বাসে নারী আসন ‘সংরক্ষিত’ কিন্তু অনিরাপদ কেন?

বিল‌কিছ ইরানী
 | প্রকাশিত : ২৮ মার্চ ২০১৭, ১০:১৬

গণপরিবহনে নারী, শিশু ও প্র‌তিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখার আইন‌টি করা হ‌য়ে‌ছিল বেশ ক‌য়েক বছর আ‌গেই। কিন্তু সেই আসন নি‌য়ে যেন পুরুষ জা‌তির নানামু‌খি বিতর্কিত মন্ত‌ব্যের শেষ নেই। যেমন: য‌দি বা‌সের কোথাও লেখাযুক্ত স্টিকার না থা‌কে তাহ‌লে সেখা‌নে তো ম‌হিলা বসার প্রশ্নই উ‌ঠে না।

আর লেখা থাক‌লেও চোখ ঘু‌রি‌য়ে ঘু‌রি‌য়ে নারী সহযাত্রী‌দের দে‌খেও ঘাপ‌টি মে‌রে ব‌সে থাকেন। যেন তি‌নি কিছুই জা‌নেন না। ভাবখানা এমন, এই সংরক্ষিত সিটখানায় উনি রাজত্ব পে‌য়ে গে‌ছেন। ঘ‌রে ঠিক যেভা‌বে একজন নারীর ওপর রাজত্ব চালা‌নো যায় ঠিক সেভা‌বে। যেন এই সিট কোনোভা‌বেই ছাড়া যা‌বে না, ছে‌ড়ে দি‌লে তার মান সম্মান যাবে!

১৫ দিন আ‌গে, প্রেসক্লাব থে‌কে বিআর‌টি‌সি বা‌সে উঠলাম বনানীর উ‌দ্দে‌শ্যে। ১৩টি সংর‌ক্ষিত মহিলা সিট লেখা। যার এক‌টি‌তে একজন ৩৫ বছ‌রের ভদ্রলোক ব‌সে ছিলেন। আ‌মি উঠার পর তা‌কে সুন্দর ক‌রে সিটটি ম‌হিলা সিট ব‌লে জানালাম। কিন্তু তিনি কর্ণপাত কর‌লেন না।

একটু পর আরও মহিলা উঠ‌লেন। আবার বিনয়ের সা‌থে বললাম, ভাই, এ‌টি মহিলা সিট, একটু ছে‌ড়ে দেন। এবার তিনি আমার দি‌কে একটু তাকা‌লেন, আবার বললাম, ভাই ম‌হিলা সিট। তিনি বল‌লেন, সাম‌নে নাম‌বো। সাম‌নে বলা‌তে ভাবলাম হয়‌তো শাহবাগ নাম‌বে। কিন্তু শাহবাগ এলে তিনি নাম‌লেন না। বললাম কোথায় নাম‌বেন, কোনো জবাব নাই। এবার অন্য একজন নারী যাত্রী বল‌লেন, কোথায় নামবেন, তিনি বল‌লেন, মহাখা‌লী!

তখন বললাম, ভাই মহাখা‌লী‌তো অ‌নেক দূর, এক ঘণ্টা লাগ‌বে, আপ‌নি একটু সিটটা ছে‌ড়ে দেন মহিলা দাঁ‌ড়ি‌য়ে আ‌ছে। তখন তিনি তে‌লে বেগু‌নে জ্ব‌লে উঠ‌লেন। বল‌লেন, এতগুলা ম‌হিলা উঠ‌সে, আ‌মি কয়টা‌রে দিব?

