সীতাকুণ্ডের দুই জঙ্গি ‘শনাক্ত’, লাশ নেবে না পরিবার

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৭, ২০:০৪ | প্রকাশিত : ২০ মার্চ ২০১৭, ১৫:৫৬

সীতাকুণ্ডের সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহতদের মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করেছেন তাদের স্বজনরা। এদের নাম কামাল উদ্দিন ও জোবাইদা। তারা স্বামী স্ত্রী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। অপরজন তাদের শিশু সন্তান।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে মরদেহ দুটিকে শনাক্ত করে দুই পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কামালের বাবা মোজাফফর আহমদ ও জোবাইদার বাবা নুরুল আলম। তবে তারা কেউ মরদেহ নিতে রাজি হননি।

মোজাফফর আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, তার ছেলে যে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়েছে সেটা তার কল্পনাতেও ছিল না। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এলাকার মানুষের মুখেও এরপর শুনেছি। আজ এখানে এসে দেখলাম এ আমারই সন্তান। তার দিকে আমি ফিরেও চাইব না। আমি লাশ নেব না।’

জোবাইদার বাবা নুরুল আলমও বলেছেন, তিনি মরদেহ নেবেন না।

এর আগে রাজধানীর কল্যাণপুর আস্তানা, নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া, পুরান ঢাকার আজিমপুর, গাজীপুরের পাতাকটেক ও লেবুবাগান, টাঙ্গাইলের কাগমারী, আশুলিয়ার বসুন্ধরারটেক এবং উত্তরার আশকোনায় নিহত সন্দেহভাজন প্রায় ৩০ জঙ্গির কারও মরদেহই নিতে চায়নি তাদের পরিবার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল একাধিকবার বলেছেন, জঙ্গিরা কতটা ঘৃণ্য সেটা তাদের স্বজনদের লাশ না নেয়ার ঘটনাতেই বোঝা যায়।

গত ১৬ মার্চ সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা ছায়ানীড় ভবনে পুলিশের অভিযানে নিহত হন মোট পাঁচ জন। এদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত নয়।

১৫ মার্চ বিকালেই আস্তানাটি ঘেরাও করে পুলিশ। পরদিন সকালে অভিযান শুরুর পর ভেতরে থাকা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয় চারজন। পুলিশের গুলিতে মারা যান আরও একজন।

এই বাড়িটিতে অভিযানের আগে ১৫ মার্চ পাশের সাধন কুঠিরে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে কোমরে থাকা বোমা ফাটানোর চেষ্টার সময় আটক হন আর্জিনা নামে এক নারী এবং তার স্বামী জসিম। এই দুইজনের মধ্যে জহিরুল হক জসিম ছায়ানীড় ভবন নিহত জোবাইদার ভাই।

এরই মধ্যে পরদিন জসিম ও আর্জিনাকে ১২ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বাহিনীটি জানিয়েছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় একসঙ্গে বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের।

জোবাইদার বাবা বলেন, ‘গত সাত-আট মাস ধরে জসিম আলাদা বাসায় থাকত। আমাদের সাথে তেমন যোগাযোগ করত না। তবে কামাল ও জসিমের মধ্যে যোগাযোগ ছিল।’

এর আগেও নানা সময় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মরদেহ নিতে রাজি হয়নি তাদের স্বজনরা। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে প্রাণ হারানো জঙ্গিদের মরদেহ নেয়নি পরিবার। পরে বেওয়ারিশ হিসেব তাদেরকে সমাহিত করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম।

ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/আইকে/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা