‘সুলতানি আমলের মসজিদ’ উদ্ধার, মানতে নারাজ হিন্দু মহাজোট

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের গড় ধর্মপাল এলাকায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উদ্ধার ‘সুলতানি আমলের (প্রায় ৮শ বছরের পুরানো) ৪২ গম্বুজ মসজিদের স্মৃতিচিহ্ন’ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সুলতানি আমলের এই মসজিদকে মানতে নারাজ জমির মালিকসহ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়। তাদের দাবি, এটি পাল বংশের কোন নিদর্শন।

এ নিয়ে শুক্রবার দুপুরে খনন এলাকায় সমাবেশ করেছে জলঢাকা উপজেলা হিন্দু জাতীয় মহাজোট।

জমির মালিক ও সতীশ চন্দ্র রায়ের বড় ছেলে প্রমথ চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ওই এলাকায় পূর্ণাঙ্গ খনন কাজ শেষ করে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক তথ্য উদঘাটন করতে হবে। গড় ধর্মপালে উদ্ধার বৌদ্ধ মন্দিরের ইট ও এখানকার ইট একই ধরনের। তাছাড়া এখান থেকে উদ্ধার শঙ্খ, প্রদীপ, পুতুলসহ বিভিন্ন নিদর্শন দেখে মনে হয়- এসব পাল আমলের।

বিগত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের নভেম্বর মাসে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি দল ধর্মপাল ইউনিয়নের গড় ধর্মপাল ও সতীশের ডাঙ্গায় খনন কাজ শুরু করে। ওই দলটি গড় ধর্মপাল এলাকায় পাল আমলের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ধান পায়। এছাড়াও সতীশের ডাঙ্গায় খনন কাজ শুরু করার পরপর বর্ষা মৌসুমের প্রবল বর্ষণের কারণে খনন বন্ধ করে দেয়া হয়।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও সতীশের ডাঙ্গায় খনন কাজ শুরু করলে ৩০টি পিলারসহ ছোট ছোট নিদর্শনের সন্ধান পায় খননকারী দল।

খনন কাজে নিয়োজিত পাহাড়পুর কাস্টোডিয়ান ছাদেকুজ্জামান জানান, আনুমানিক ১২শ খ্রীস্টাব্দের ২৪.৭৬ ও ২০.৫৭ মিটার পরিমাপের ৪২ গম্বুজবিশিষ্ট ৩০টি পিলার ও পশ্চিম দিকে মেহেরাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। যা দেখে মনে হয়, এটি সুলতানি আমলের একটি মসজিদের ভিত্তি। বাগেরহাটে ষাট গম্বুজ মসজিদ দেশের বড় প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন আর পরবর্তীতে যশোরে উদ্ধার বারোবাজার সাতগাছিয়া গায়েবানা মসজিদটি দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও সতীশের ডাঙ্গায় উদ্ধার ৪২ গম্বুজ মসজিদটি বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় স্থানে থাকবে। এতে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে আরও তদন্ত দল এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)