তখন অন্য পুরুষ যাত্রীরা তা‌কে বল‌লেন, আরে ভাই একজন‌রেই দেন না? এত ঝামেলা কর‌ছেন কেন? উনারা তা‌কে উঠ‌তে বল‌লেন, উ‌নি উঠ‌লেন না। কিন্তু তার বামপা‌শে সংরক্ষিত আসন ছে‌ড়ে বসা অন্য এক ভদ্রলোক তার নি‌জের সিট ছে‌ড়ে দিয়ে একজন নারী‌কে বস‌তে দি‌লেন! আ‌মি তখন তা‌কে বললাম, আপনার ম‌ধ্যে আর ওই লোকটার ম‌ধ্যে পার্থক্য দে‌খেন, আপ‌নি দখল ক‌রে ব‌সে আ‌ছেন মহিলা সিট, আর উ‌নি ম‌হিলা সি‌টে না ব‌সেও নি‌জের সিটটা ছে‌ড়ে দি‌লেন। কিন্তু উ‌নি তর্ক করেই যাচ্ছেন, বা‌সের অন্য পুরুষ যাত্রীর কথাও শুন‌ছেন না, বল‌ছেন তাহ‌লে পুরুষ সিটে নারী কেন বস‌ছে? অথচ উনার চো‌খের সাম‌নেই আ‌রেকজন ভদ্র লোক নি‌জের সিট ছে‌ড়ে অন্য একজন নারী‌কে বস‌তে দি‌লেন, সেটাও তি‌নি দে‌খে‌ছেন!

আস‌লে তর্ক করার জন্যই তি‌নি তর্ক ক‌রে‌ছেন, এরকম অ‌নেক আছেন, যারা তর্ক করেই জিত‌তে চান। বা‌সের অন্য যাত্রীরা জানালেন, ‌তি‌নি ম‌তি‌ঝিল থে‌কে ওই মহিলা সিট‌টি‌তেই ব‌সে আ‌স‌ছেন, এর মা‌ঝে একজন বয়স্ক নারীও উ‌ঠে‌ছি‌লেন, তি‌নি তা‌কেও বস‌তে দেননি। অব‌শে‌ষে সবার চা‌পে তি‌নি উঠ‌লেন, কিন্তু এতগু‌লো মানু‌ষ এতগু‌লো কথা তি‌নি কেনইবা শুন‌লেন? এ কাজ‌টি‌তো তি‌নি আগেও কর‌তে পারতেন। তাহ‌লে‌তো এত কথা শুন‌তে হ‌তো না তার। তি‌নি কি ভে‌বেছি‌লেন যে ওই সিট‌টি ছে‌ড়ে দি‌লে তার রাজত্ব হা‌রি‌য়ে ফেল‌বেন?

বা‌সে নারী‌দের সংর‌ক্ষিত সিট নি‌য়ে এমন তর্ক হরহা‌মেশাই ঘ‌টে। অ‌নে‌কে আবার বলেন, ম‌হিলা সিট বরাদ্দ, পুরুষ সিট বরাদ্দ নাই কেন? ‌কিংবা ব‌লেন, পুরুষ সি‌টে মহিলা ব‌সে থা‌কে কেন? এটা মূর্খের ম‌তো কথা হ‌য়ে গেল না? সংর‌ক্ষিত সিট বা‌দে বাসের সব সিট কি পুরুষ‌দের জন্য? ওই সি‌টে বস‌তে চাই‌লে ম‌হিলারা কি বস‌তে পার‌বে না?

তাছাড়া সংর‌ক্ষিত সিট তো শুধু নারী‌দের জন্য নয়, শিশু প্র‌তিবন্ধীরাও আ‌ছেন। নারী বাদ দিলাম, শিশু ও প্র‌তিবন্ধী! তারা কী দোষ ক‌রে‌ছে? তা‌দের জন্য কতজন সিট ছে‌ড়ে‌ছেন আজ পর্যন্ত? অ‌ধিকাংশ প্র‌তিবন্ধী, বি‌শেষ ক‌রে মান‌সিক প্রতিব‌ন্ধীদের এমনভা‌বে হেয় করা হয় যেন তার পা‌শে বসাতেও অ‌নে‌কের ঘৃণা লা‌গে। অ‌নে‌কে তো বা‌স থে‌কে পার‌লে না‌মি‌য়েই দেন!

সংর‌ক্ষিত আসন মাত্র ছয় থে‌কে নয়টি। অ‌নেক বা‌সে ১৩টি আসন। ‌কিন্তু মোট আসন সংখ্যা ৩১টি থে‌কে ৫২টি। বা‌কি ২৫ থে‌কে ৪০টি আস‌নে তো আপনারা সুস্থ সবল পুরুষরাই ব‌সেন। তা‌তেও আপ‌ত্তি?

