পুলিশ কর্মকর্তা কায়সারের পরিবারে শোকের ছায়া

সিলেট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ মার্চ ২০১৭, ১০:৫৫

সিলেটে জঙ্গিদের বোমা বিস্ফোরণে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা চৌধুরী মুহাম্মদ আবু কায়সারের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুর খবর মুহূর্তের মধ্যে সুনামগঞ্জ শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা নুতনপাড়ার বাসভবনে ভিড় করেন।

শনিবার রাত ১১ টায় কায়সারদের বাসভবনে গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আয়ুব বখত জগলুলসহ শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসে তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেটে জঙ্গি আস্তানার এক কিলোমিটারের মধ্যে পাঠানপাড়ায় এই বিস্ফোরণে নিহত হন আবু কায়সার। তিনি পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়কারী দলের সদস্য ছিলেন বলে।

তার বাড়ি ছাতক উপজেলার ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নের ছৈলা গ্রামে হলেও তাদের পরিবার সুনামগঞ্জ শহরের স্থায়ী বাসিন্দা।

কায়সারের বাবা আছদ্দর আলী চৌধুরী ছিলেন সুনামগঞ্জ জজ কোর্টের মোখতার। মা হাসনা চৌধুরী। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে কায়সার ছিলেন তৃতীয়। তারা সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ২০৪ নং হোল্ডিংয়ের নিলয় -২ নুতনপাড়া আবাসিক এলাকার বাসিন্দা।

আবু কায়সার ১৯৮৯ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। গত ১০ বছর ধরে তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন সিটিএসবি ও সিআইও ওয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন ।

কায়সারের চাচাতো ভাই চৌধুরী আহমদ মুজতবা রাজী জানান, ‘কায়সারের পরিবারের সবাই উচ্চশিক্ষিত ও চাকরীজীবী। কেউ আবার প্রবাসী। কায়সার সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। ছাত্র জীবনে তিনি ভালো ক্রিকেটার ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নিঃসন্তান । স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সিলেট শহরে থাকতেন।’

মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত হবে কায়সার

আমাদের সুনাগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আবু কায়সারকে তার

মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হবে। রবিবার বাদ মাগরিব সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া এলাকার গাজীরদরগা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীপুর মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে সিলেট পুলিশ লাইনে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার মরদেহ সুনামগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, সুনামগঞ্জ শহরের ওয়েজখালীস্থ পুলিশ লাইনে দীপুকে শেষ শ্রদ্ধা ও রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হবে।

এদিকে দীপুর ছোট ভাই চৌধুরী আবু সাহেদ বাবলু জানান, দীপুর মরদেহ তার স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের শেষবারের মতো দেখার জন্য নুতন পাড়ায় বাসভবনে কিছু সময় রাখা হবে। পরে শহরের কোর্ট মসজিদ এলাকায় বাদ মাগরিব দ্বিতীয় জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।

তিনি আরও জানান, সিলেট পুলিশ লাইনে রবিবার বেলা সোয়া ১টায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে লাশবাহী গাড়িতে তার মরদেহ সুনামগঞ্জে নিয়ে আসা হবে।

শনিবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোর নেতৃত্বে 'আতিয়া মহলে' অভিযান 'অপারেশন টোয়াইলাইট' শুরু হয়। দুপুর থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ এবং একাধিক শক্তিশালী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সন্ধ্যায় অভিযানের বিষয়ে সেনাবাহিনী প্রেস ব্রিফিং করে। ব্রিফিংয়ের পর পরই পাঠানপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে পুলিশের একটি চৌকি ছিল।

এরপর কর্ডন করে রাখা এলাকা 'ক্রাইম সিন' করতে গেলে রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বস্তা সদৃশ্য একটি বস্তু পরীক্ষা করার সময় দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণে নিহত হন সিলেটে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক চৌধুরী আবু মো. কায়সর, মদনমোহন কলেজের হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওয়াহিদুল ইসলাম অপু, সিলেটের দাড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম, আব্দুল কাদের, জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের উপপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফাহিম নিহত হয়েছেন। নিহত অন্যজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

(ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :