রামের বেগম শাহানারা একাডেমিতে শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ছড়া ও গান প্রতিযোগিতায় বক্তব্য দেন ঢাকাটাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।

(ঢাকাটাইমস/১৭মার্চ/এইচএফ/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :