পলাশে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০১৭, ১৫:৪৩

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পলাশে ইন্টারনেট লাইন সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত উত্তম দাস (৩২) মারা গেছেন।  শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

একই ঘটনায় আহত ফাহিম মিয়া (২৮) আশঙ্কাজনক অবস্থায় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে পলাশ নতুন বাজার এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন সংযোগের কাজ করতে গিয়ে এক লাখ ৩২ হাজার ভোল্টের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তারা।

নিহত উত্তর দাস ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত দুলাল দাসের ছেলে। তিনি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মাস্টাররুলে চাকরির পাশাপাশি এলাকায় ডিশ লাইন ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের কাজ করতেন।

রবিবার দুপুরে নিহত উত্তম দাসের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছুলে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শোকে মাতম হয়ে পড়ে পুরো পরিবার।

ওই সময় উত্তম দাসের পিতা দুলাল দাস সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলের মৃত্যু একটি দুর্ঘটনা। কারো বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। তবে ভবিষ্যতে যেন আর কাউকে এভাবে ছেলে হারাতে না হয় সেদিকে কর্তৃপক্ষের নজর রাখা উচিত।

স্থানীয় লোকজন জানায়, ঘোড়াশাল পৌরসভার অনুমোদন না নিয়েই অপরিকল্পিতভাবে একের পর এক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের দুর্ঘটনা বাড়ছে।

স্থানীয় রুহুল আমিন ও মানিক মিয়া বলেন, এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে হলে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ লাইনের নিচে ভবন নির্মাণে সতর্ক হতে হবে।

এদিকে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, লিংক থ্রি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি বিটিআরসির অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ প্রদান করছে। আর সেই অবৈধ ইন্টারনেট সংযোগ দিতে গিয়েই অসাবধানতার কারণে এই দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে লিংক থ্রির স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত বিল্লাল হোসেন জানান, আমি কর্পোরেট সংযোগ নিয়ে তা থেকে পলাশ লিংক টেকনোলজি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছি।

প্রতিষ্ঠানটি বিটিআরসি অনুমোদিত কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, অনুমোদনের চেষ্টা চলছে। আপাতত রেডিয়ান কমিউনিকেশন থেকে সাপোর্ট নিয়ে গ্রাহকদের ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছি।

তবে রেডিয়েন কমিউনিকেশনের পলাশ জোনের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম মুন্না বলেন, তাদের সঙ্গে রেডিয়েনের কোন সম্পর্ক নেই। তারা লিংক থ্রি সংযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ইন্টারনেটের ব্যবসা করছে। আর এই দুর্ঘটনার যাবতীয় দায়ভারও তাদের।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় মামলা করতে পরিবারের জন্য অপেক্ষা করছি। পরিবার না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। একই সঙ্গে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় তাদেরকে তলব করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)