জগ‌তে নারী শিশু ও প্র‌তিব‌ন্ধী, এই তিন শ্রে‌নির মানু‌ষের জন্য নিরাপত্তা প্র‌য়োজন। এটা আপ‌নিও ভা‌লো ক‌রে জা‌নেন। কেন প্র‌য়োজন তাও জা‌নেন, তারপরও এত তর্ক কেন? কেন এই হীনম্মন্যতা?

তাছাড়া বাংলা‌দে‌শে সব পুরু‌ষের মান‌সিকতা এমন হ‌য়ে যায়নি যে বা‌সে উ‌ঠে একজন নারী নিরাপ‌দে দাঁড়া‌তে পা‌রেন। চারপা‌শের নোংরা হাতগু‌লো তো আর ব‌সে থা‌কে না। (সব পুরুষ এমন নয়)। এ কার‌ণে নারী যাত্রী‌র জন্য বরাদ্দ করা হ‌য়ে‌ছে সিট। কিন্তু অ‌নে‌কে এই সংর‌ক্ষিত বা বরাদ্দ বিষয়‌টিই বু‌ঝেন না। যার ইং‌রে‌জি শব্দ রিজার্ভ। রিজার্ভ সিট ছাড়া য‌দি আসন খা‌লি পায় তো বস‌বে। অথচ জোর করে দখল করতে চান সংরক্ষিত আসন। যার ফলে এখন আইন অমান্যে জেল জরিমানার বিধানও রাখা হচ্ছে।

এবার আ‌সি নারী‌দের স্ব‌স্তিদায়ক আসন প্রস‌ঙ্গে। বাংলা‌দেশ রোড ট্রান্স‌পোর্ট অ‌থরি‌টি-‌বিআরটিএ'র হি‌সাব ম‌তে ঢাকায় গত ফেব্রুয়া‌রি ২০১৭ পর্যন্ত ১০ হাজার ২৩৯টি মি‌নিবা‌সের লাই‌সেন্স দেয়া হ‌য়ে‌ছে। ‌যেগু‌লোর সর্ব‌নিম্ন আসন সাধারণত ৩১টি হ‌য়ে থা‌কে। আর বাসের লাই‌সেন্স দেয়া হ‌য়ে‌ছে ২৮ হাজার ২৬৪ টি। ‌যেগুলোর আসন স‌র্বোচ্চ ৫২টি হ‌য়ে থা‌কে। দুই এক‌টি এ‌দিক সে‌দিক হ‌লেও বাস্ত‌বে কিন্তু ‌ভিন্ন চিত্র চো‌খে প‌ড়ে।

কী করে যেন প্রত্যেক‌টি বাসে বাড়তি কিছু আসন তৈরি হয়ে যায়? মি‌নি বাসগুলোতে যে ছয়টি আসন রাখা হ‌য় নারী‌দের জন্য, সেগুলো বাস চাল‌কের বাম পা‌শে গরম ইঞ্জিনের উপর, বাসের দরজা সংলগ্ন জানালায় লাগোয়া। যে অংশটুকু খানিকটা উঁচু। ওই উঁচু জায়গায় তার বাম পা‌শে এক সা‌রির আসন, পেছ‌নে এক‌সারি, কোন কোন বা‌সে তিন ‌কি চার সা‌রির আসনও হয়ে থা‌কে। যেগু‌লো, দুর্বল লোহার পাত বা রড দি‌য়ে বা‌নি‌য়ে উপ‌রে এক‌টি কাপ‌ড় জ‌ড়ি‌য়ে কিংবা অন্য বাসে

ফে‌লে দেয়া ভাঙাচোড়া ও ছিঁ‌ড়ে যাওয়া আসন জোড়া তা‌লি দি‌য়ে ব‌সি‌য়ে দেয়া হয়। এসব আসন আরামদায়ক তো নয় ব‌টেই বিব্রবতকরও। অ‌নেক সময় এসব আস‌নে ব‌সে হাত পা কে‌টে যাওয়ারও উপক্রম হয়। কখ‌নো বা পোশাকও ছিঁ‌ড়ে যায়! ওসব সা‌রি‌তে তিনজন বসার কথা থাক‌লেও চে‌পে চে‌পে বসা‌নো হয় চার থে‌কে পাঁচজন।

ফ‌লে একজ‌ন আ‌রেকজ‌নের সা‌থে এতটাই লে‌গে ব‌সেন যে নড়াচড়ার কোনো উপায় থা‌কে না। এ‌কে‌তো গরম ই‌ঞ্জি‌নের উপর, তার উপর চাপাচা‌পি। যেন এক অস্বস্তিকর প‌রি‌স্থি‌তি।

অথচ চাল‌কের আশপা‌শের এই অংশগু‌লো‌তে কোনো আসন থাকার নিয়মই নেই! বিআর‌টিএ থে‌কে এমনটাই জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। তবে কার ছত্রছায়ায় এমন আস‌নের পাতা হয়?

