আট বছর পর ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রী: প্রত্যাশার লম্বা তালিকা

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর
| আপডেট : ২৫ মার্চ ২০১৭, ১৫:৫৫ | প্রকাশিত : ২৫ মার্চ ২০১৭, ১৫:২৭

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম বারের মতো ফরিদপুরে আসছেন আগামী ২৯ মার্চ। ওইদিন বিকেল ৩টায় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।

বহু প্রত্যাশীত এই সফরে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুরে ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১২টি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর ও স্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর প্রস্তুতি চলছে জোড়ে সোড়ে। জেলা শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে তোরণ নির্মাণ, ব্যানার টাঙানো ও পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। সড়ক বিভাজকসহ আশপাশের ভবন রং করা হয়েছে। সড়কের দুই পাশসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা।

বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার বহু প্রতীক্ষিত এই সফর নিয়ে ফরিদপুরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকায় জেলাবাসীর চাহিদার তালিকা অনেক দীর্ঘ। রাজনৈতিক বিবেচনায় বিগত সরকারগুলো বঙ্গবন্ধুর এলাকা হিসেবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করেছে বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলকে। ফলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের কাছে এই এলাকার মানুষের প্রত্যাশা অনেকটা।

ফরিদপুর অঞ্চলের মানুষ প্রত্যাশা করছে ফরিদপুর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু আর বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদে আলোচিত ফরিদপুর বিভাগ বাস্তাবায়ন প্রত্যাশার শীর্ষে রয়েছে।

ফরিদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা লোকমান হোসেন মৃধা প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বিষয়ে বলেন, ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জনসভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ফরিদপুরবাসী সব আসন উপহার দিলে ফরিদপুরবাসীর সব প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব তার নিজের। ফরিদপুর জেলাকে বিভাগ ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বপ্ন পূরণ করবেন বলেই আশা করছি।

অন্যদিকে, বিগত বছরগুলোতে ফরিদপুর সফরকালে এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি সব সমাবেশে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি করপোরেশন গঠনের কথা বলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। পৌর এলাকার সীমানা ১৭ দশমিক ৩৮ বর্গ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৬৬ দশমিক ৪৪ বর্গ কিলোমিটার করা হয়েছে।

ফরিদপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডট্রিজ এর পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান দাবি জানিয়ে বলেন, ফরিদপুরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার পদ্মা নদীতে আরো একটি সেতু নির্মাণের। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হিসেবে সে দাবি দিনে দিনে বাড়ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

চেম্বারের এই পরিচালক আরো বলেন, কয়েকটি পাটকল ছাড়া ফরিদপুরে বৃহৎ কোনো শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। কর্মসংস্থানের সুযোগও যে কারণে কম। এ অঞ্চলে একটি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। ফরিদপুরে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবনা পেশ করেছে ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমাদের প্রস্তাবে সায় পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

দক্ষিণাঞ্চলের সেরা বিদ্যাপীঠ হিসেবে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের খ্যাতি থাকলেও এখানে বিশ্ববিদ্যালয় নেই। ফলে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশা এ অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। শিক্ষাবিদ প্রফেসর আলতাফ হোসেন বলেন, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ফরিদপুরকে আরও সমৃদ্ধ করতে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল্প নেই। আশপাশের জেলাগুলো থেকে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা তখন ঢাকামুখী না হয়ে ফরিদপুরমুখী হবে। ফরিদপুরের শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা শোনার।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমন্বয় করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/প্রতিনিধি/কেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :