শহীদ স্মরণে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ মার্চ ২০১৭, ১৫:৫৫ | প্রকাশিত : ২৪ মার্চ ২০১৭, ১৫:২১

মুক্তিযুদ্ধের শহীদ প্রতিজনের স্মরণে একটি করে বৃক্ষরোপণ করবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এই হিসাবে সারাদেশে ৩০ লাখ গাছ লাগাবে তারা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরুর দিনটি এবার পালিত হবে গণহত্যা দিবস হিসেবে। এই দিনেই এই বৃক্ষরোপণ অভিযান চালাবে নির্মূল কমিটি।

গণহত্যা দিবসের আগের দিন শুক্রবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় নির্মূল কমিটি। কমিটি জানায়, শনিবার বেলা দুইটায় বঙ্গভবনে ‘গণহত্যা দিবস’ এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সেখানে বেলা আড়াইটার দিকে ‘শহীদ স্মৃতি বৃক্ষরোপণ’ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

সারাদেশেই এই বৃক্ষরোপণে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনকেও এই অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারি সংস্থাগুলোও এই কাজে সম্পৃক্ত হবে বলে জানিয়েছে নির্মূল কমিটি। প্রাথমিকভাবে তিন বছরে এই বৃক্ষরোপণ অভিযান শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এক বছরেই কাজ শেষ করার আশা করছে তারা।

নির্মূল কমিটি বলছে, প্রতিটি বৃক্ষই প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে একাত্তরে নির্মম গণহত্যার কথা পৌঁছে দেবে। এতে ইতিহাস যেমন চির জাগরুক থাকবে তেমনি গণহত্যাবিরোধী জনমতও গঠন হবে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে গণহত্যা শুরুর দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনে সংসদে প্রস্তাব পাস হয় গত ১২ মার্চ। ২৩ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠকে এবার থেকেই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

নির্মূল কমিটির সংবাদ সম্মেলনে ইতিহাসবিদ ও গবেষক মুনতাসির মামুন বলেন, ‘পৃথিবীতে যতগুলো গণহত্যা হয়েছে, সবচেয়ে জঘন্যতমটি হলো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হত্যাযজ্ঞ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও এতো জঘন্য হত্যাকাণ্ড হয়নি। আমাদের গণহত্যার এই ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, ৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করা জরুরি। এই গণহত্যা বিষয়ে পৃথিবীর ২১ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হলেও সেটা পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি আমাদের এক কোটি প্রবাসী দিবসটি পালন করলে বিশ্বজুড়ে এই ইতিহাস ছড়িয়ে পড়বে।’

আন্তর্জাতিকভাবে ৯ ডিসেম্বরকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন হয় জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে। বাংলাদেশ সরকার চায় দিবসটি ২৫ মার্চ পালিত হোক। এ বিষয়ে শিগগির জাতিসংঘে প্রস্তাব দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সরকার।

নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আমাদের গণহত্যা দিবসকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস করতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠানো হবে হাস্যকর হবে। কারণ ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। তাই আন্তর্জাতিকভাবে অরেকটি দিবসকে আলাদা করে গণহত্যা দিবস করার সুযোগ নেই। তবে আমরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কাজ করতে পারি। যেহেতু স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর বড় একটি সুযোগ এসেছে সেই বিষয়ে আমাদের আরও অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।’

অনুষ্ঠানে বিচারপতি শামসুল হুদা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর পর আমাদেরকে যেসব দেশ স্বীকৃতি দেয়নি তাদের কেউ এই গণহত্যাকে স্বীকার করে না। ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দিয়ে সেসব দেশেকে একটি শক্ত বার্তা সরকার পৌঁছে দিয়েছে।’

নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের উচিত হবে দিবসটিকে সারা দেশে অন্যান্য জাতীয় দিবসের মতো মর্যাদার সঙ্গে পালন করা। সরকার এখন প্রযুক্তিনির্ভর। সরকারিভাবে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের কাছে ‘গণহত্য দিবস’ পালনের নির্দেশ দিলেই দেশের মানুষ এই দিবসটি সম্পর্কে জানতে পারবে।’

ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/এসআর/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :