ইউএনও সাদমীনের তৎপরতায় তটস্থ অপকর্মকারীরা

প্রকাশ | ১৮ মার্চ ২০১৭, ০৯:২৫

জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

বাল্যবিবাহ, অবৈধ বালু উত্তোলন, খাদ্যে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি কিংবা মাদক ব্যবসা- যেখানেই এসব অপকর্মের খবর, সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন তিনি। এসব বন্ধে একের পর এক চালাচ্ছেন অভিযান। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীনের এমন তৎপরতায় এখন তটস্থ অপকর্মের হোতারা।

ইউএনও ইসরাত সাদমীন এখানে যোগদানের দুই মাসের মাথায় জনমনে স্বস্তি এনেছেন। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে উপজেলা প্রশাসনের প্রতিটি দপ্তরের কর্মতৎপরতাও বেড়েছে অনেক।

গত ৯ জানুয়ারি মির্জাপুরে যোগদান করেন ইসরাত সাদমীন। উপজেলা প্রশাসনের হিসাবমতে, গত দুই মাসে তিনি নিজে হাজির হয়ে তিনটি বাল্যবিবাহ বন্ধ, ১০টি স্থানে নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ, খাদ্যে ভেজাল দেয়ায় ছয় দোকানকে জরিমানা, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখায় তিনটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ওষুধ ধ্বংস ও জরিমানা আদায় করেছেন। এ ছাড়া মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে অন্তত ২৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন তিনি।

যোগদানের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন বৃদ্ধি, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধসহ বাল্যবিবাহের কুফল তুলে ধরে সচেতনতামূলক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। করছেন মা সমাবেশও।

এসব তৎপরতার ফলে অনিয়ম, দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা, মাটি ও বালু লুট, বাল্যবিবাহসহ নানা অনিয়মে জড়িত লোকজন হয়ে পড়েছেন আতঙ্কিত। শুক্র ও শনিবার বন্ধের দিনও ইউএনও  মির্জাপুরে অবস্থান করায় মাদক ব্যবসায়ী ও বালু লুটেরারা কোনো সুবিধা করতে পারছে না। অনিয়ম- দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইউএনওর এই শক্ত অবস্থানে খুবই খুশি সাধারণ মানুষ।

মির্জাপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. মিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ইউএনও অত্যন্ত দক্ষ ও কর্মঠ একজন মানুষ। তিনি অনেকটা ডাইনামিক কর্মকর্তা- গতানুগতিক কাজ ও দায়িত্বের বাইরে তিনি অনেক কিছু করছেন।’

অনেকে ইউএনও ইসরাতকে ‘লেডি ফাটাকেষ্ট’ ডাকে বলে জানান মির্জাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নিরঞ্জন পাল। তিনি বলেন, ‘ইউএনও ইসরাত সাদমীন যোগদানের এই অল্প সময়ে যেসব কাজ করছেন তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবি রাখে। তার এ কর্মকাণ্ডে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা ভীত হয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেকে ইউএনও ইসরাত সাদমীনকে লেডি ফাটাকেষ্টও বলেন।’ 

ইউএনও ইসরাত সাদমীন অবশ্য তার এসব কাজকে দেশেপ্রেমে উদ্বুদ্ধ একজন সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব হিসেবে দেখছেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘সরকারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে নয়, দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশ গঠনে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছি। তাছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে ছোটবেলা থেকেই হৃদয়ে দেশপ্রেম লালন করছি।’ দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তার লড়াই চলবে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/মোআ)