গতবছরের এক‌টি ঘটনা ব‌লি: অ‌ফিস শে‌ষে সন্ধ্যায় বনানী থে‌কে মগবাজার ওয়ারলেস বলাকা বা‌সে ক‌রে আসার সময় আ‌মি ব‌সে‌ছিলাম বা‌সে রাখা ক‌থিত সংরক্ষিত চাল‌কের বাম পা‌শে টু‌লের ম‌তো এক‌টি লম্বা সা‌রির আস‌নে। যে‌টি ই‌ঞ্জি‌নের উপ‌রে বসা‌নো। ওই অংশটা এতই উত্তাপ ছড়া‌চ্ছিল ‌যে গর‌মে অস্বস্তি লাগ‌ছিল। ঘাম ঝরছিল অ‌নেক।

আমার পা‌শে একজন ৩০ বছ‌রের নারী ও একজন ১৫ বছ‌রের মে‌য়ে কা‌লো বোরকা প‌ড়ে ব‌সে আ‌ছেন। ৩০ বছ‌রের নারী‌টি ওই মেয়ের ভা‌বি। সা‌থে বড় ভাইও ছিলেন। উ‌ঠে‌ছেন উত্তরা থে‌কে, যা‌বেন যাত্রাবা‌ড়ি, বাস‌টি মহাখালী আসার পর পাশের মে‌য়ে‌টি গর‌মে তার বোরকা নাড়াচাড়া কর‌ছিল, হঠাৎ সে জ্ঞান ‌হা‌রি‌য়ে ফেল‌লো! সা‌থে সা‌থে তার বড় ভাই ও ভা‌বি, বোরকা খু‌লে মাথায় মু‌খে পা‌নি দি‌য়ে দিলেও জ্ঞান ফির‌লো না।

আমার ব্যা‌গে সবসময় এক‌টি ব্যাটা‌রিচা‌লিত ছোট ফ্যান রা‌খি। সেটা বের ক‌রে তাকে অনেকক্ষণ বাতাস দিলাম, ১০ মি‌নিট পর তার জ্ঞান ফির‌লো। ‌মে‌য়ে‌টির শ্বাসকষ্ট ছিল, প্রচণ্ড গর‌মে তার শ্বাসকষ্ট বে‌ড়ে যাওয়ায় এই পরি‌স্থি‌তি তৈ‌রি হ‌য়ে‌ছে।

ডাক্তা‌রের ম‌তে, প্রচণ্ড গর‌মে অ‌নেকের শ্বাসকষ্ট হয়। কা‌রো কা‌রো আবার হিট স্ট্রোকেরও উপক্রম হয়। এছাড়া শরীরে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হলো ঘাম। অ‌তি‌রিক্ত ঘা‌মের ফ‌লে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। আর ঘামাচি, চুলকানি, ব্রণ, ছত্রাক ও ধুলাবালি আটকে থাকাসহ দেখা দি‌তে পা‌রে নানা শারীরিক সমস্যা।

বাংলাদে‌শের সংস্কৃ‌তি অনুযায়ী ‌নারী‌দের এম‌নি‌তেই পোশাক বে‌শি পর‌তে হয়, তার উপর বা‌সের ই‌ঞ্জি‌নের গর‌মে না‌ভিশ্বাস উঠার ম‌তো অবস্থা। অথচ এই অস্ব‌স্তিকর ও ঝুঁ‌কিপূর্ণ আসনগু‌লোই রাখা হয়ে‌ছে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য! যেখা‌নে তাদের প্র‌য়োজন স্ব‌স্তিদায়ক ও নিরাপদ আসন!

