রনগিরিতে রঙিন গল্পের আশায় মাশরাফিরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ মার্চ ২০১৭, ১৮:৪১ | প্রকাশিত : ২৪ মার্চ ২০১৭, ১৭:২০

দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার ঠিক মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ডাম্বুলা। চারদিক থেকে ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড় এসে মিশেছে ছোট্র শহরটিতে। তারই মাঝে আপনরুপে সেজেছে রনগিরি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেখান থেকে শুরু হচ্ছে মাশরাফিদের ওয়ানডে মিশন। শনিবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৩.৩০টায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওডিআইতে মাঠে নামবে লাল-সবুজের বাংলাদেশ।

সমুদ্রতীরে শততম টেস্ট জয়ের আত্মবিশ্বাসকে জ্বালানি করে ওয়ানডে জয়ের স্বপ্ন দেখছে সাকিব-তামিমরা। যে মঞ্চে নেই কোনো সুখস্মৃতি। ২০১০ সালে এশিয়া কাপে তিন ম্যাচ খেলেও হাতে উঠেনি এক জয়। তবে এবারের চিত্রটা একটু ভিন্ন। তরুণ আর তারকাঠাসা দল নিয়ে রনগিরিতে রঙিন গল্প লেখার কথাই ভাবছেন মাশরাফিরা।

অধিনায়ক হিসেবে ম্যাশের জন্য এটি একেবারে নতুন মঞ্চ। এই মাঠে আগের তিন ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কাপ্তান মাশরাফির নতুন মঞ্চটা রঙাতে চান টাইগাররা। এনিয়ে ওপেনার সৌম্য সরকার বলেন, ‘চেষ্টা থাকবে ওয়ানডে ম্যাচেও টেস্টের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। টেস্টে বড় ইনিংস খেলা হয়নি। ওয়ানডেতে তেমন সুযোগ আসলে ইনিংস বড় করার চেষ্টা করব।’

লক্ষ্য সিরিজ জয়, সম্ভব হলে ৩-০ ব্যবধানে জিততে চায় টাইগাররা। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করলেন সৌম্য। ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে সিরিজ জেতা। আমরা স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারলে ফলাফল আমাদের পক্ষেই আসবে। আশা আছে, তিনটি ম্যাচই জিতে নিতে।’ পারবে বাংলাদেশ? ওয়ানডেতেও ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের হাসিটা ধরে রাখতে। একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশকে অন্তত ছোট প্রতিপক্ষ ভাবা দুষ্কর।

ইতোমধ্যে তারা ৩২১টি ওডিআই খেলে ফেলেছে। যদিও জয়-পরাজয়ের মধ্যে এখনো যোজন যোজন তপাৎ। জয় ৬২টি এবং পরাজয় ২৫৯ ম্যাচ। তারপরও গেল কয়েকটা বছর ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে আছে টিম বাংলাদেশ। বিশেষ করে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে ছুটছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব পান মাশরাফি। এরপর থেকে বাংলাদেশের জয়রথ ছুটছেই। মাশরাফির কাঁধে ভর করে টানা পাঁচটি সিরিজ জিতে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার পর পাকিস্তানকে ৩-০, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ দল।

এছাড়া ২০১৫ সালের বিশ্বকাপেও নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয় বাংলাদেশ। আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয় পায় মাশরাফি বাহিনী। আর সেই সুবাদে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয় বাংলাদেশের। বর্তমান র‌্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। র‌্যাঙ্কিংয়ে নয় থেকে সাত নম্বরে উঠে এসেছে সাকিবরা। শীর্ষ আটে থাকায় আগামী জুনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও খেলার সুযোগ পাচ্ছেন মোস্তাফিজ-তাসকিনরা। যদিও ওয়ানডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সাফল্যের পাল্লা বেশ হালকা। ৩৮ ম্যাচ থেকে মাত্র চারটি জয় ঝুলিতে পুরেছে বাংলাদেশ। বাকি ৩৩টি চলে গেছে লঙ্কানদের ঘরে। কিন্তু বাংলাদেশ যে এখন আর আগের ক্রিকেট খেলে না। আগের মতো ১০০/১৩০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার ভয়ও নেই।

ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ এখন সমীহ জাগানিয়া একটি দল। কেবল শ্রীলঙ্কা কেনো ভারত, অস্ট্রেলিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলও আজ বাংলাদেশকে নিয়ে হাজারটা পরিকল্পনা আঁটে। যে দলে রয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের মতো ড্যাশিং ওপেনার। আছে মোস্তাফিজুর রহমানের মতো আগুন ঝরানো পেসারের পাশাপাশি কাপ্তান মাশরাফি বিন মর্তুজা। তাদের নিয়ে প্রতিপক্ষের চিন্তা কতখানি হবে, সেটা পরিমাপ করা মুশকিল। এমন দলকে নিয়ে আশার ভেলা ভাসানোই যায়।

এদিকে অদ্যাবধি ৪৮টি ওয়ানডে আর ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাম্বুলায়। মাঠে গড়ানো এই ম্যাচগুলো চুল-ছেড়া বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ডাম্বুলার পিচ পেস সহায়ক। রীতিমত পেসারই এই উইকেটে দাপট দেখিয়েছেন। অবশ্য সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন লঙ্কান কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। এই মাঠে মুরালির উইকেট সংখ্যা ৪২টি। তাঁর ধারে কাছে নেই কেউ।

২৩টি উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা লঙ্কান পেসার পারভেজ মারুফ। এরপর সেরা চার উইকেট শিকারি পেসার যথাক্রমে লাসিথ মালিঙ্গা (২১), প্রবীন কুমার (১৮), আশীষ নেহেরা (১৮) ও অ্যাঞ্জেলো মেথুস (১৬)। আট, নয় দশম স্থানও পেসারদের দখলে। বলা যায় ডাম্বুলায় আলো ছড়াবেন পেসাররাই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে লাইমলাইটে থাকবেন পেসার-মোস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং তাসকিন আহমেদরা। যদিও এখনই বলা যাচ্ছে না পেস আক্রমণে ক’জন বোলারকে রাখা হবে।

বাংলাদেশ ওয়ানডে স্কোয়াড:

তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান রুম্মন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শুভাশীস রায়, সানজামুল ইসলাম, শুভাগত হোম চৌধুরী ও নুরুল হাসান সোহান।

(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/জেইউএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :