১০ টাকায় শিশুদের উন্নতমানের চক্ষুসেবা

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৭, ০৮:৩৯ | আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭, ১৬:৩৮

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।  এর চিকিৎসাসেবা বহির্বিশ্বের সাথে তুলনীয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশুদের চিকিৎসাসেবা নিতে এখানে পাঠান স্থানীয় বা জেলাভিত্তিক হাসপাতালের ডাক্তাররা। শিশুবিভাগের চিকিৎসা ও অভ্যন্তরীণ সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন হাসপাতালটির শিশুচক্ষু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শেখ সাইফ

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন দেশে উন্নত?

ডা. ফরহাদ হোসেন: জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালটি সরকারি সর্বোচ্চ টারসিয়ারি লেভেলের একটি প্রশিক্ষণ এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে ১৬ বছরের নিচের শিশুদের বহিঃবিভাগীয় ও আন্তঃবিভাগীয় এবং শল্য চিকিৎসা দেয়া হয়। এর পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডিও, এফসিপিএস, এমএস ডিগ্রির ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ এবং ব্যবহারিক শিক্ষাদান করা হয়। এই হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সাব স্পেশালিস্ট ফেলোশিপ দেয়া হয়।

এখানে কী ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়া যায়?

ডা. ফরহাদ হোসেন: এই হাসপাতালে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জটিল রোগীদের চিকিৎসাগত সবধরনের সুবিধা দেয়া হয়। এখানে এই বিভাগের প্রধান হিসেবে আছি আমি। এখানকার সহকারী অধ্যাপক যিনি তিনিও এফসিপিএস। এই বিভাগের ফেলোশিপ ডিগ্রিধারী একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট। এ ছাড়াও আছেন একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট। তিনিও এফসিপিএস ডিগ্রিধারী। দুইজন মেডিকেল অফিসার আছেন। তারা দু'জনেই সিনিয়র কনসালটেন্ট এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সুতরাং এখানকার সেবা উন্নতমানের। মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে একটি উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পেয়ে থাকেন রোগীরা।

শিশু সেবার পাশাপাশি বয়স্কদের সেবা সম্পর্কে জানতে চাই।

ডা. ফরহাদ হোসেন: বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ জনের মতো চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন। সপ্তাহে একদিন জটিল রোগীদের বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সপ্তাহে চার দিন বিশেষ প্রেসার বৃদ্ধিজনিত রোগীদের চোখের অপারেশন, টেরা চোখ, নেত্রনালীর অপারেশনসহ অনেক অপারেশন করা হয়।

বাচ্চা রোগীদের জন্য কী ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে?

ডা. ফরহাদ হোসেন: এখানে বাচ্চা রোগীদের জন্য মায়ের বুকের দুধ পান করানোর জন্য আলাদা রুম রয়েছে। পাশাপাশি বাচ্চাদের আনন্দময় পরিবেশ দেবার জন্য বিভিন্ন রঙের পশুপাখির চিত্র এঁকে দেয়াল সাজানো হয়েছে। রাখা হয়েছে শিশুদের খেলাধুলা করার সরঞ্জাদি। তবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, অটিজম ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা করা হয়।

এখানে চিকিৎসাজনিত টেকনোলোজিক্যাল সাপোর্টটা কেমন?

ডা. ফরহাদ হোসেন: দৃষ্টি পরীক্ষার জন্য আমাদের এখানে রয়েছে অভিজ্ঞ টেকনোলজিস্ট। চক্ষু চিকিৎসার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত হাসপাতাল এটি। চিকিৎসাসেবা দেবার আগে এবং চিকিৎসাসেবা পাবার পরে অভিজ্ঞ সেবিকা দ্বারা সার্বক্ষণিক পরিচর্যার মধ্যে থাকে। এক কথাই খুবই সন্তুষ্টির সাথে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি।

কিছু ক্ষেত্রে রোগীদের চিকিৎসাসেবা পেতে বিলম্বিত হচ্ছে। এদিকটা কীভাবে দেখছেন?

বহির্বিভাগে কিছুটা সমস্যা আছে। সেটি লোকবল সমস্যা। কয়েকজন ডা. বদলি হয়ে গেছেন। সে কারণে প্রতিদিন এতো রোগী দেখা সম্ভব হয় না। আমরা রোগীদের আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা সেবা দিই। তড়িঘড়ি করে তো আর রোগী দেখা উচিত নয়। ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জন্য যে পরিমাণ লোকবল প্রয়োজন সেটির তুলনায় অনেক কম আছে। এটি একটি চিহ্নিত সমস্যা। তবে এটা থেকে উত্তোরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিগগির এর সমাধান হয়ে যাবে।

হাসপাতালটি নিয়ে জনগণের জন্য কী বার্তা দিতে চান?

এখানে খুব ভালোমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। খুব অল্প টাকায় এতো ভালোমানের সেবা থেকে কেউ বঞ্চিত হোক সেটা কখনোই প্রত্যাশিত নয়। সবাই আসুক সেবা নিক। আমরা সেবার জন্য সার্বক্ষণিক আপনাদের পাশে আছি। চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ। এটা নিয়ে হেলাফেলা করা কখনোই উচিত নয়।  

ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/এসএস/জেবি