অন্য‌দি‌কে, যখন যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়, এই উঁচু জায়গা থে‌কে উঠ‌তে কিংবা নাম‌তে বা‌সের ছা‌দে, ঝুলন্ত ফ্যান কিংবা জানালার উপ‌রে ঘে‌ষে থাকা কা‌র্নি‌শে ‌লে‌গে মাথায় আঘাত পান‌নি এমন মানুষ কমই আ‌ছেন। এছাড়া বাস ব্রেক কর‌লে, বা‌সের সাম‌নের গ্লা‌সেও ধাক্কা খে‌য়েও মাথায় আঘাত পে‌তে হয়।

হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘট‌লে সাম‌নের গ্লাস‌টি ভে‌ঙে গেল, প্রথ‌মেই আহত হ‌তে হয়, ওই সা‌রির সাম‌নের আস‌নে বসা নারী, শিশু কিংবা প্র‌তিব‌ন্ধী ব্যক্তি‌কে। অথচ সুস্থ সবল পুরুষ সহযাত্রী‌টি যা‌চ্ছেন, ই‌ঞ্জিন থে‌কে ‌বেশ দূ‌রে আরামদায়ক হেলান দেয়া চেয়া‌রে ব‌সে!

‌যেখা‌নে ‌দে‌শে-‌বি‌দে‌শে নারী, শিশু ও প্র‌তিব‌ন্ধী‌দের জন্য নিরাপদ আবাস গড়া ও স্বাস্থ্য রক্ষার কথা বলা হ‌চ্ছে, সেখা‌নে বা‌সের ওই উঁচু গরম ই‌ঞ্জি‌নের উপর নারী, শিশু ও প্র‌তিব‌ন্ধী‌দের জন্য আসন রাখা কতটা নিরাপদ? এমন অনিরাপদ ও অস্বস্তিকর আসন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রাখার অর্থ কী? ‌ভেবে দেখা কি প্র‌য়োজন নেই?

নারীদের জন্য রাখা সংরক্ষিত আসন সংর‌ক্ষিত রাখার জন্য সোমবার মন্ত্রিসভায় এক‌টি খসড়া আই‌নের অনু‌মোদন দেয়া হ‌য়েছে। যেখা‌নে বলা হ‌য়ে‌ছে ম‌হিলা সি‌টে পুরুষ বস‌লে এক মা‌সের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জ‌রিমানা অথবা উভয় দ‌ণ্ডে দ‌ণ্ডিত হ‌বে। ভুক্ত‌ভো‌গি নারী‌দের ‌নিরাপত্তা ও কিছুটা স্ব‌স্তি দি‌তে সরকা‌রের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দা‌বিদার।

‌আমরা এখ‌নো সভ্য জায়গায় পৌঁছ‌তে পা‌রি‌নি, এখ‌নো সেরকম প‌রি‌স্থি‌তি তৈ‌রি হয়নি যেখা‌নে একজন নারী স্বাধীনভা‌বে গণপ‌রিবহ‌নে উঠে নি‌জে‌কে নিরাপদ বোধ কর‌বে, রাস্তায় একজন নারী‌কে দাঁ‌ড়ি‌য়ে থাক‌তে দে‌খে গণপ‌রিবহন থা‌মি‌য়ে পুরুষ সহযাত্রীরা বল‌বেন, আ‌গে ম‌হিলা উঠান।

পুরুষ আমার ভাই, পুরুষ আমার বাবা, বিশ্বাস ক‌রি, তা‌দের মান‌সিকতার দ্রুত পরিবর্তন ঘট‌বে, নারীরা গণপ‌রিবহ‌নে পুরুষ‌দের সা‌থে উ‌ঠে নি‌জে‌কে নিরাপদ বোধ কর‌বে, তখন এ ধর‌নের আই‌নের কোনো প্র‌য়োজন হ‌বে না।

আইন‌টি দ্রুত পাস ও বাস্তবায়‌নসহ নারী‌, শিশু ও প্র‌তিবন্ধী ব্যক্তি‌দের জন্য স্বাচ্ছন্দপূর্ণ ও নিরাপদ আসন নিশ্চিত করা হোক। এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

‌লেখক: সাংবা‌দিক, ‌রে‌ডিও টু‌ডে

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :