সার্জেন্টের ‘পিটুনিতে’ রক্তাক্ত সিএনজিচালক

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৭, ১৭:৪২ | আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭, ১৯:০৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ভুক্তভোগী সিএনজি চালক আলমগীর (বায়ে), ট্রাফিক সার্জেন্ট মনিরুল ইসলাম (ডানে)

ফিটনেসের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে মামলা দিতে যাচ্ছিলেন এক ট্রাফিক সার্জেন্ট। এ সময় মামলা না দেয়ার আকুতি জানাতে গিয়ে মার খেয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সিএনজিচালক। ট্রাফিক সার্জেন্ট তাকে মেরে রক্তাক্ত করেন বলে অভিযোগ তার। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট। তার দাবি, হাতের পজ মেশিনটি অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছেন সিএনজিচালক। রবিবার রাজধানীর কাঁটাবন মোড়ে ঘটে এই ঘটনা। ওই সিএনজিচালক জানান, কাগজপত্রে গাড়ির ফিটনেস তারিখ ঠিক না থাকার কারণে এ ব্যাপারে আইনি সহায়তা নেয়ার সাহসও পাচ্ছেন না তিনি।

ভুক্তভোগী সিএনজি চালক আলমগীর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি খালি গাড়ি নিয়া যাইতাসি, পরে আমারে বলে গাড়িটা কার? আমি বলি স্যার গাড়িটা একজন এসপির ভাইয়ের। ওনার গাড়ি আমি চালাই। এইডি বলার পরে কয় (ট্রাফিক সার্জেন্ট) তর বড় একটা মামলা হবে।’

ঘটনার বিবরণ দিয়ে আলমগীর বলেন, ‘আমি বলি স্যার আমার তো আগের মামলা ভাঙানোর কাগজ পাই না। কী মামলা জানতে চাই বলেন ফিটনেস মামলা। আমি বললাম আমার এইটার ভিতরে ফিটনেসের ডেট ফেল আছে, এর ভিতরে পনেরশ টাকার মামলা আছে। আমারই জরিমানা দিয়া ভাঙাইতে হবে, ভাঙাইতে পারি না স্যার।’

সিএনজি চালক বলেন, ‘সার্জেন্ট বলে তরে ঐডার ভিতরে নিয়া পাড়ামু। আমি বলি স্যার মামলা দিয়েন না। এইডা কওয়ার লগে লগে আমারে মেশিনডা দিয়া বাড়ি দিসে। পরে আমারে একশ টাকা সাদে। আমি কই আমার টাকা লাগব না, টাকা নেই নাই।’ 

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মনিরুল ইসলাম। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি তাকে বলেছিলাম আপনার এটার মেয়াদ উত্তীর্ণ, তাই মামলা হবে। তিনি (সিএনজি চালক) বলেন কেন মামলা করবেন? আমি ওনাকে তারিখ দেখাই। আমি মামলা করতে চাচ্ছি কিন্ত তিনি মামলা না করতে জোরাজুরি করতে থাকেন।’

চালকের রক্তাক্ত হওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, ‘মামলা দেয়ার সময় ওই চালক আমার হাত ধরে টানাটানি করছিলেন। হঠাৎ আমার হাতের মেশিনটি গিয়ে তার মুখে লাগে। সেখান থেকে রক্ত বের হতে দেখে আমি তাকে বলেছি ভাই আসেন আমি আপনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। পরে আমি তাকে চিকিৎসার জন্য টাকাও সেধেছি। অথচ চালক অভিযোগ করছেন নাকি তার গায়ে হাত তুলেছি।’

ফিটনেস বিহীন গাড়ির কারণে যেন আর কোনো দুর্ঘটনা না হয় সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে অভিযান শুরু করে। গাড়ির মেয়াদ না থাকলে সেগুলোকে সরাসরি ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। তবে অভিযোগ পাওয়া গেছে, ট্রাফিক পুলিশের হাতে মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনো গাড়ি ধরা পড়লে মামলা দিয়েই তারা ছেড়ে দিচ্ছেন।  

(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/এএকে/জেবি)