রাজনীতিবিদরা জঙ্গিবাদ উস্কে দিচ্ছেন: আইজিপি

পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেছেন, জঙ্গিবাদ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তব্য জঙ্গিবাদকে আরো উস্কে দিচ্ছে। যারা সমালোচনা করে তাদের মুখে একদিনও শুনিনি বাংলাদেশ জঙ্গি দমনে সফল।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের যারা পলিটিক্স করেন, যারা জঙ্গিবাদ ইস্যুকে বির্তক করেন, তাদের বক্তব্য জঙ্গিবাদের পক্ষে চলে যায়।

মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর পুলিশ লাইন্স মাঠে জেলা কমিউনিটি পুলিশিং আয়োজিত মহাসমাবেশে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় জেলা কমিউনিটি পুলিশিং উদ্যোগে বের করা ‘বন্ধন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বক্তব্যে রাজনীতিকদের প্রতি প্রশ্ন রেখে আইজিপি বলেন, আমি বুঝি না দেশ আগে না পলিটিক্স আগে? দেশকে বাঁচাতে হবে, দেশের স্বার্থ আগে। তার পর পলিটিক্স।

তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদের স্থান বাংলাদেশে হবে না- এব্যাপারে সকল রাজনীতিবিদদের একমত হওয়া উচিত। জঙ্গি দমনে আমরা শতভাগ স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে আসছি। কেউ যদি কোনো প্রশ্ন তোলেন, আমাকে প্রশ্ন করুন, আমি প্রতিটি ঘটনার বর্ণনা দেব। আগুন নিয়ে খেলবেন না। তাহলে এই আগুনে আপনাদের পুড়বে।’

পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমাদের দেশে একশ্রেণির লোক আছে যারা সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়ে বলে, সরকার জঙ্গিবাদ নিয়ে খেলছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। জঙ্গিদের ধরে মেরে ফেলছে। আমরা কোনো জঙ্গিকে মেরে ফেলতে চাই না। যতগুলো অপারেশন হয়েছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নেয়া হয়েছে। তাদের আত্মসমপর্ণের জন্য মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আত্মসমপর্ণ না করে পুলিশের ওপর গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছে। তার পর পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।’

বৃটেন আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে জঙ্গিদের দেখা মাত্রই গুলি করা হয় উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, উন্নত দেশেও জঙ্গিদের জীবিত গ্রেপ্তার করা হয় না। আমরা যখনই শুনি জঙ্গিরা একিত্রত হয়েছে কোনো নাশকতা করার জন্য তখনই আমরা বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান করেছি।

কমিউনিটি পুলিশং সর্ম্পকে আইজিপি বলেন, জনগণের সাথে পুলিশের যদি ভুল বোঝাবুঝি আস্থাহীনতা ও দূরত্ব থাকে তবে পুলিশ যত ভালো কাজই করুক না কেন স্বীকৃতি পাবে না। জনগণের পুলিশের কাছে কী ধরনের সেবা প্রত্যাশা করে সেটাও পুলিশ বুঝবে না। এজন্য পুলিশ-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন আইজিপি।

পুলিশ মহাপরিদর্শক আরও বলেন, পুলিশ মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নিয়ে কাজ করছে। জনগণকে কাছে না পেলে পুলিশের একার পক্ষে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। পুলিশের কোনো সদস্য যদি মাদকের সাথে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আইজিপি।

জেলা পুলিশ সুপার ও কমিউনিটি পুলিশিং প্রধান উপদেষ্টা মঈনুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ ৪টি আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান, একেএম শামীম ওসমান, গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক, নজরুল ইসলাম বাবু, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হোসনেরা বাবলী, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি ডা, শাহনেওয়াজ, মহানগর কমিটির সভাপতি সোলায়মান মিয়া প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২১মার্চ/এএইচএস/ইএস)